৫৪তম বিশ্ব ইজতেমা আখেরি মোনাজাতে শেষ হলো

  19-02-2019 02:13PM


পিএনএস ডেস্ক: আত্মশুদ্ধি, নিজ নিজ গুনাহ মাফ, সব বালা-মুসিবত থেকে হেফাজত ও রহমত প্রার্থনায় আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি লাভের আশায় লাখো মুসল্লির আকুতিতে আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার সাদ অনুসারী বিশ্ব ইজতেমায় আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন দিল্লির নিজামউদ্দিন মারকাজের মাওলানা শামীম। বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে আখেরি মোনাজাত শুরু হয়। চলে দীর্ঘ ১৭ মিনিট।

আখেরি মোনাজাতে দেশের কল্যাণ, মুসলিম উম্মাহর সুদৃঢ় ঐক্য, আখেরাত ও দুনিয়ার শান্তি কামনা করা হয়।

এ সময় দুই হাত তুলে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে ফরিয়াদ জানায় লাখ লাখ মুসল্লি। তারা আল্লাহ কাছে আকুতি-মিনতি করে চোঁখের পানিতে বুক ভাসান ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।

আমিন, আল্লাহুম্মা আমিন ধ্বনিতে মধ্যাহ্নের আকাশ-বাতাস মুখরিত করে মহামহিম ও দয়াময় আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি লাভের আশায় লাখ লাখ মুসল্লি আকুতি জানান।

মোনাজাতে অংশ নিতে মঙ্গলবার ভোর হতেই চারদিক থেকে লাখ লাখ মুসল্লি যানবাহন না পেয়ে পায়ে হেঁটেই ইজতেমা ময়দানস্থলে পৌঁছান।

আখেরি মোনাজাতের আগেই ইজতেমা ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। পরে মুসল্লিরা ময়দানের আশপাশের অলিগলি, রাস্তা, পার্শ্ববর্তী বাসাবাড়ি, কলকারখানা ছাদে, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক, টঙ্গী-ঘোড়াশাল ও কামারপাড়া সড়কে অবস্থান নিয়ে আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন।

এ ছাড়া তুরাগ নদে নৌকায় বসে মুসল্লিরা বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন। বিভিন্ন বয়সের বিভিন্ন পেশার মানুষ ভিড় ঠেলে আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন।

ধর্মপ্রাণ লাখো মুসল্লির সঙ্গে আখেরি মোনাজাতে শরিক হন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, জিএমপি কমিশনার ওয়াইএম বেলালুর রহমান, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর প্রমুখ।

শেষ দিনে বয়ানকারী: মঙ্গলবার বাদ ফজর উর্দুতে বয়ান করেন দিল্লির হাফেজ ইকবাল নায়ার। পরে বাংলায় তরজমা করেন বাংলাদেশের মাওলানা মুফতি ওসামা বিন ওয়াসিফ।

সকাল ১০টার দিকে উর্দু ভাষায় হেদায়েতি বয়ান করেন দিল্লির মাওলানা শামীম এবং বাংলায় তা তরজমা করেন মাওলানা আশরাফ আলী।

পরে দিল্লির মাওলানা শামীম হেদায়েতির কিছু কথা বলে আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন।

এবারের বিশ্ব ইজতেমায় বিভিন্ন দেশ ছাড়াও ভারতের নিজামউদ্দিন মারকাজের শীর্ষ মুরব্বি তাবলিগ জামাতের বিশ্ব আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর পক্ষে নেতৃত্ব দিতে ৩২ সদস্যের একটি দল টঙ্গীর ইজতেমায় যোগ দেন। এতে জিম্মাদারের নেতৃত্বে দেন দিল্লির মাওলানা শামীম।

আখেরি মোনাজাতে নারীদের অংশগ্রহণ: তুরাগতীরে বিশ্ব ইজতেমায় আখেরি মোনাজাতে শত শত নারী অংশ নিয়েছেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা শত শত নারী ইজতেমা ময়দানের আশপাশ, কলকারখানা ও বাসাবাড়ির ছাদসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন।

বিদেশি মেহমান: সাদপন্থী মাওলানা মো. আশরাফ আলী জানান, ভারত, পাকিস্তান, সৌদি আরব, কাতার, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা, ইন্দোনেশিয়া, চীনসহ প্রায় ৩৬ দেশের তাবলিগ জামাতের সহস্রাধিক বিদেশি মেহমান এবারের ইজতেমায় অংশগ্রহণ করেন।

এর আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বাদ ফজর আমবয়ানে মধ্য দিয়ে শুরু হয় একটানা পাঁচ দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমা। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি শনিবার আখেরি মোনাজাতসহ গত দুদিন জোবায়ের অনুসারীরা বিশ্ব ইজতেমা পরিচালনা করেন।

পরে ১৭ ফেব্রুয়ারি রবিবার থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার আখেরি মোনাজাতসহ ইজতেমা পরিচালনা করেন সাদ অনুসারীরা।

আখেরি মোনাজাতের পর মাইকে জোবায়ের অনুসারীরা ২০২০ সালের ইজতেমার তারিখ ঘোষণা করেন। সে অনুযায়ী তাদের আগামী বিশ্ব ইজতেমার প্রথম দফা ১০, ১১ ও ১২ জানুয়ারি এবং দ্বিতীয় দফা অনুষ্ঠিত হবে ১৭, ১৮ ও ১৯ জানুয়ারি।

তবে সাদ অনুসারীরা তাদের আগামী বিশ্ব ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ করেননি। কেন্দ্রীয় শূরা সদস্যদের সঙ্গে মাশোয়ারা করে মাওলানা সাদ ওই তারিখ নির্ধারণ করা হবে বলে এ পক্ষের মুরব্বি মো. আশরাফ আলী জানান।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন