গাইবান্ধার সেই আতিক বাবুর বিরুদ্ধে এবার প্রতারণা মামলা

  25-04-2020 10:58PM

পিএনএস ডেস্ক: বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাভিশনের গাইবান্ধা প্রতিনিধি আতিক বাবুর বিরুদ্ধে এবার অর্থ আত্বসাৎ ও প্রতারণার অভিযোগে সদর থানায় আরো একটি মামলা হয়েছে।

শনিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে মামলাটি করেন সদর উপজেলার বাদিয়াখালী ইউপির রিফাইতপুর গ্রামের অন্ধ হাফেজ মৌলভী মো. গোলজার রহমান। মামলা নম্বর ৬১। এর আগে গত ২২ এপ্রিল আতিক বাবুর বিরুদ্ধে একই থানায় একটি চুরির মামলা হয়। মামলা নম্বর ৫৫।

মামলার বাদী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাংবাদিক আতিক বাবুর ছেলেকে জ্বিনে আছড় করলে অসুস্থ্য হয়। পরে অন্ধ হাফেজ গোলজার রহমানের কাছে নিয়ে আসে। তিনি পানি পড়া দিলে ছেলেটা সুস্থ্য হয়। তখন থেকে আতিক বাবু গোলজার রহমানকে নানা বলে ডাকতে শুরু করে এবং ঘনঘন যাতায়াত করতে থাকে।

এক পর্যায়ে ২০১৬ সালে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের সার্কুলার দিলে গোলজার রহমানের ভাতিজা নিজাম উদ্দিনের ছেলে জনি মিয়া আবেদন করেন।

এর কয়েকদিন পর আতিক বাবু নানার বাড়িতে বেড়াতে আসেন এবং জনিকে ডিসি অফিসে চাকরি নিয়ে দেবার কথা বলে ওই বছরের ৩০ ডিসেম্বর চার লাখ উনিশ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন।

পরে জনি মিয়া লিখিত পরীক্ষা দিলেও চাকরি পাননি। এরপর আতিক বাবুর কাছে তারা টাকা ফেরত চাইলে পরের বছরের নিয়োগে চাকরি হবে বলে তাদের আশ্বাস দেওয়া হয়। পরের দুই বছরের নিয়োগেও চাকরি না হলে টাকা ফেরত চায় ভুক্তভোগি পরিবারটি। তখন আতিক বাবু সোনালী ব্যাংক গাইবান্ধা শাখার হিসাব নম্বর ২০৯৪৭-৮৮ এর অনুকুলে ৭৩৬২৬৫০ নম্বর চেক দেয়। এতে চার লাখ উনিশ হাজার টাকা লেখা থাকে।

পরে চেক নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে যোগাযোগ করে জানা যায়, ওই একাউন্টে কোনো টাকা নাই। এরপর আতিক বাবুর কাছে টাকা চাইতে গেলে নানা ধরনের ভয় ভীতি ও হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগী অন্ধ হাফেজ মৌলভী মো. গোলজার রহমান কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, জমি বিক্রি, ধার দেনা সহ সুদের উপর নিয়ে আতিক বাবুকে টাকা গুলো দেওয়া হয়। চাকরি না হওয়ায় টাকা ফেরত চাইলে ভুয়া চেক দেয়।

এক পর্যায়ে আমার ছেলে জিহাদ আতিক বাবুর কাছে টাকা চাইতে গেলে ওকে মানষিকভাবে খুব টর্চার করে এবং গুলি করে মেরে ফেলে লাশ গায়েব করার হুমকি দেয়। সেদিন আতিক বাবুর বাড়ি থেকে জিহাদ ঘুরে এসে রাতে অসুস্থ্য হয়। কয়েকদিন পর ২০১৮ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি জিহাদ মারা যায়। টাকা চাইলে এখনও গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেয় আতিক বাবু। জিহাদের অকাল মৃত্যুর ঘটনায় আতিক বাবুই দায়ী বলে তিনি অভিযোগ করেন ও হত্যাকারীর বিচার দাবি করেন।

এই ঘটনায় এতোদিন পর কেনো মামলা করলেন জানতে চাইলে গোলজার রহমান বলেন, একাধিকবার থানায় গিয়েছিলাম। থানার বড় বাবু ছোট বাবু কেউ কথা শোনে নাই। বরং আতিক বাবুকে খবর দেওয়া হলে, আতিক বাবু থানায় এসে আমাকে হুমকি দিয়ে গালিগালাজ করে বের করে দেয়।

গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মো. শাহরিয়ার বলেন, এর আগে তিনি থানায় কার কাছে এসেছিলেন তা আমার জানা নেই। অভিযোগ পাওয়ার পর মামলা হয়েছে,তাকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

পিএনএস/হাফিজ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন