খালেদার অসুস্থতা নিয়ে সংসদে যা বললেন মতিয়া চৌধুরী

  19-06-2018 09:39PM

পিএনএস ডেস্ক :বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে নাটক শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রস্তাবিত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।


মতিয়া চৌধুরী বলেন, নানা অজুহাত তুলে নির্বাচনের পরিবেশকে মেঘাচ্ছন্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। একবার বলা হচ্ছে, খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে নির্বাচনে যাবে না। আবার স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।

খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে নানা নাটক শুরু হয়েছে এমন অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, কান্নাকাটি, কত কিছু যে তারা করছে, মনে হয় ইউনাইটেড হাসপাতাল ছাড়া দেশে কোনো হাসপাতাল নেই। বিএনপির একটাই কথা সব ঝুঠা হ্যায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় না, সিএমএইচও না। এখন বলা হচ্ছে তিনি নাকি হাঁটতেই পারছেন না।

এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, লাল দুটি কাকাতুয়া ধরেছে যে বায়না, চাই তার লাল জুটি চিরুনি আর আয়না। ইউনাইটেড হাসপাতাল ছাড়া উনি কোথাও যাবেন না।

ব্যাংকিং খাত নিয়ে জাতীয় পার্টির সমালোচনার জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ১৯৮২ সালে বেসরকারি খাতে প্রথম প্রজন্মের ব্যাংকগুলোকে লাইসেন্স দেয়া হয়েছিল। কয়েকদিনের মধ্যেই প্রথম প্রজন্মের ব্যাংকগুলো অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। সরকারি প্রশ্রয়ে ব্যাংকগুলোর লুটপাট শুরু হলো। যার মধ্যে দিয়ে দেশের আর্থিক খাতে বিশৃঙ্খলা শুরু হয়।

২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়ার বাসায় গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ফিরে আসার ঘটনা উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এখন আবার নানা ধরনের কথা বলা হচ্ছে; নানা বায়না ধরা হচ্ছে।

তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা আজ বাংলাদেশকে শুধু স্বীকৃতিই দিচ্ছে না; অনুসরণ করছে। কারণ এতো ছোট একটা দেশ, নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগ মোকবেলা করে উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে। যে কারণে একের পর এক স্বীকৃতি বিশ্ব দরবার থেকে আসছে। এ সফলতা খুব মৃসন পথে আসেনি। নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা, অগ্নিসংযোগ, জঙ্গিবাদ চক্রের অপতৎপরতা মোকাবেলা করে অর্থনৈতিক অগ্রগতি ঘটেছে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, নিজেদের অনেক সমস্যা থাকা সত্ত্বেও রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার মতো মানবিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যেটা সহজ কাজ ছিল না। অনেক ধরনের যুদ্ধের উস্কানি এড়িয়ে রোহিঙ্গাদের পুর্নবাসনের কাজ চলছে। জঙ্গিবাদ, মাদক ও সন্ত্রাস একে অপরের গলাগলি ধরে চলে। এদের টার্গেট যুব সমাজ। তাই মাদকবিরোধী অভিযানে জিরো টলারেন্স নিয়ে সরকার এগিয়ে যাচ্ছে। এর যারা বিরোধিতা করছেন তারা জ্ঞান পাপী। যুব সমাজকে মাদকের ছোবলের হাত থেকে রক্ষা করতে না পারলে উন্নয়ন ব্যাহত হবে।

মতিয়া চৌধুরী বলেন, জঙ্গি-সন্ত্রাসীরা মাথা তুলতে না পেরে মাদকের ছোবলে যুব সমাজকে ধ্বংস করতে চায়। মাদকবিরোধী অভিযান নিয়েও অনেকে আপত্তি জানাচ্ছে। দেশের ক্ষতি করার জন্যই এটা তারা করছে, এরা আসলে জ্ঞানপাপী। যুব সমাজকে এই মাদকাসক্তের হাত থেকে রক্ষা করতেই হবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুই দেশ থেকে মদ ও জুয়া নিষিদ্ধ করেছিলেন। মাদক, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। মাদক থেকে দেশকে রক্ষা করতে না পারি যুব সমাজের সমূহ সর্বনাশ হবে। প্রধানমন্ত্রী শক্তহাতে যেভাবে জঙ্গি-সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণ করেছেন, ইনশাল্লাহ মাদকের ছোবল থেকেও দেশকে রক্ষা করবেন।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার প্রিয়জনরাই তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। ১১ বছর মামলা চলার পর রায়ে দণ্ডিত হয়ে সাজা ভোগ করছেন। এখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা সরকারের কী করার আছে? সরকারের তো করার কিছু নেই, আবেদন করলে রাষ্ট্রপতি তাকে ক্ষমা করতে পারেন। আর খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়েও নানা বিভ্রান্ত ছড়ানো হচ্ছে। নানা বায়না ধরছে। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের পথে চলে, অন্য কোনো বাঁকা পথে ক্ষমতায় আসেনি, আসার চিন্তাও নেই।

এ সময় সঞ্চয়পত্রের ওপর থেকে সুদ না কমানোর জন্য অর্থমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

আলোচনায় আরও অংশ নেন সরকার দলের সংসদ সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর ঊ শৈ সিং, সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ, মুক্তিযুদ্ধকালীন সেক্টর কমান্ডার মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, একেএমএ আউয়াল সাইদুর রহমান, বিরোধী দল জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ, বেগম খোরশেদ আরা হক।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন