প্রতিদিন ৩০০ জন রোহিঙ্গাকে ফেরত নেবে মায়ানমার

  16-01-2018 02:34PM


পিএনএস ডেস্ক: বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে মায়ানমারের সঙ্গে মাঠ পর্যায়ের একটি চুক্তি সই করা হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিদিন ৩০০জন রোহিঙ্গাকে ফেরত নেবে মায়ানমার। অর্থাৎ সপ্তাহে ১৫০০ রোহিঙ্গা ফেরত যাবেন।

তিনমাস পর এই সংখ্যা পুনরায় পর্যালোচনা করে বাড়ানো হবে।

যেদিন থেকে যাওয়া শুরু হবে, তার পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে প্রক্রিয়াটি শেষ হবে বলে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বলছেন। খবর বিবিসির

সোমবার থেকে 'ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট' নামের ওই চুক্তিটির বিষয়ে মায়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের জয়েন্ট ওয়াকিং গ্রুপের প্রথম বৈঠকে আলোচনা শুরু হয়। মঙ্গলবার সকালে চুক্তিটি সই হয়। বাংলাদেশের পক্ষে মোঃ. শহিদুল হক এবং মায়ানমারের পক্ষে মিন্ট থোয়ে স্বাক্ষর করেন।

চুক্তি সাক্ষরের পর মায়ানমার থেকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মোঃ. শহিদুল হক বলছেন, ‘চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিন ৩০০জন রোহিঙ্গাকে ফেরত নেবে।’

তিনি জানান, বাংলাদেশ প্রতি সপ্তাহে ১৫ হাজার রোহিঙ্গা ফেরত পাঠানোর দাবি করেছিল। কিন্তু মায়ানমার সপ্তাহে ১৫০০ রোহিঙ্গা ফেরত নিতে রাজি হয়েছে। তিনমাস পরে পর্যালোচনা করে এই সংখ্যা বাড়ানো হবে।

‘বাংলাদেশে যে রোহিঙ্গারা রয়েছেন, তাদের কিভাবে ফেরত আনা হবে, কোন রুট দিয়ে হবে, কোন কোন জায়গায় তাদের রাখা হবে, মায়ানমারে যাবার পর তাদের কোথায় নেয়া হবে, নিরাপত্তা, বাড়িঘরের কি হবে, কবে শুরু হবে, কবে শেষ হবে এইসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’ বলছেন শহিদুল হক।

চুক্তিটিতে ফেরত যাওয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা এবং রাখাইনে প্রত্যাবাসনের পর রোহিঙ্গাদের জীবন-জীবিকার বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

কিন্তু বাংলাদেশে যে বিপুল সংখ্যায় রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে এসেছে, এত কম সংখ্যায় তাদের ফেরত পাঠানো হলে সেটি তো দীর্ঘ সময় নেবে। সেটা স্বীকার করে পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক বলছেন, এ ধরণের অবস্থায় এ ধরণের প্রত্যাবাসন এভাবেই হয়। কারণ আমরা সবকিছু চাইতে পারিনা। আমরা তাদের নিরাপত্তার কথাও বলবো, আমার চাইবো যে একসঙ্গে সবাইকে পাঠিয়ে দেবো, ওরা এখানে দিতে পারছে না। সবচেয়ে বড় বিষয়টি হলো, আমরা একটি ধারা রেখেছি, যেদিন থেকে যাওয়া শুরু হবে, সেদিন থেকে দুই বছরের মধ্যে এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শেষ হবে।

তিনি বলছেন, প্রথমে অল্প করে যাওয়া শুরু হবে, পরে এই সংখ্যা বাড়বে।

কিন্তু কবে থেকে রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়া শুরু হবে, সেটি তিনি জানাতে পারেননি। তিনি বলেন, পদ্ধতি শুরু হয়েছে, এখন দ্রুততম সময়ে তাদের যাওয়া শুরু হবে। রোহিঙ্গাদের জন্য একটি ফরমের রূপও চূড়ান্ত করা হয়েছে।

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে গত ২৩শে নভেম্বর ২০১৭ তারিখে একটি সমঝোতা স্মারকে একমত হয় বাংলাদেশ ও মায়ানমার। যাকে ‘অ্যারেঞ্জমেন্ট অন রিটার্ন অফ ডিসপ্লেসড পারসনস ফ্রম রাখাইন স্টেট’ বা রাখাইন রাজ্যের বাস্তুচ্যুত মানুষদের ফিরিয়ে আনার সমঝোতা বলে বর্ণনা করা হচ্ছে।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন