বসন্ত বন্দনা ভালোবাসার দিন

  14-02-2019 10:46AM

পিএনএস ডেস্ক : বসন্তের দ্বিতীয় দিনে ফাগুনের আগুন রঙ নিয়ে হাজির ভালোবাসার দিন। আজ বিশ্বজুড়ে উদ্‌যাপিত হচ্ছে ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’ বা ‘ভালোবাসা দিবস’। প্রেমিক-প্রেমিকা, বন্ধু-বান্ধব, স্বামী-স্ত্রী, মা-সন্তান, ছাত্র-শিক্ষকসহ বিভিন্ন বন্ধনে আবদ্ধ মানুষেরা এই দিনে একে অন্যকে তাদের ভালোবাসা জানায়

ভালোবাসা মানে সুখ, ভালোবাসা মানে দুঃখ, ভালোবাসা মানে আশা, ভালোবাসা মানে আশাভঙ্গ! প্রেম ও বিরহ নিয়েই ভালোবাসা বিরাজ করে মানুষের মনে। এই দিনে বিশ্বের সঙ্গে মিল রেখে বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীরাও ভালোবাসার লাল রং আর লাল গোলাপ নিয়ে দিনটি উদযাপন করছে।

এদিন প্রেমিক যুগল যেমন পরস্পরের সান্নিধ্যে কাটায়, তেমনি তরুণ-তরুণীরা একে অপরকে ভালোবাসার কথাও জানায়। বাংলাদেশে এই দিনটি উদযাপন শুরু হয় নব্বইয়ের দশক থেকে। ১৯৯৩ সালের দিকে আমাদের দেশে ভালোবাসা দিবসের আবির্ভাব ঘটে। সাংবাদিক শফিক রেহমানের হাত ধরেই দেশে ভালোবাসা দিবসের চর্চা শুরু হয়। এ নিয়ে তখন সমালোচনা হলেও পরে তা স্বাভাবিক দিবস হিসেবে গ্রহণ করে নতুন প্রজন্ম।

স্নেহ, প্রীতি-বন্ধন, প্রেম আর কৃতজ্ঞতা-শ্রদ্ধায় গড়া আমাদের এ নিত্য। এগুলোকে যদি একশব্দে বাঁধি, তাকেই বলব ‘ভালোবাসা’। পিতামাতার প্রতি সন্তানের, সন্তানের প্রতি পিতামাতার, ভাইবোনের পারস্পরিক, স্রষ্টার প্রতি সৃষ্টির কিংবা সৃষ্টির প্রতি স্রষ্টার অথবা সবচেয়ে বেশি প্রচলিত প্রিয়-প্রিয়ার এ যে হরেক রকমের সম্পর্ক সেটাই তো ভালোবাসা! কিন্তু ভালোবাসার জন্য কি বিশেষ কোনো দিনের দরকার! তারপরও পৃথিবীর তাবৎ প্রেমিক-প্রেমিকারা একটি দিন পালন করে আসছে।

তবে ভালোবাসার ধরণ রীতিমতো পাল্টে যাচ্ছে! ভালোবাসার রঙ, ঢং, রূপ, সৌন্দর্য, গন্ধ, অনুভূতি হারিয়ে যাচ্ছে অতল গভীরে। সব কিছুতেই এখন ভার্চ্যুয়াল ছোঁয়া লেগেছে। যার ফলে ভালোবাসা মতাময় শব্দটিকেও আধুনিক প্রযুক্তির ভার্চ্যুয়াল মহাসাগরে ফেলে দিচ্ছে। তবে খুব বেশিদিন হয়নি এমন পরিবর্তনের। এইতো কিছুদিন আগে, ভালোবাসাটা ছিল- তরুণ তরুণীদের কাজের ফাঁকে, টিফিনের ফাঁকে ভালোবাসার মানুষটিকে একনজর দেখে নেয়া অথবা সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে পুকুরপাড়ে বসে কিছুসময় গল্প করা। আবার প্রেমিকার বাড়ির পাশ দিয়ে হেটে যাওয়া। কারণ ভালোবাসার মানুষটির বসত ঘরখানা দেখলেই যেন হয়ে যেত প্রিয় মানুষটির সাক্ষাতের অনুভূতি। তারপর উড়ো চিঠি, বেনামি চিঠি কত কি!



প্রকৃত ভালোবাসা হল- একটি পবিত্র বন্ধন। থাকবে না কোনো শর্ত। থাকবে না কোনো অহংকার। থাকবে না কোনো পিছুটান। ভালোবাসার মূল্য কিংবা প্রতিশ্রুতি রক্ষার দায়িত্ব নেয়ার মনোভাব থাকবে সব কিছুর উপরে। ভালোবাসাকে ভালোবেসে লালন করতে হবে। তবেই কেবল ভালোবাসার সম্পর্কগুলো ঠিকে থাকবে চিরকাল। তাই প্রিয় মানুষটির ভালোবাসার অনুভূতি প্রকাশ করার কোনো দিনক্ষণ অথবা নির্দিষ্ট সময় বেছে নয় বরং ভালোবাসা হবে প্রতিটি নিঃশ্বাসে, সেকেন্ডে, প্রত্যেক ভোরে শিশির ভেজা দেখতে দেখতে। দুপুর বেলার রৌদ্রোজ্জ্বল মাঝে, সন্ধা বেলার চা কাপ হাতে নিয়ে। জ্যোৎস্নার রাতে চাঁদ দেখা আর গল্প করার মাঝে।

পলাশ শিমুল রাঙা, বৃক্ষরাজীর নতুন কুঁড়ি আর বইতে থাকা নির্মল হাওয়ার পরশ যেন সবার মাঝে একটু বেশি প্রেম জাগায়। ফাল্গুণের ফুলের সুবাসে আর নির্মল হাওয়ায় ভালোবাসার দিবসের দিনটি আরো বর্নিল হয়ে উঠুক। ভালোবাসা দিবসে ভালবাসার চিরচেনা রূপে ফিরে আসুক। সুখ, শান্তি স্পর্শ করুক প্রতিটি ভালবাসার সম্পর্কে।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন