​‘আবরারকে এক গ্লাস পানিও দেয়নি, হাসপাতালেও নিতে দেয়নি’

  16-10-2019 10:24PM

পিএনএস ডেস্ক : ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে স্ট্যাটাস দেয়ায় আবরার ফাহাদতে রুমে নেন ছাত্রলীগ নেতারা। তারা রুমে নিয়েই পেটাতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে আবরার ফাহাদ অত্যন্ত দুর্বল হয়ে গেলে ছাত্রলীগ নেতাদের কাছে একটি পানির আবদার করেন। কিন্তু তারা তাকে পানি দেয়নি। এমনটি আবরারের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলেও তাকে হাসপাতালে নিতে বাধা দেয়া হয়।

বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে আদালতে রিমান্ড শুনানিকালে এসব তথ্য দেন এজাহারভুক্ত আসামি ছাত্রলীগ নেতা এএসএম নাজমুস সাদাত।

শুনানিতে সাদাত জানান, ‘আমি আবরারকে ডেকে নিয়ে আসি। কয়েকজন বড়ভাই আমাদের ডেকে আনতে বলেন। আবরার পানি চেয়েছিল। কিন্তু ওরা (ছাত্রলীগের নেতাকর্মী) তাকে পানি দেয়নি। তাকে হাসপাতালেও নিয়ে যেতে দেয়া হয়নি।’

এদিন ভারতে পালানোর সময় গ্রেফতার সাদাতকে আদালতে হাজির করা হয়। ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে সাদাতের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মহানগর হাকিম মোর্শেদ আল মামুন ভূঁইয়ার আদালত।

বিকাল ৩টা ১৫ মিনিটের দিকে এজলাসে বিচারক এলে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। শুরুতেই রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হেমায়েদ উদ্দিন খান হিরণ আসামির রিমান্ড চেয়ে শুনানি করেন।

শুনানিতে তিনি বলেন, এ মামলায় ছয় আসামি আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। ওই ছয় জনই এ আসামির নাম বলেছে। আসামিরা আবরারকে মুখে কাপড় দিয়ে মেরেছে। পানি পর্যন্ত খেতে দেয়নি। সঠিক সময়ে ডাক্তারও দেখায়নি। এমনকি পুলিশও ঢুকতে দেয়নি আসামিরা। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামির সর্বোচ্চ রিমান্ড মঞ্জুর করা হোক।

আদালতে আসামিপক্ষের কোনো আইনজীবী না থাকায় বিচারক সাদাতের কাছে তার কিছু বলার আছে কিনা তা জানতে চান। জবাবে সাদাত আদালতকে বলেন, ‘আমি আবরারকে মারিনি। আমি বড়ভাইদের কথায় আবরারকে তার রুম থেকে ডেকে নিয়ে আসি।’

এ পর্যায়ে বিচারক আসামির কাছে জানতে চান, ‘বড়ভাই’ কারা? জবাবে সাদাত বলেন, অনিক, সকাল, মুজাহিদ, রবিন ও মনির। ওরাই আবরারকে মেরেছে। আমি রাত সাড়ে ১২টার দিকে সেখান থেকে চলে আসি। এরপর কী হয়েছে তা আমি জানি না।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয় তার সমালোচনা করে ফেসুবকে স্ট্যাটাস দেন বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদ।

ওই স্ট্যাটাসের জন্য ছাত্রশিবির সন্দেহে গত ৬ অক্টোবর রাতে ফোন করে তাকে শেরেবাংলা আবাসিক হল কক্ষে ডেকে নেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে তাকে সেখানেই পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। দুই দফা পিটিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত হলে আবরারের লাশ সিঁড়ির নিচে রাখে। পরেরদিন ৭ অক্টোবর ভোর ৪টার দিকে মৃতদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।


পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন