গণমাধ্যমজুড়ে শুভঙ্করের ফাঁকি- ৮

  14-11-2019 05:16PM

পিএনএস (মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান) : গণমাধ্যমে গণকান্না যেন থামছেই না।হরেকরকম সমস্যা লেগেই আছে। গণমাধ্যম আর সমষ্যা যেন এক অপরের পরিপূরক। দায়িত্বশীল অভিভাবকের অভাবে এটির সরব-নীরব কান্না থামছে না। বরং কার্যত কান্না স্থায়ী রূপ পাচ্ছে যেন।দক্ষ, যোগ্য, অভিজ্ঞ ও নামকরা অনেক সাংবাদিক বেকারত্বের ঘানি টানতে টানতে চরম হতাশায় দিন যাপন করছেন।

দৈনিক বর্তমানের অক্টোবর পর্যন্ত পাওনাদি দিতে রাজি হওয়ায় সাংবাদিক-কর্মচারীরা কর্মসূচি স্থগিত করেছেন। অনেকেই আশঙ্কা করছেন মালিকপক্ষ হয়তো চাপের মুখে বকেয়া দিচ্ছে, কিন্তু পাছে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে।সাংবাদিক নেতারা বলছেন, নু ছাড়।সেটা মালিকের ইচ্ছা।আর এমনটা হলে নিয়ম মেনে লে-অফের সুযোগ-সুবিধা দিয়েই তা করতে হবে।

এদিকে ইংরেজি দৈনিক এশিয়ান এজ সাংবাদিকদের পাওনা দিয়ে যারপরনাই নৈরাজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সহ-সভাপতি, জাতীয় প্রেস ক্লাবের স্থায়ী সদস্য মাইন উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি ইঁদুর-বিড়াল খেলছে যেন।৫ মাসের বকেয়া বেতন রেখে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ও নতুন পরিচয়পত্র নিয়ে তিনি দেশের বাইরে যান।

প্রবাসে থেকেও নেটের মাধ্যমে অফিসের কাজে যুক্ত থাকেন।কিন্তু দেশে আসার পর তিনি না ঘরকা না ঘাটকা!সিনিয়র সাংবাদিক মাইন উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে এশিয়ান এজ কর্তৃপক্ষ বিমাতাসূলভ আচরণ করছে। পাওনা-দেনার জন্য তিনি যতই ধরনা দিলে কর্তৃপক্ষ সুষ্ঠু জবাব না।একজন প্রবীণ সাংবাদিক ও সাংবাদিক নেতার সঙ্গে এ ধরনের আচরণ চরম ধৃষ্টার শামিল!প্রচলিত আইনের প্রতি ন্যূনতম শ্রদ্ধা থাকলে পাওনা-দেনা দিয়ে এমন কালক্ষেপণের সুযোগ থাকত না।

আইন অমান্য করে, নিয়মের ধার না ধেরে সংবাদকর্মীদের ঠকানোর এ কাজটি হালে লুপে নিয়েছেন একশ্রেণীর মালিক পক্ষ।এটা এখন রোগে পরিণত হওয়ার উপক্রম।যে রোগে গণমাধ্যমজুড়ে সরব-নীরব কান্না চলছেই। মূলত ওষুধ না পড়ায় অর্থাৎ আইন নিজস্বগতিতে না চলায় দিন যত যাচ্ছে ততই এ পেশাদার সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৎ মালিকপক্ষের বিমাতাসুলভ আচরণ সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।

দুঃখজনক হলেও সত্য, কর্মী ঠকানোর এ মিছিল বাড়ছেই।সুদক্ষ ও মিডিয়াবান্ধব দায়িত্বশীলদের অভাবে এমনটা হচ্ছে বলে মনে করছেন প্রবীণ সাংবাদিকরা।এ খাতটির কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নে বিশেষ করে একশ্রেণীর মালিককে কর্মী ঠকানোর ভয়াবহ রোগ থেকে বের করে আনতে কার্যকর ও ফলপ্রসূ দৃষ্টান্তমূলক উদ্যোগ গ্রহণ সময়ের দাবি।

এদিকে নানা ধরনের আইনের খড়গে অনেক গণমাধ্যম বন্ধ। দুবছর আগে ৩৫টি অনলাইন পোর্টল বন্ধ।গত বছরের ডিসেম্বরে বন্ধ করে দেওয়া হয় ৫৪টি। এসব গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা বেকার। পরিবার নিয়ে তাদের কষ্টের শেষ নেই।৬০ বছরের দোহাই দিয়ে প্রবীণ ও অভিজ্ঞদের কৌশলে অনেক প্রতিষ্ঠান থেকে খেদিয়ে বের করে দেওয়া হচ্ছে।এভাবে ওয়েজবোর্ডের বাইরে গিয়ে মালিকপক্ষ নিজের মতো করে সংবাদকর্মীদের অধিকার ক্ষুণ্ন করছে।

এ মহৎ পেশা এবং গণমাধ্যমকে শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা সময়ের দাবি। যে দাবি পূরণে সরকার পক্ষ, মালিক ও সাংবাদিক-কর্মচারীদের মধ্যে যৌথ সভার মাধ্যমে সবপক্ষকে এক ছাতার নিচে আনতে হবে। পেশাদার সাংবাদিকদের লালনে এবং গণমাধ্যমের ঐতিহাসিক ভূমিকাকে দেশ ও জাতির বৃহৎ স্বার্থে অম্লান রাখতে সাংবাদিকবান্ধব এ কর্মসূচিটি গ্রহণ অতীব জরুরি।গণমাধ্যমের গণকান্না থামাতে এর বিকল্প নেই।চলবে-

প্রতিবেদক : বিশেষ প্রতিনিধি- পিএনএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন