চকবাজারে ভয়াবহ আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি; চেষ্টায় ৩৭ ইউনিট

  21-02-2019 02:50AM

পিএনএস ডেস্ক: রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পেছনের ভবনে লাগা ভয়াবহ আগুন এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট কাজ করছে। এ ঘটনায় বহু মানুষ আহত হয়েছেন। দগ্ধও অনেকে। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

বুধবার রাত পৌনে ১১ টার দিকে চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পেছনের একটি ভবন থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে স্থানীয়রা জানান। পরে তা পাশের ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। সর্বশেষ রাত আড়াইটা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের উপ-পরিচালক দিলিপ কুমার ঘোষ বলেন, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভাতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আগুন এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কেও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

তবে স্থানীয়রা কেউ কেউ বলছেন, প্রাইভেট কারের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে, আবার কেউ বলছেন, ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরণে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত। হোটেলের সিলিন্ডার থেকে আগুনের সূত্রপাত বলেও কেউ কেউ জানান।

তবে দিলিপ কুমার ঘোষ বলেন, আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনার পর এ বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত করে জানা যাবে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত জাগো নিউজের প্রতিনিধি জানান, রাত পৌনে ২টার দিকেও আগুন লাগা ভবন থেকে ছোট ছোট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে আগুনের ফুলকিও দেখা যায়। পানির স্বল্পতার কারণে স্থানীয় মসজিদ এবং পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারের পুকুর থেকে পানি সংগ্রহ করা হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় আবদুল মজিদ জানান, যে ভবনে প্রথম আগুন লেগেছে, তার নিচতলায় একটি দোকান রয়েছে, দোতলায় রয়েছে বিভিন্ন প্রসাধন-প্লাস্টিক সামগ্রীর গুদাম। উপরের দুটি তলায় রয়েছে বাসা।
আগুন লাগার পর ভবনের সামনে থাকা বিদ্যুতের ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরণ ঘটে; ওই সময় রাস্তায় থাকা কয়েকটি গাড়িতেও আগুন ধরে যায়। সেগুলোর গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের খবরও জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আগুন লাগার পর ভবন থেকে দ্রুত নামতে গিয়ে জখম হন অনেকে। লাফিয়ে নামতে গিয়ে হাত-পাও ভাঙেন কেউ কেউ। আহতদের স্থানীয় হাসপাতাল এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) ও স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (মিটফোর্ড) ভর্তি করা হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে কেউ নিহত হয়েছেন কিনা, সে বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

ঢামেকের ক্যাজুয়ালটি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. আলাউদ্দিন বলেন, ঢামেকের বার্ন ইউনিটে ১৫ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এছাড়া ৩৭ জনকে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

মিটফোর্ড হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, দুজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় এখানে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন- আব্দুল মান্নান (৬০) ও হেলাল উদ্দিন (১৮)।

ঢামেকে ভর্তি হওয়াদের মধ্যে আলামিন (২৫), রিমন (২৮), সিয়াম (২৩), রেজাউল (২১), বাবুল (২৮), শহিদ (৫২), শহিদুল্লাহ (৫০), করিম (৫০), শামীমুর রহমান (৪২), সাইফুল (৩৫), সালাউদ্দিন (২৬), জাকির হোসেন (৫০), মাহমুদ (৫০), লামিম (১২), আনোয়ার (৫৫), সালাউদ্দিন (৩৫), পীর মোহাম্মদ (৪৭), কাউছার (৪৫), সোহেল (৩৫), পলাশ (৩৫), জাহাঙ্গীর (৩৫), সালাম (৩৫), রবিউল (২৭), মন্জুরুল আলম (৪৫), জিয়াউদ্দিনের (২৪) নাম জানা গেছে।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন