চকবাজারে অলিগলিতে ময়লার দুর্গন্ধ

  27-05-2018 04:57PM

পিএনএস ডেস্ক : রাজধানীর চকবাজারে দুরবস্থার শেষ নেই। ভাঙাচোরা সড়কে চলছে সংস্কারের কাজ। জায়গায় জায়গায় ময়লার স্তূপ। কাদাপানি মাড়িয়ে চলতে গিয়ে মানুষ নাজেহাল। অলিগলিতে ময়লার দুর্গন্ধ। সঙ্গে জলাবদ্ধতা এলাকাবাসীকে করে তুলেছে অসহায়। সরেজমিনে এলাকা ঘুরে মিলেছে এ চিত্র।

চক সার্কুলার রোডে শুক্রবার কসমেটিকসসমাগ্রী নিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন আব্দুল হামিদ। তিনি বলেন, ‘চকের রাস্তার মা-বাপ নেই। কত বছর আগে এ রাস্তায় ঢালাই দিছে তা-ও ভুলে গেছি। রাস্তায় গোড়ালি সমান ময়লা, এগুলো দেখার কেউ নাই।’

ব্যবসায়ীরা জানাল, রমজান মাস শুরু হওয়ার পর দুর্ভোগ দ্বিগুণ হয়েছে। সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত যানজট লেগে থাকে। রাস্তায় কাদা মাড়িয়ে চলতে গিয়ে খোলা ডাস্টবিনের দুর্গন্ধে অস্থির হতে হয়। সঙ্গে চলছে সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি। যানজট সামাল দিতে ঢাকা মহানগর পুলিশ ৬৫ জন কর্মী নিয়োগ করেছে। তাঁদেরও দায়িত্ব পালনে হিমশিম খেতে হয়।

উমেশ দত্ত রোডে ডিএসসিসির উন্নয়নকাজ চলছে। পুরনো পিচ ঢালাই তুলে নতুন করে ইট সুরকি দেওয়া হচ্ছে। চলছে ঢালাইয়ের প্রস্তুতি। এ কাজের ফলে উমেশ দত্ত রোডের শুরু থেকে চকবাজার মডেল থানা পর্যন্ত যানবাহন চলাচল করছে ধীরগতিতে। আইজি প্রিজনের অফিসের সামনে থেকে চকবাজার থানা পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে এক পাশের যান চলাচল। সেখানে দুই পাশের যানবাহন এসে জটলা তৈরি হচ্ছে। কারখানা শ্রমিক রাকিব শেখ জানান, দুই-তিন মাস ধরে এ রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। বৃষ্টি হলেই নবকুমার ইনস্টিটিউট ও শহিদুল্লাহ কলেজ, বুলবুল ললিতকলা একাডেমি, অগ্রগামী শিশু নিকেতন ও বায়তুল মামুর মসজিদের সামনে রাস্তা তলিয়ে যায়। সিটি করপোরেশন এখানে ড্রেনের কাজ করার পরও কেন জলাবদ্ধতা, তার জবাব নেই।

কেল্লার মোড়ের বাসিন্দা আফজাল হোসেন বলেন, এলাকার শিশুরা নবকুমার মাঠে নিয়মিত খেলাধুলা করে থাকে। কিন্তু সামান্য বৃষ্টি হলে এ মাঠে বৃষ্টির পানি জমে থাকে তিন-চার দিন।

ডিএসসিসির অঞ্চল-৩-এর নির্বাহী প্রকৌশলী খায়রুল বাকের বলেন, বৃষ্টির পানি আটকে জলাবদ্ধতার অভিযোগ সঠিক নয়। এ রাস্তায় আমরা নতুন করে ড্রেনলাইন করেছি। এ কাজটি করার পর এখন পানি জমে না। আর রাস্তা মেরামতের কাজটি জুন মাসে শেষ হয়ে যাবে।’

উমেশ দত্ত রোড দিয়ে একটু সামনে এগিয়ে গেলেই চকবাজার মডেল থানা। সেখানে ২০ ফুট রাস্তার অর্ধেক দখল করে রয়েছে ময়লার খোলা ডাস্টবিন। এমন খোলা ডাস্টবিন দেখা যায় হাজি সেলিম টাওয়ারের সামনে। রয়াল ফাস্ট ফুডের সামনে একসঙ্গে তিনটি ময়লার খোলা ডাস্টবিন রাখা। দুর্গন্ধে এ রাস্তায় চলা দুষ্কর। ব্যবসায়ীরা রয়েছে আরো বিপাকে। অসহনীয় এ পরিবেশে ক্রেতারা আসতে চায় না।

চায়না ট্রেডার্সের ইয়াসিন আরাফাত বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে ময়লার মধ্যেই ব্যবসা করছি। কিন্তু রমজান মাস শুরু হওয়ার পর তো আর সহ্য হচ্ছে না। বৃষ্টি হলে খোলা অবস্থায় থাকা ময়লা পানিতে রাস্তায় ভেসে আসে। সিটি করপোরেশনের লোকজন নিয়মিত পরিষ্কারও করে না।’ প্রায় অভিন্ন চিত্র মোগলটুলি সড়কের মোড়ে। সেখানেও ময়লার ডাস্টবিন।

ডিএসসিসির অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম বলেন, ‘পুরান ঢাকায় আমরা রাস্তায় ডাস্টবিন রাখার বিকল্প পাচ্ছি না। অনেক স্থানে ময়লার সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন তৈরি করেছি। কিন্তু পুরান ঢাকায় কোনো জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। তবে এগুলো আমরা নিয়মিত পরিষ্কার করে রাখি।’

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন