আগুনে পুড়লো মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের সর্বস্ব

  12-02-2018 09:11AM


পিএনএস ডেস্ক: মধ্যরাতের গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিল রাজধানীর মিরপুরের ভাষানটেক এলাকার জামিয়া মোহাম্মদীয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। মসজিদের মাইকে ভেসে আসা আগুনের খবরে ঘুম ভাঙল সবার। মাদ্রাসার অদূরে কাঠের দোকানে লাগা আগুন নেভাতে ঝাপিয়ে পড়লেন যে যার মতো।

মুহূর্তেই সে আগুন ছড়িয়ে পড়ল নিজেদের মাদ্রাসার কক্ষগুলোতেও। কিন্তু ততক্ষণে আর কিছুই করার ছিল না। মাদ্রাসার কাঁচা ঘরের সঙ্গে চোখের সামনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় নিজেদের সর্বস্ব।

রোববার (১১ জানুয়ারি) দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে ভাষানটেক বাজার সংলগ্ন বস্তির একাংশে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় ২ ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। আগুনে প্রায় ২০টি দোকান, ৪টি ঘর ও জামিয়া মোহাম্মদীয়ার মাদ্রাসার বেশির ভাগ অংশ পুড়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শী মনির হোসেন জানান, ভাষানটেক প্রধান সড়কের পাশে বেশ কয়েকটি বড় কাঠের দোকান রয়েছে। এর মধ্যে একটি দোকানেই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। আগুন লাগার পর পর মসজিদের মাইক দিয়ে সবাইকে সতর্ক করা হয়। ফায়ার সার্ভিস আসার আগ মুহূর্তে স্থানীয়রাই আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। কিন্তু ততক্ষণে বেশ কয়েকটি দোকান ও মাদ্রাসায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পরে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের চেষ্টায় আগুনের নিভিয়ে ফেলা হয়।

ভাষানটেক বস্তিতে আগুনসরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ডোবার মধ্যে কাঠের পাটাতন দিয়ে এল সাইজের একটি ঘর তোলে সেখানে মাদ্রাসার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছিল। মাদ্রাসার সামনের দিকে খানিকটা উঁচু জায়গায় দোকান এবং ঘরগুলো ছিল। সে দোকানগুলোর একটাতে লাগা আগুন ছড়িয়ে পড়লে পাশের দোকান ও মাদ্রাসার বেশিরভাগ অংশ পুড়ে যায়।

মাদ্রাসার শিক্ষক মো. হাবীবুল্লাহ জানান, প্রায় ২৫০ ফিট/৬০ ফিট আয়তনের মাদ্রাসা ঘরটি পুড়ে গেছে। এখানে প্রায় ৬০ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করতো এবং থাকতো। আগুন লাগার পর তিনিই প্রথম মসজিদের মাইক দিয়ে ঘোষণা দেন। পরে ঘুমন্ত মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা উঠে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। ততক্ষণে আগুন ছড়িয়ে মাদ্রাসার ঘরে লেগে যায়। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা যে যেই অবস্থায় ছিল সে অবস্থাতেই বের হয়ে আসে। তারা নিজেদের কাপড় বা বই কিছুই নিয়ে বের হয়ে আসতে পারেনি। পরে নিজেদের চোখের সামনেই আগুনে সবকিছু পুড়ে গেলেও তাদের কিছুই করার ছিল না।

মাদ্রাসার বেশিরভাগই শিক্ষার্থীই এতিম। আগুনে সর্বস্ব হারিয়ে শিক্ষার্থীরা জড়োসড়ো হয়ে মাদ্রাসার অবশিষ্ট অংশের কাঠের পাটাতনের ওপর বসে থাকতে দেখা গেছে। শিক্ষকরা কয়েকটি কম্বল ব্যবস্থা করেছেন, যা ভাগাভাগি করে গায়ে জড়িয়ে বসে রয়েছেন তারা।

ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা বলেন, আগুন লাগার প্রকৃত কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শটসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হবে। তদন্ত সাপেক্ষে পরে সব বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন