পাট-গার্মেন্টের পর এবার টার্গেট জীবন ও সম্পদ !

  22-04-2019 05:12PM

পিএনএস (মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান) : আগুন আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। আগে আগুন বেশি লাগত শীতকালে, এখন শীত ছাড়িয়ে গ্রিষ্মেও আগুন আতঙ্ক জনমনে ভীতি সৃষ্টি করছে। জীবন ও সম্পদহানি ঘটে চলেছে। জনমনে শুধু আতঙ্ক নয়, সামনে চলে আসছে নানা রকম প্রশ্ন। অনেকে মনে করছেন আগুনের পেছনে কোনো রহস্য লুকিয়ে আছে।

গুলশানের আগুনের রেশ না কাটতেই চলতি মাসেই রাজধানীর খিলগাঁও বাজারে আগুন লাগার পর গত সপ্তাহে মালিবাগ কাঁচাবাজারে আগুন লাগে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা দিয়ে যাচ্ছিলাম। পাশ দিয়ে দুজন লোক কথা বলছিলেন আর হাঁট ছিলেন। তাদের কথায় এটা স্পষ্ট যে, এখানে আগুনটা নাকি লাগানো হয়েছে!

দুজনই একবাক্যে বলছিলৈন, আগুন দেওয়া লোকদের পেলে তারা দুপায়ে ধরে ছিঁড়ে ফেলবেন। রাগে-ক্ষোভে তারা এসব বলাবলি করছিল। কথায় বোঝা গেল তারা ক্ষতিগ্রস্ত। অন্যথায় তাদের এতটা উত্তেজনা ও ক্ষোভ প্রকাশ পেত না। মালিবাগ কাঁচাবাজারে আগুন লাগার পর বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত ছবিতে অবলা প্রাণি ছাগল-ভেড়ার পোড়া ক্ষতবিক্ষত দৃশ্য অবলোকন করে চোখের পানি রাখা কষ্ট হয় বৈকি।

এক ও অভিন্ন অবস্থা শুধু নয়, আরো ভয়াবহ আতঙ্কজনক অবস্থা আমরা দেখেছি রাজধানীর নিমতলী, চকবাজার ও গুলশানের এফআর টাওয়ারে।মানুষের বাঁচার আকুতি-আহাজারি আর চোখের আসনে হৃদয়বিদারক মৃত্যু। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বাঁচানো যায়নি এ হতভাগ্যদের অনেককে। আধুনিকতার এ যুগে দুঃখজনক এই অপরাগতা থেকে শিক্ষা নিয়ে দ্রুত প্রস্তুতিগ্রহণ সময়ের দাবি।


ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, স্বাধীনতার পর পর আমাদের স্বর্ণসূত্র হিসেবে পরিচিত পাটের গুদামে একের পর এক আগুন লাগে। এভাবে বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের পথে বাধা সৃষ্টি করা হয়। কালক্রমে এ দুর্যোগ নেমে আসে গার্মেন্ট খাতে। রহস্যজনক আগুন জীবন ও সম্পদের যারপরনাই ক্ষতি সাধন করে। গত বছর আর এবার শুরু হয়েছে অন্যত্র আগুনের দ্বারা জীবন ও সম্পদহানির দুঃখজনক ঘটনা।

কার মনে কী আছে আর কে কী করে বলা মুশকিল। তবে কোনো মানুষ জেনে-বুঝে এভাবে আগুন লাগাতে পারে, এটা বিশ্বাস করতে পারি না। তবে আধিকাংশ বড় বড় আগুনের পেছনে বিদ্যুতের শর্টসাকিটের কথা বলা হচ্ছে। তার পরও আশঙ্কা থেকে যায় অন্যগুলোর ক্ষেত্রে।কারণ কথায় আছে, পান খাইয়া গাল পোড়ালে, দধি দেখলেও ভয় পাওয়া যায়।

স্বাধীনতার পর পাট খাত ও গার্মেন্ট নিয়ে যারা আমাদের দেশের অর্জনের পথে নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিল, দুটি খাতে আগুনের জন্য অপরাধ বিশেষজ্ঞদের আঙুল সেদিকেই উঁচিয়ে। কিন্তু চোর না শোনে ধর্মের কাহিনীর মতো তারা কিন্তু অপকর্ম থেকে বিন্দুমাত্র দূরে সরেনি; বরং খেলারাম অবাধে লেখে যাচ্ছে। আর কুফল ভোগ করছি আমরা।

আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, আমাদের অর্থাৎ বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিকে কারা শ্যেনদৃষ্টিতে দেখে, কারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতীক সেনা বাহিনী থাকুক, এটা একসময় চায় না- কারা নানাভাবে আমাদের বশীকরণ করতে চায়- সেসব বিষয় আমাদের দণ্ডমুণ্ডের কর্তাব্যক্তিদের ভেবে দেখা উচিত। পাশাপাশি আগুনে মূল্যবান জীবন ও সম্পদহানি রোধে ভবন নির্মাণ ট্রুটি প্রতিরোধ ও ফায়ার সার্ভিসকে সর্বাধুনিক যন্ত্রপাতিতে যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার উদ্যোগ দ্রুত গ্রহণ করা জরুরি বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল।


প্রতিবেদক : বিশেষ প্রতিনিধি- পিএনএস

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন