এটিএম আজহারের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহালে উচ্ছ্বসিত এলাকার মানুষ

  31-10-2019 12:07PM


পিএনএস ডেস্ক: একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল থাকায় তার বাড়ি রংপুরের বদরগঞ্জের মানুষ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। অনেকেই দ্রুত সময়ের মধ্যে ফাঁসি কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে আপিল বিভাগের রায় ঘোষণায় আজহারের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে।

সকালে রংপুরসহ আশপাশে গণমাধ্যমে তার মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকার খবর প্রচার হওয়ার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে আনন্দ-উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। এ ঘটনায় উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এটিএম আজহারের গ্রামের বাড়ি রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার লোহানীপাড়া ইউনিয়নের বাতাসন গ্রামে। বদরগঞ্জ পৌরশহরের বালুয়াভাটা এলাকায় তার আরেকটি বাসা রয়েছে। তবে সেখানে বর্তমানে পরিবারের কেউ থাকেন না।

উল্লেখ একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় রংপুরের বদরগঞ্জের রামনাথপুর ইউনিয়নের ঝাড়য়ারবিল ও ধাপপাড়ায় তৎকালীন ছাত্র সংঘের নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম আলবদর রাজাকার এবং পাক হানাদার বাহিনীর সহযোগিতায় গণহত্যা চালায়। যেখানে প্রায় এক হাজার দুইশ’র নারী পুরুষকে নির্মম নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করে। তার নির্দেশে রংপুর শহরের টাউন হলে অসংখ্য নিরীহ নিরস্ত্র মানুষকে ধরে নিয়ে হত্যা করা হয়। এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে রংপুর নগরীর দমদমা এলাকায় ঘাঘট নদীর তীরে বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে ও ব্রাশ ফায়ার করে রংপুর কারমাইকেল কলেজের ছয় শিক্ষক ও এক শিক্ষক পত্নীকে নির্মমভাবে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া যায়।

বদরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক চৌধুরী টুটুল বলেন, এটিএম আজহারুল ইসলামে ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষজন উচ্ছ্বসিত। একাত্তরে নিহতের পরিবারে স্বস্তি ফিরে এসেছে। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ফাঁসি কার্যকর দেখতে চাই।

বদরগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডের সাবেক ডেপুটি কমাণ্ডার মাহবুবার রহমান হাবলু বলেন, ‘কুখ্যাত খুনি রাজাকার আলদর আজহারের দণ্ড বহাল রাখায় আইন বিভাগের ওপর আমরা খুশি। আজহারের নির্মম নির্যাতনে যারা নিহত হয়েছে তাদের পরিবারের মানুষজন আজ আনন্দিত।

ধাপপাড়া বধ্যভুমি সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. লুৎফুল হক সরকার বলেন, ‘এ রায় কার্যকরের মাধ্যমে প্রমাণ হলো রাজাকারদের স্থান এ বাংলার মাটিতে হবেনা।’

উল্লেখ গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আজহারকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এরপর ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আপিল দাখিল করেন এ টি এম আজহারুল ইসলাম। নিজেকে নির্দোষ দাবি করে অভিযোগ থেকে খালাস চেয়ে এ আপিল করা হয়। ৯০ পৃষ্ঠার মূল আপিল আবেদনের সঙ্গে ১১৩টি গ্রাউন্ডসহ মোট দুই হাজার ৩৪০ পৃষ্ঠার আপিল আবেদন দাখিল করা হয়। সে সময় ট্রাইব্যুনালের রায়ে বলা হয়, পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন