সেলিমপুত্র ইরফানের ১ বছরের কারাদণ্ড

  26-10-2020 07:18PM

পিএনএস ডেস্ক: ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইরফান সেলিম ও তার বডিগার্ড মোহাম্মদ জাহিদকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

মাদক, অবৈধ অস্ত্র ও ওয়াকিটকি রাখার দায়ে সোমবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরোয়ার আলম তাদের এ সাজা দেন।

হাজী সেলিমের সোয়ারিঘাটের বাড়িতে অভিযান শেষে এক ব্রিফিংয়ে র‌্যাবের মুখপাত্র লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ সাংবাদিকদের একথা জানিয়েছেন।

এদিকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় সাংসদ হাজী সেলিমের গাড়িচালক মিজানুর রহমানকে এক দিনের রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দেন আদালত। ঢাকা মহানগর হাকিম আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমানের আদালত এই আদেশ দেন।

এর আগে রোববার (২৫ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর নীলক্ষেত থেকে সস্ত্রীক বাড়ি ফেরার পথে কলাবাগানে নৌ কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমদ খানের মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয় হাজি সেলিমের ব্যবহৃত গাড়ি। ধাক্কা দেয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করলে গাড়ি থেকে দুজন নেমে ওই নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট পদের ওই কর্মকর্তাকে মারধর করেন।

এ ঘটনায় সোমবার সকালে সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইরফান সেলিম, তার বডিগার্ড মোহাম্মদ জাহিদ, এ বি সিদ্দিক দিপু এবং গাড়িচালক মিজানুর রহমানসহ অজ্ঞাত ২-৩ জনকে আসামি করে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমদ খান বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা করেন। সে মামলায় গাড়িচালক মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পরে তাকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডের নেয়ার জন্য আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তার এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

একই ঘটনায় দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ঢাকা-৭ আসনের এমপি হাজী সেলিমের ছেলে মোহাম্মদ ইরফান সেলিমকে আটক করা হয়।

সোমবার দুপুর ১টার দিকে লালবাগের সোয়ারিঘাটের দেবদাস লেনে হাজি সেলিমের বাড়িটি ঘেরাও করে র‌্যাব। এর কিছুক্ষণ পরে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরওয়ার আলমের নেতৃত্বে অভিযান শুরু হয়।

অভিযানের পর নয়তলা ওই ভবনের তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় ইরফান সেলিম থাকেন জানিয়ে র‌্যাবের ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বলেন, সেখানে ১টি বিদেশি পিস্তল, গুলি, ১টি এয়ারগান, ৩৭টি ওয়াকিটকি, একটি হাতকড়া এবং বিদেশি মদ ও বিয়ার পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, আগ্নেয়াস্ত্রের কোনো লাইসেন্স নেই। আর ওয়াকিটকিগুলোও অবৈধ, কালো রঙের এসব ওয়াকিটকি শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ব্যবহার করতে পারেন।

এদিকে নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ইরফানের গাড়ি ওয়াসিমকে ধাক্কা মারার পর নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিম সড়কের পাশে মোটরসাইকেলটি থামান এবং গাড়ির সামনে দাঁড়ান। নিজের পরিচয় দেন। তখন গাড়ি থেকে আসামিরা একসঙ্গে বলতে থাকেন, ‘তোর নৌবাহিনী/সেনাবাহিনী বের করতেছি, তোর লেফটেন্যান্ট/ক্যাপ্টেন বের করতেছি। তোকে এখনই মেরে ফেলব।’

এরপর বের হয়ে ওয়াসিমকে কিলঘুষি মারেন এবং তার স্ত্রীকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। তারা মারধর করে ওয়াসিমকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে যান। তার স্ত্রী, স্থানীয় জনতা এবং পাশে ডিউটিরত ধানমন্ডির ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা তাকে উদ্ধার করে আনোয়ার খান মডেল হাসপাতালে নিয়ে যান।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন