খালেদা জিয়ার জামিন আবদনের ওপর শুনানি শুরু

  12-12-2019 10:45AM

পিএনএস ডেস্ক: জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে করা আপিল আবেদনের ওপর শুনানি শুরু করেছেন আপিল বিভাগ।

বৃহস্পতিবার ১০টা ৮ মিনিটে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগে এ শুনানি শুরু হয়।

আদালতে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, নিতাই রায় চৌধুরী, এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, একেএম এহসানুর রহমান প্রমুখ।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

এদিকে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি ঘিরে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আদালতের প্রতিটি ফটকে নিরাপত্তায় পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। মূল ফটকগুলো দিয়ে ঢোকার সময় আগত ব্যক্তিদের পরিচয়পত্রও দেখাতে হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগে খালেদা জিয়ার ওই জামিন আবেদনের শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। আদালতের কার্যতালিকায় আবেদনটি শুনানির জন্য ১২ নম্বর ক্রমিকে রয়েছে।

এই শুনানিকে ঘিরে বুধবার সকাল থেকেই সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। এর মধ্যে গতকাল পৌনে ৫টার দিকে সুপ্রিম কোর্ট এলাকার বাইরে তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

জাতীয় ঈদগাহ, হাইকোর্ট মাজার গেট ও বার কাউন্সিল ভবনের সামনে এই ঘটনা ঘটেছে। মূল সড়কের পাশেই এসব ঘটনা ঘটেছে। রাস্তায় তখন প্রচুর যানবাহন ও মানুষের ভিড় ছিল। এর মধ্যে কীভাবে এসব ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, ঘটনাটিকে নাশকতা বলেই মনে করছেন তারা। জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে।

এর আগে ৫ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানতে মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদন চেয়েছিলেন আপিল বিভাগ। রাষ্ট্রপক্ষকে ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে ওই প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেন আদালত।

এদিকে বুধবার বিকাল সোয়া ৪টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষ খালেদা জিয়ার মেডিকেল রিপোর্টটি সিলগালা অবস্থায় সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে পৌঁছে দিয়েছে। বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জামিন শুনানিতে এ রিপোর্ট উপস্থাপন করা হবে।

জানা যায়, ছয় সদস্যের চিকিৎসকের মেডিকেল বোর্ড রিপোর্টে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থার কথা জানিয়েছে। তবে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার রিপোর্ট আসা নিয়ে মুখ খুলছে না সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন।

মেডিকেল রিপোর্টের বিষয়ে সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আলী আকবরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কোনো কথা বলব না। আপনারা সুপ্রিমকোর্টের মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। যা বলার তিনিই বলবেন।’

পরে সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমানের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মিটিংয়ে আছি। এ বিষয়ে কিছু জানি না।

খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করতে আইনজীবী প্যানেলে রয়েছেন- অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, খন্দকার মাহবুব হোসেন, মওদুদ আহমদ, এজে মোহাম্মদ আলী, মাহবুব উদ্দিন খোকন, বদরুদ্দোজা বাদল, কায়সার কামাল, ফারুক হোসেন ও একেএম এহসানুর রহমান। দুদকের পক্ষে রয়েছেন খুরশীদ আলম খান। আর রাষ্ট্রপক্ষে আছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াসহ চার আসামির সবাইকে ৭ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে গত বছর ২৯ অক্টোবর রায় দেন বিচারিক আদালত। ১৮ নভেম্বর খালেদা জিয়ার দণ্ড বাতিল ও খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন তার আইনজীবীরা।

৬৩৮ পৃষ্ঠার মূল রায়সহ প্রায় ৭০০ পৃষ্ঠার এ আপিলের সঙ্গে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনও করা হয়। ৩০ এপ্রিল ওই আপিল আবেদন শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। সেদিন বিচারিক আদালতের রায়ে দেয়া অর্থদণ্ড স্থগিত এবং সম্পত্তি জব্দের আদেশে স্থিতাবস্থা দেন।

পাশাপাশি খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনটি নথিভুক্ত করে মামলার নথি তলব করেন হাইকোর্ট। এ মামলায় হাইকোর্ট ৩১ জুলাই খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনটি খারিজ করে দিলে ১৪ নভেম্বর আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবী কায়সার কামাল।


পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন