লালমনিরহাটের ঘটনায় ৩ মামলা

  31-10-2020 05:12PM

পিএনএস ডেস্ক: লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে কোরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে শহীদুন্নবী জুয়েল নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা এবং লাশ পুড়ে ফেলার ঘটনায় ৩টি মামলা হয়েছে।

নিহতের পরিবার, বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ ও পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক পৃথক এ মামলা তিনটি দায়ের করে। পুরো ঘটনায় কারও না কারো ইন্ধন থাকতে পারে বলে মনে করছে পুলিশের রংপুর রেঞ্জর ডিআইজি দেবদাশ ভট্টাচার্য্য।

ঘটনায় জঙ্গি সম্পৃক্ততা আছে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আবদুল ওয়াহাব ভুঞা বলেন, এ বিষয়ে এখনেই কিছু বলা যাবে না। বিষয়টি তদন্ত করে বলতে হবে।

শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদের শহীদ আফজাল হোসেন মিলনায়তনে আলেম সমাজের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসব মন্তব্য করেন তারা।

এর আগে বৃহস্পতিবার মাগরিবের নামাজের আগে বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের দরজা ভেঙে ওই যুবককে বের করে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে লাশ নিয়ে বুড়িমারী বাঁশকল এলাকায় লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের ওপর পেট্রোল ঢেলে লাশ পুড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা।

শহীদুন্নবী জুয়েল রংপুর শহরের শালবন মিস্ত্রিপাড়ার মৃত আবু ওয়াজেদ মিয়ার ছেলে। তিনি রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক লাইব্রেরিয়ান।

পাটগ্রামে আলেম সমাজের সাথে বৈঠক শেষে পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাশ ভট্টাচার্য্য সাংবাদিকদের বলেন, বুড়িমারীতে যুবককে পিটিয়ে হত্যা ও লাশ পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় অন্য কারও হাত থাকতে পারে।

অন্যদিকে পুরো ঘটনাটিকে তদন্ত করে জড়িতদের আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার আবদুল ওয়াহাব ভূঞা।

এ ঘটনায় জঙ্গি সম্পৃক্ততা আছে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে বিভাগীয় কমিশনার আবদুল ওয়াহাব ভুঞা বলেন, এ বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাবে না। বিষয়টি তদন্ত করে বলতে হবে। তবে আমার মনে হচ্ছে এ ঘটনায় জঙ্গি সম্পৃক্ততা নেই।

পাটগ্রামের ইউএনও কামরুন নাহার বলেন, খবর পাওয়া মাত্রই আমি বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদে চলে যাই। আমার কথায় প্রথমে উত্তেজিত জনতা শান্ত হয়েছিল, তখন লোকজনও অনেক কম ছিলো। কিন্তু হঠাৎ করে কিছু বহিরাগত লোকের আগমন ঘটে। তারা শান্ত পরিস্থিতিকে উত্তেজিতকর করে তোলেন। পুলিশ ফাঁকা গুলি করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। ফলে এমন ঘটনাটি ঘটেছে।

তদন্ত প্রক্রিয়া কতদূর সম্পন্ন হয়েছে- জানতে চাইলে পুলিশের রংপুর রেঞ্জর ডিআইজি দেবদাশ ভট্টাচার্য্য বলেন, তদন্ত প্রক্রিয়া অনেক দূর এগিয়েছে। এ ঘটনায় তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে। এসব মামলায় যাদের আমরা এরই মধ্যে শনাক্ত করতে পেরেছি, তাদের আসামি করা হয়েছে। বাদবাকি আসামিদের আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।

ঘটনাটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড মনে করছেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ডিআইজি বলেন, আমরা মনে করি এ ঘটনায় কারও না কারও ইন্ধন রয়েছে। না হলে এমন একটা তুচ্ছ ঘটনা, যেটা কিনা ঘটনাই নয়, সেটা নিয়ে এমন বড় কিছু হওয়ার কথাই নয়। যারাই থাকুক ঘটনার সামনে কিংবা পেছনে, তাদের খুঁজে বের করা হবে।

রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আবদুল ওয়াহাব ভুঞা বলেন, বুড়িমারীতে শহিদুন্নবী জুয়েল নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনাটি অত্যন্ত অমানবিক এবং দুঃখজনক। উত্তেজিত উশৃঙ্খল জনতাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুঁড়েও তাদের থামাতে পারেনি। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের প্রত্যেককে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন