সড়কে মৃত্যুর মিছিল থামছে না

  23-06-2018 07:29PM

পিএনএস (মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান) : সড়ক-মহাসড়কে মৃত্যুর মিছিল চলছেই। পরিস্থিতি বলে দিচ্ছে সড়কগুলো মানুষ হত্যার অভয়ারণ্যে পরিণত। ২২ জুন সারা দেশে সড়কে ৩৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। প্রায় প্রতিদিন সড়কগুলোয় এভাবে মানুষের লাশ পড়ছে আর রক্ত ঝরছে।

১২ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর সারাদেশে সড়কে অন্তত ৪৩ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে দুই শতাধিক। ২২ জুন দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৫ জন নিহত ও শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত দেশের সাতটি জেলায় নিহতদের মধ্যে গাইবান্ধায় যাত্রীবাহী বাস উল্টে ১৬ জন এবং রংপুরে বাস ও ট্রাক সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন। এর সিরাজগঞ্জ, নাটোর ও গোপালগঞ্জে দুজন করে নিহত হয়েছেন। আর চট্টগ্রামে তিনজন, ঢাকার অদূরে সাভার আমিনবাজারে চারজন।

এক রাতে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৫ জনের মৃত্যু, ভাবা যায়! ৩৫ জনের মৃত্যু মানে ৩৫টি পরিবারে শোকের মাতম। ৩৫টি পরিবারের উপার্জনক্ষণ ব্যক্তিকে হারানো। পরিবারের উপর্জনক্ষণ ব্যক্তি হারানো মানে পরিবারটি পথে বসা। এভাবে সড়ক দুর্ঘটনায় উপার্জনক্ষণ ব্যক্তিরা মারা পড়ায় অসংখ্য পরিবারে দুর্যোগ নেমে আসে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্যমতে, ২০১৫ সালে সারা দেশে ৬ হাজার ৫৮১টি ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ৮ হাজার ৬৪২ জন নিহত হন; আহত হন ২১ হাজার ৮৫৫ জন। গত বছর ৩১ ডিসেম্বর নিরাপদ সড়ক চাই হিসাব দেখিয়েছিল, ২০১৫ সালে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ হাজার ৩ জন নিহত হয়। এ সময় যাত্রী, চালক ও পরিবহন শ্রমিক মিলে ৩০ হাজার ৪৯৭ জন সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়।

প্রায় প্রতি বছর যদি হাজার হাজার মানুষ দুর্ঘটনায় মারা যায়, কত পরিবার অভিভাবক হারা হয়। এভাবে অভিভাবক হারা হতে হতে পরিবারগুলোর পথে বসার উপক্রম হয়। দুর্ঘটনায় যারা আহত হয়, তারা বেঁচে থেকেও মৃত প্রায়। হাত-পা হারিয়ে অধিকাংশই পঙ্গুত্ব বরণ করে। পঙ্গু হওয়ার পরিবারগুলোর পরিণতি আরো কঠিন হয়। উপার্জনক্ষণ ব্যক্তি পঙ্গু হওয়ায় আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি অতিরিক্ত চাপ বাড়ে চিকিৎসা খরচ জোগাতে।

ইন্স্যুরেন্স থাকলে সড়ক দুর্ঘটনার পর গাড়ির মালিক ক্ষতিপূরণ পান। কিন্তু যারা মারা যায়, তাদের জন্য ক্ষতিপূরণ তো দূরের কথা, লাশটি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাও থাকে না। যৌক্তিক দাবি উঠার পরও সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতদের জন্য ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। অথচ অগ্রাধিকার ‍ভিত্তিতে এটা হওয়া দরকার।

সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ চালকের অসতর্কতা। সড়কের বেহালদশা। মদ্যপ ও মোবাইল ফোনে কথা বলা অবস্থায় গাড়ি চালানো। প্রতিযোগিতা করে গাড়ি চালানো, অনভিজ্ঞ ও অদক্ষ চালক দ্বারা গাড়ি চালানো।সহ ইত্যাদি। সড়কে চলমান মৃত্যুর মিছিল রোধ করতে হলে এসব সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ গ্রহণ সময়ের দাবি। এতে সড়কে অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর ঘটনা কমবে বলে অভিজ্ঞ মহলের ধারণা।

লেখক : বার্তা সম্পাদক- পিএনএস

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন