বিমানবহর থেকে বিদায় নিচ্ছে ফ্লাই গ্লোবালের লিজ বোয়িং

  17-10-2018 09:35AM


পিএনএস ডেস্ক: বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দেশী-বিদেশী যাত্রীদের ভুগিয়ে অবশেষে বিদায় নিতে যাচ্ছে মালয়েশিয়ান ‘ফ্লাই গ্লোবাল’ কোম্পানির তৃতীয় লিজ উড়োজাহাজ বোয়িং-৭৭৭-৩০০।

এ দিকে বিমানের নিজস্ব বহরে যোগ হওয়া চতুর্থ প্রজন্মের অত্যাধুনিক ড্রিমলাইনার (বোয়িং-৭৮৭) আকাশবীণা মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে ফ্লাইট চলাচলের পরিবর্তে গতকাল মঙ্গলবার থেকে মধ্যপ্রাচ্যের নতুন রুটে চলাচল শুরু করেছে।

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, বিমানবহরে এয়ারক্র্যাফট স্বল্পতার কারণে মালয়েশিয়ান ফ্লাই গ্লোবাল কোম্পানি থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ ৪টি বোয়িং-৭৭৭ এয়ারক্র্যাফট ওয়েট লিজে (উড়োজাহাজ, পাইলট ক্যাবিন ক্রুসহ) এনেছিল। এসব এয়ারক্র্যাফট দিয়ে কুয়েত, কাতার, মাস্কাট, আবুধাবি ছাড়াও মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুর রুটে নিয়মিত ফ্লাইট চলাচল করেছে। এ সময়ের মধ্যে ওয়েট লিজে আনা এসব উড়োজাহাজে ওঠে যাত্রীরা প্রতিনিয়ত বিমানবন্দরে ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। একপর্যায়ে ৪টি এয়ারক্র্যাফটের মধ্যে দু’টি আগেই বহর থেকে বিদায় নেয়। অন্য দু’টি (নাইনএম-এফএসএল ও নাইনএম-এফএসএম বোয়িং-৭৭৭) গতকাল পর্যন্ত বিমানের বহরেই রয়েছে। তবে আজ-কালের মধ্যে একটি চলে যাওয়ার কথা রয়েছে।

গত রাতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জেনারেল ম্যানেজার (জনসংযোগ) ও মুখপাত্র শাকিল মেরাজ বলেন, আমরা ড্রিমলাইনার-৭৮৭ দিয়ে এত দিন মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর রুট পরিচালনা করেছি। উদ্দেশ্য ছিল বিদেশী পাইলটদের তত্ত্বাবধানে আমাদের নিজস্ব পাইলট তৈরি করা। সেটি হয়ে গেছে। তাই এসব রুট থেকে (শর্ট দূরত্ব) এখন সাড়ে ৫ ঘণ্টার দূরত্বের যাত্রাপথ কুয়েত ও কাতারের রাজধানী দোহা রুটে ড্রিমলাইনার চলাচল করবে মঙ্গলবার থেকে। মালয়েশিয়ান ‘ফ্লাই গ্লোবালের’ লিজ বোয়িংয়ের চুক্তি শেষ হওয়া প্রসঙ্গে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ইতোমধ্যে দু’টি এয়ারক্র্যাফট চলে গেছে। আজ আরো একটি চলে যাবে। বাকি যে বোয়িং থাকবে সেটি যাবে নভেম্বরের ১৫ তারিখে।

গতকাল বলাকা ভবনের একটি সূত্রে জানা গেছে, চুক্তি মোতাবেক বহরে থাকা ফ্লাই গ্লোবাল কোম্পানির বোয়িং দু’টির একটি সোমবার আবুধাবি থেকে শেষ ফ্লাইট করে বিমানবন্দরে অবস্থান করছে। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় মঙ্গলবার (গতকাল) বহর থেকে বিদায় নেবে। অপরটির চুক্তি শেষ হয়ে যাবে ১৫ নভেম্বর।

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এয়ারপোর্ট সার্ভিস শাখার একজন কর্মকর্তা গতকাল মঙ্গলবার এ প্রতিবেদককে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ফ্লাই গ্লোবাল কোম্পানির লিজ বিমানের ফ্লাইট শিডিউল নিয়ে আমাদের অনেক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছে। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, যাত্রীরা বিমানে উঠে বসে আছেন। গন্তব্যের উদ্দেশ্য উড়াল দেবে। ওই সময় পাইলট ‘ক্রু রেস্ট’ এর কথা বলে এয়ারক্র্যাফট থেকে নেমে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। তিনি বলেন, ওই সময় যদি ক্রু রেস্টের সময়ই হয়ে থাকে তাহলে কেন যাত্রীদের শিডিউল নির্ধারণের সময় দেয়া হলো? এমন ঘটনা শুধু ঢাকার বিমানবন্দরে নয়, কুয়েত কাতারসহ যেসব দেশে যাত্রী নিয়ে যেত ওই সব এয়ারপোর্টেও প্রায় ৪-১০ ঘণ্টাও শিডিউল বিপর্যয়ের ঘটনাও ঘটেছে।

তার মতে, ফ্লাই গ্লোবাল কোম্পানির লিজ এয়ারক্র্যাফটের কারণে বিমানের যেমন ইমেজ ক্ষুণœ হয়েছে তেমনি যাত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের ভোগান্তিও অনেক হয়েছে। মোট কথা এ এয়ারক্র্যাফট বিমানের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল? অনেক প্রবাসী যথাসময়ে যাত্রা করতে না পারার কারণে ভিসা বাতিলেরও অভিযোগ আছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওয়েট লিজের নিয়ম হচ্ছে লিজদাতা কোম্পানি এয়ারক্র্যাফট দেয়ার সাথে পাইলট, কো-পাইলট ও ক্যাবিন ক্রু দেবে। বিমান কর্তৃপক্ষ শুধু ফ্লাইট পরিচালনা করবে।

এ বিষয়ে গতকাল ফ্লাই গ্লোবাল কোম্পানির ঢাকা এজেন্ট অফিসের সাথে যোগাযোগ করার পরও বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। এ দিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে গত মাসে যুক্ত হওয়া চতুর্থ প্রজন্মের উড়োজাহাজ ৭৮৭ ড্রিমলাইনারের (আকাশবীণা) রুট পরিবর্তন হয়েছে। ৫ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন হওয়ার পর থেকেই এই উড়োজাহাজ দিয়ে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর ও সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিয়মিত যাতায়াত করেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত পৌনে ৮টায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ২৭১ সিটের ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটি কুয়েতের উদ্দেশ ঢাকা ত্যাগ করে। অপর দিকে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর রুটে বিমানের নিজস্ব বোয়িং-৭৩৭ দিয়ে ফ্লাইট পরিচালিত হবে। সূত্র: নয়া দিগন্ত

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন