ঈদযাত্রার শুরুতেই ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয়, মহাসড়কে যানজট

  13-06-2018 02:49PM

পিএনএস (মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান) : ঈদে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে ট্রেন ভ্রমণ বেছে নিলেও বলা যায় শুরুতেই সিডিউল বিপর্যয়ে যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। ইতিমধ্যে কয়েকটি ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। এতে স্টেশনে যাত্রীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। শুরুতেই ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয়ের ঘটনায় পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে।

সরেজমিন জানা গেছে, ১৩ জুন সকাল ৬টা ২০ মিনিটে সুন্দরবন ট্রেনটি খুলনার উদ্দেশ্যে ছাড়ার কথা থাকলেও ৭টা ১৮মিনিটেও ট্রেন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনেই অপেক্ষা করছিল। সুন্দরবন ট্রেনের অ্যাটেনডেন্ট হামিদ মিডিয়াকে জানান, ট্রেন খুলনা থেকে ছেড়ে আসতে দেরি করায় এখন কমলাপুরে তার প্রভাব পড়েছে। যাত্রীদের সাময়িক অসুবিধার জন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।

কুষ্টিয়াগামী আনোয়ার নামক এক যাত্রী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, আমি সেহেরি খেয়ে কমলাপুর স্টেশনে এসেছি। নির্দিষ্ট সময়ে ট্রেন না ছাড়ায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। অন্য এক যাত্রী জানান, বাসের নানান ভোগান্তির কথা চিন্তা করে আমরা বহু কষ্টে টিকিট কেটেছি, যাতে যাত্রা সঠিক সময়ে হয়। কিন্তু এখানে অপেক্ষার প্রহর গুণতে হচ্ছে।

রেল কর্মকর্তারা জানান, এবারে কোনো সিডিউল বিপর্যয় নেই। বেশির ভাগ ট্রেনই সঠিক সময়ে ছেড়ে যাচ্ছে, দুয়েকটি ট্রেনই কিছুটা বিলম্বে ছাড়ছে। যদিও আজকের সুন্দরবন ট্রেনের একটু বেশি লেট হচ্ছে বলে তারা স্বীকার করেন। ঈদের এক সপ্তাহ ট্রেন চলবে বিরতিহীনভাবে। তাই কোথাও কোনো কারণে দেরি হয়ে গেলে সেই সময় মেক-আপ করা মুশকিল হয়ে পড়বে।

আশার কথা, যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে বাংলাদেশ রেলওয়ে সব সময় ঈদ স্পেশাল সার্ভিস চালু করে। এর অংশ হিসেবে এবারের ঈদ স্পেশাল ট্রেন চলবে আজ থেকে। গত ১০ জুন থেকে স্পেশাল ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে, যা এখনো চলমান। ঈদের পর সাত দিন ধরে এই ট্রেন চলবে। এসব ট্রেনের ফিরতি টিকিট নিজ নিজ স্টেশনে পাওয়া যাবে বলে জানানো হয়েছে।

পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে শহরের মানুষ এখন গ্রামমুখী। মহাসড়কে যানজট ও মানবসৃষ্ট অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়াতে ট্রেনকে বেছে নিয়েছেন যাত্রী সাধারণ। সূত্রমতে, ট্রেনযোগে প্রতিদিনই ৭০ হাজার মানুষ রাজধানী ঢাকা ছাড়ছে। তবে ১৩ জুন ট্রেনযোগে ঢাকা ছাড়বে প্রায় এক লাখ মানুষ। ঈদের দিন যত ঘনিয়ে আসবে, যাত্রীসংখ্যা ততই বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।

ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয়ের খবর যখন আসছে তখন সড়কপথে যানজটের খবরও প্রলাও করে মিডিয়ায় আসছে। ট্ঙ্গী থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত যানজট তীব্র আকার ধারণ করছে। থেমে থেমে যান চলছে। ময়মনসিংহ রোডেও যানজট যাত্রীদের ভোগান্তিতে ফেলছে। যদিও পরিবহন ও সড়ক মন্ত্রী সড়কপথে যানজট নেই এবং হবে না বলে গণমাধ্যমকে জানান।

অন্য সময় ট্রেনে সিডিউল বিপর্যয় এবং সড়কে যানজট হলে দুর্ভোগ মানা যায়। কিন্তু রমজানে এমনটা রোজাদারদের কষ্ট বাড়ায় বৈকি। ইফতার-সেহরি থেকে শুরু করে শিশুদের নিয়ে বাড়তি ভোগান্তি পোহাতে হয়। তার ওপর প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দেওয়ার ব্যবস্থা সড়কপথে খুব একটা নেই। যে কারণে সড়কপথে পাবলিক টয়লেটের ব্যবস্থা করা দরকার।

সকাল থেকে কমলাপুর রেল স্টেশন লোকে লোকারণ্য। স্বজনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে শবে-কদরের ছুটিতে ভিড় করছেন আগাম টিকিট-কাটা ঘরমুখী মানুষ। কিন্তু ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয়ে যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। আর যেন বিপর্যয় না ঘটে, সে ব্যাপারে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে কথায় নয়, বাস্তবে আরো বেশি সতর্ক পদক্ষেপ গ্রহণ সময়ের দাবি।

লেখক : বার্তা সম্পাদক- পিএনএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন