গণমাধ্যমজুড়ে শুভঙ্করের ফাঁকি- ২

  03-11-2019 04:28PM

পিএনএস (মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান) : দীর্ঘদিন যাবৎ জনপ্রিয় অসংখ্য গণমাধ্যম বন্ধ। বন্ধ গণমাধ্যমের সাংবাদিক কর্মচারীরা বেকার।বেকারত্বের এ ঘানি টানতে টানতে তারা দিশেহারা।বন্ধ এ গণমাধ্যমগুলো কবে খুলবে, কেউ জানে না।এসব প্রতিষ্ঠানের সংবাদকর্মীদের দীর্ঘ বেকারত্ব যারপরনাই হতাশার করছে। গণমাধ্যজুড়ে চাকরি হারানোর সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়ায় পেশাদার সাংবাদিকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

সচেতন জনগোষ্ঠীমাত্র জানা, সাময়িকের কথা বলে কিছু গণমাধ্যম বন্ধ করা হয়। অর্ধযুগ পার হওয়ার পরও সাময়িকের সমাধান হয়নি। এ অবস্থায় সাময়িক শব্দটি লজ্জা পেলেও দায়িত্বশীলদের লজ্জা লাগছে বলে মনে হচ্ছে না। বরং তারা এটা উপভোগ করছেন যেন।ফলে সাময়িক এ শব্দটি সংশ্লিষ্টদের পাশাপাশি দেশের সচেতন জনগোষ্ঠীকে অবাক করছে।

আর অবাক করবেই বা না কেন, দেখে দেখে বেছে বেছে পাঠকপ্রিয় এবং দর্শকপ্রিয় গণমাধ্যমগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল।মুক্ত, স্বাধীন, অনুসন্ধানী ও দায়িত্বশীল সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী এ গণমাধ্যমগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশপ্রেমিকরা হতাশ ও ক্ষুব্ধ।দেশ ও জাতির বৃহত্তর কল্যাণে নিবেদিত ওই গণমাধ্যমগুলোর অশেষ ঋণ, তারা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে।

বন্ধ হওয়া গণমাধ্যমগুলো সরকারের সব নিয়ম মেনে সাংবাদিকদের পাওনাদি পরিশোধ করত।দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে সদা সোচ্চার ছিল। সেসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অসংখ্য সাংবাদিক বেকার হন। পরিবার পরিজন নিয়ে নিদারুণ আর্থিক কষ্টে আছেন তারা। এর বাইরে ভিন্নমতের ঘরানার ভেবে অনেক গণমাধ্যমকে সরকারি বিজ্ঞাপনের ন্যায্য হিস্যা থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে।

বন্ধ গণমাধ্যমগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- দৈনিক আমার দেশ, চ্যানেল ওয়ান, দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি, সিএসবি প্রভৃতি। সর্বশেষ ৩৫টি অনলাইন পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে সহস্রাধিক সংবাদকর্মী বেকার।অনলাইন নীতিমালার নামে নানা কালাকানুন করে মুক্ত, স্বাধীন ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার পথকে রুদ্ধ করে দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করছেন সাংবাদিক নেতারা।

বেকার সাংবাদিকদের পাশাপাশি প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো গণমাধ্যম সাংবাদিকদের চাকরিচ্যুৎ করছে।অনেক প্রতিষ্ঠান নিয়ম অনুযায়ী পাওনাদি না দিয়ে একরকম গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দিচ্ছে চাকরিচ্যুতদের। এ ক্ষেত্রে ভূমদস্যু ও কালো টাকার মালিক খ্যাত প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে। নিরুপায় হয়ে অনেকে শ্রম আদালতে যান। কাগজপত্র না থাকায় অনেকেই যেতে পারছেন না। শ্রম আদালতে এমন কয়েক শত মামলা রয়েছে।

গণমাধ্যমজুড়ে শুভঙ্করের ফাঁকি ও নৈরাজ্য এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে যে, সংবাদকর্মীদের বদ্ধমূল ধারণা জন্মেছে যে, রাত পোহালেই কর্মস্থলে গিয়ে হয়তো দেখবেন- চাকরি নেই। ফলে তারা চাকরি হারানোর নোটিশ বালিশের নিচে নিয়ে ঘুমান বলে একটি প্রবাদ ইতিমধ্যে চালু হয়ে গেছে।মালিক পক্ষের চলমান এ নৈরাজ্য থেকে পেশাদার সংবাদকর্মীদের কবে মুক্তি মিলবে, তা ভেবে কূল পাচ্ছেন না নীতিবান সাংবাদিকরা।
চলবে-

প্রতিবেদক : বিশেষ প্রতিনিধি- পিএনএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন