ঢাবি ছাত্রী ধর্ষণ : সাক্ষ্য দিলেন বিবিসির সাংবাদিক

  24-09-2020 11:25PM

পিএনএস ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্রী ধর্ষণের মামলায় বিবিসি ওয়াল্ডের বাংলা বিভাগের সাংবাদিক পারমিতা পালের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারক বেগম কামরুনাহার এ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

এ সাক্ষী ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দেওয়ার পর আসামি মজনুর পক্ষে রাষ্ট্র কর্তৃক নিযুক্ত লিগ্যাল এইডের আইনজীবী মো. রবিউল ইসলাম তাকে জেরা করেন। সাক্ষ্য গ্রহণকালে আসামি মজনুকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

ওই ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আফরোজা ফারহানা আহমেদ অরেঞ্জ বলেন, ‘পরমিতা ভিকটিমের পূর্বপরিচিত হওয়ায় ধর্ষণের ঘটনার পর তাকেই প্রথম ভিকটিম ফোন করে বিষয়টি জানায়। এরপর পরমিতা বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও থানায় অবহিত করে ভিকটিমকে হাসপাতালে নিয়ে যান। এ সম্পর্কেই তিনি ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছেন।’

এ নিয়ে মামলাটিতে ২১ জন সাক্ষীর মধ্যে ভুক্তভোগী ছাত্রী, তার বাবাসহ ছয়জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হলো। এর আগে গত ২৬ আগস্ট কারাগার থেকে ভার্চ্যুয়ালি চার্জগঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। সেখানে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।

মামলাটিতে গত ১৬ মার্চ ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আবু বক্কর সিদ্দিক আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় চলতি বছর ৯ জানুয়ারি আসামি মজনুর সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ওই রিমান্ড শেষে তিনি গত ১৬ জানুয়ারি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই আছেন।

চার্জশিটে বলা হয়, গত ৫ জানুয়ারি ক্যান্টনমেন্ট থানার কুর্মিটোলা বাসস্ট্যান্ড থেকে ফুটপাত দিয়ে ৪০-৫০ গজ সামনে আর্মি গলফ ক্লাব মাঠ সংলগ্ন স্থানে ভুক্তভোগী (২১) পৌঁছালে আসামি মজনু পেছন থেকে তাকে গলা চেপে ধরে ফুটপাতে ফেলে দেন। ভুক্তভোগী চিৎকার করতে গেলে আসামি তাকে কিল-ঘুষি মেরে ভয়ভীতি দেখালে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তখন মজনু ওই ছাত্রীকে অচেতন অবস্থায়ই ধর্ষণ করেন। তিনি একজন অভ্যাসগতভাবে ধর্ষণকারী। মজনু প্রতিবন্ধী, পাগল, ভ্রাম্যমাণ নারীদের সম্মতি ব্যতীত এই অনৈতিক কাজ করে আসছেন। তিনি ভ্রাম্যমাণ অবস্থায় থাকেন। তার স্থায়ী কোনো বসবাসের জায়গা নেই।

এর আগে র‌্যাব-১, উত্তরা এর সিপিসি-১ এর চৌকশ দল গত ৮ জানুয়ারি মজনুকে ক্যান্টনমেন্ট থানার শেওড়া বাসস্ট্যান্ডের পূর্ব পাশ থেকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর তার স্বীকারোক্তি মতে ভুক্তভোগীর ব্যাগ, মোবাইল ও পাওয়ার ব্যাংক এবং ওই ছাত্রীর ব্যবহৃত একটি জিন্সের প্যান্ট ও একটি জ্যাকেট উদ্ধার করে জব্দ করা হয়। ঘটনার দিন আসামি ভুক্তভোগীকে একা পেয়ে ফুটপাতের পাশের জঙ্গলের ভেতরে নিয়ে ধর্ষণ করেন।

এর আগে গত ৮ জানুয়ারি মজনু গ্রেপ্তার হন। তারও আগে গত ৬ জানুয়ারি ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে ভুক্তভোগী তার বান্ধবীর বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে রওনা হন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাসটি ক্যান্টনমেন্ট থানার কুর্মিটোলা বাসস্ট্যান্ডে থামে। তিনি বাস থেকে নেমে ফুটপাট দিয়ে ৪০-৫০ গজ শেওড়ার দিকে হেঁটে আর্মি গলফক্লাব মাঠ সংলগ্ন স্থানে পৌঁছালে পেছন দিক থেকে অজ্ঞাতনামা ২৫-৩০ বছর বয়সী যুবক গলা চেপে ধরে তাকে ফুটপাতের পাশে মাটিতে ফেলে দেন। তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়লে আসামি ভুক্তভোগীকে ধর্ষণ করেন।

পিএনএস-জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন