আজীবন ক্ষমতায় থাকার ৫ উপায়

  18-03-2018 09:17PM

পিএনএস ডেস্ক: চীনে প্রেসিডেন্টের মেয়াদ অনির্দিষ্ট করার মধ্য দিয়ে বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর 'আজীবন ক্ষমতায়' থাকার পথ পরিষ্কার করা হয়েছে। ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসে রোববার দেশটির সাংবিধানিক পরিবর্তনের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। এখন পার্লামেন্টের অনুমোদনের পরই এটি কার্যকর হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। বিবিসির ডেইলি পলিটিক্স অনুষ্ঠানের রিপোর্টার এলিজাবেথ গ্লিঙ্কা আজীবন ক্ষমতায় থাকতে চাওয়া বিশ্ব নেতাদের জন্য পাঁচটি নির্দেশিকা দিয়েছেন। চীনের শি জিনপিং, রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন এবং বিগত শাসকদের মধ্যে ইরাকের সাদ্দাম হোসেন ও রাশিয়ার জোসেফ স্টালিনকে উদাহরণ হিসেবে হাজির করেছেন তিনি। তবে পশ্চিমা কোনও শাসকের কথা আসেনি তার উদাহরণে। তিনি বলছেন, কোনো একটি দেশে কেউ তাকে ক্ষমতায় দেখতে না চাইলেও এই গাইড বা নির্দেশিকা তাকে দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতায় থাকতে সাহায্য করবে।

এক. সংবাদ মাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ
এলিজাবেথ গ্লিঙ্কা বলছেন, আজীবন ক্ষমতায় থাকতে গেলে সংবাদমাধ্যমগুলো যাতে স্বাধীনভাবে খবর পরিবেশন করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। কোনো সংবাদ মাধ্যমে যদি সমালোচনা-ধর্মী কিছু প্রকাশ করা হয় তাহলে সেটাকে গুজব বলে উড়িয়ে দিতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে হলে তাদের পরিবেশিত বার্তার উপর থাকতে হবে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ। এজন্যে খুবই বিখ্যাত উত্তর কোরিয়া। এই দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমে সরকারের পক্ষে যেসব প্রচারণা চালানো হয় তার জন্যে দেশটি সুপরিচিত।

এলিজাবেথ গ্লিঙ্কার মতে, ইন্টারনেটকে নিয়ন্ত্রণ করার কথাও ভুললে চলবে না। এজন্যে বিখ্যাত চীন। ইন্টারনেট ব্রাউজিং এর ক্ষেত্রে নানা রকমের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে হবে ফায়ার ওয়াল বসিয়ে। দেশটিতে 'উইনি দ্য পু' কার্টুনও নিষিদ্ধ। কারণ প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর ডাক নাম পু।

দুই. পদ পরিবর্তন করতে হবে
এলিজাবেথ গ্লিঙ্কা বলছেন, চীনের মতো করে যদি কোনো দেশের সংবিধান পরিবর্তন করা সম্ভব না হয়, তাহলে পদ পরিবর্তন করতে পারেন। যেমনটা করেছেন রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন। পুতিন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, তারপর সেটা ছেড়ে হয়েছেন প্রেসিডেন্ট, আবার প্রেসিডেন্ট পদ ছেড়ে দিয়ে হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তারপর আবার প্রেসিডেন্ট। শুধু আপনি যখন দেশের বাইরে থাকবেন তখন যাতে আপনার অনুগত ও বিশ্বস্ত লোকদের হাতে ক্ষমতা থাকে সেটা নিশ্চিত করে যেতে হবে। তবে উচ্চাকাঙ্ক্ষী কারো হাতে ক্ষমতা দিয়ে দেশের বাইরে যাওয়ার চিন্তাটা বাদ দিতে হবে।

তিন. দারুণ একটা নাম নিতে হবে
নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ বোঝাতে হলে আপনার নামটা কি এবং সেটা শুনতে কেমন শোনায় সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উগান্ডার স্বৈরশাসক ছিলেন ইদি আমিন। তিনি শুনতে চাইতেন তাকে বলা হোক 'মহামান্য, আজীবনের প্রেসিডেন্ট, বিশ্বে সব শান্তি ও সমুদ্রে সব মাছের রাজা এবং আফ্রিকায় ব্রিটিশ সাম্রাজ্য বিজয়ী ইদি আমিন।'

চার. সকল নির্বাচনে জয়ী হতে হবে
যদি দেশে নির্বাচন দেওয়া হয় তাহলে সব নির্বাচনে জিততে হবে। সাবেক রুশ নেতা স্তালিন বলেছিলেন, যেসব জনগণ ভোট দেন তারা গুরুত্বপূর্ণ নন। গুরুত্বপূর্ণ তারাই যারা ভোট গণনা করেন। ইরাকি নেতা সাদ্দাম হোসেন এবং উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং আন নির্বাচন দিয়ে তাতে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছে। ভোটের ১০০ শতাংশও পেয়েছিলেন তারা। সাম্প্রতিক সময়ে কিউবার রাউল ক্যাস্ত্রো এবং সিরিয়ার বাশার আল আসাদ তাদের চেয়ে সামান্য কম ভোট পেয়েছেন। তাদের প্রাপ্ত ভোট ছিলো ৯৭ থেকে ১১ শতাংশ।

পাঁচ. নিজের একটা ইমেজ তৈরি করুন
নিজের একটা ভাবমূর্তি তৈরি করুন। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি দেখতে কেমন, কি ধরনের পোশাক-আশাক পরেন, আপনার কতোগুলো বন্দুক আছে, পুতিনের মতো খালি গায়ে ঘোড়ায় চড়ে ঘুরে বেড়ান, যাতে সবাই আপনার দিকে ঘুরে তাকায়।

পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন