রুম্পার বন্ধুকে খুঁজছে পুলিশ

  07-12-2019 09:21PM

পিএনএস ডেস্ক : স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার বন্ধু আব্দুর রহমান সৈকতে খুঁজছে পুলিশ। স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সৈকতের প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহরে চেষ্টা করছে।

রুম্পার সঙ্গে সৈকতের প্রেমের সর্ম্পক ছিল গত কয়েক মাস। কিন্তু সম্প্রতি তাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। এ নিয়ে টানাপড়েন ছিল। মামলার তদন্ত সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। পাশাপাশি রুম্পার ভাই আশরাফুল আলমের সন্দেহ, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আর রুম্পার সাবেক প্রেমিককে নিয়ে সন্দেহের কথা বলেছেন তার এক সহপাঠী।

এ দিকে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শনিবার স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ধানমন্ডি ও সিদ্ধেশ্বরী ক্যাম্পাসে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।

রুম্পা থাকতেন মালিবাগের শান্তিবাগ বাসায়। কিন্তু তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বাসা থেকে আধা কিলোমিটার দূরে সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোডের দুই ভবনের মাঝের ফাঁকা স্থান থেকে। কে বা কারা কীভাবে তাকে সিদ্ধেশ্বরীতে নিয়ে গিয়েছিলেন, নাকি রুম্পা নিজেই গিয়েছিলেন, সেসব প্রশ্নের উত্তর না মেলায় রহস্য আরও ঘনীভূত হয়েছে। এসব বিষয় মাথায় রেখে পুলিশ মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে।

তদন্ত সূত্র জানিয়েছে, রুম্পা কীভাবে মারা গেছেন তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। তার মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে। কারও সঙ্গে দেখা করার জন্য সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় গিয়েছিলেন কিনা তা যাচাই করা হচ্ছে। ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী এলাকা থেকে স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার লাশ উদ্ধারের পর দুই দিন পেরিয়ে গেলেও উত্তর মেলেনি অনেক প্রশ্নের।

রমনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, নিশ্চিতভাবে তার মৃত্যুর কারণ এখনই বলা সম্ভব নয়। তদন্ত চলছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, ময়না তদন্তের রিপোর্ট এখনও পুলিশের হাতে পৌছেনি। রুম্পার বন্ধু-বান্ধবী ও তার কয়েকজন আত্মীয়ের সঙ্গে কথা বলে প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা চলছে।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে, সে বিষয়টি মাথায় রেখে তদন্ত চলছে। আশাকরি দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা একটা অবস্থানে পৌঁছাতে সক্ষম হবো।

অপর এক প্রশ্নের মনিরুল ইসলাম বলেন, রুম্পাকে হত্যা করা হয়েছে কি না- সে বিষয়টি মাথায় রেখেই তদন্ত চলছে। কিন্তু তার স্যান্ডেল, মোবাইল, কানের দুল, আংটি বাসায় ফেরত পাঠানোর বিষয়টি আমাদের বেশ ভাবিয়ে তুলেছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা জোনের এসি এস এম শামীম জানিয়েছেন, রুম্পা কারও সঙ্গে দেখা করার জন্য বা কেউ তাকে ডেকে এনেছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা রুম্পার মোবাইল ফোনটি পেয়েছি। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নেওয়া হচ্ছে। কেন তিনি সেদিন ওই জায়গায় এসেছিলেন তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। যে তিনটি ভবনের পাশে তার মরদেহ পাওয়া গেছে, ওই ভবনগুলোর কারও সঙ্গে রুম্পার পরিচয় ছিল কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হত্যার সম্ভাবনা মাথায় রেখেই তদন্ত চলছে। এরই মধ্যে অর্ধশত ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে।

রুম্পার মৃত্যুর ঘটনায় রমনা থানায় দায়ের করা মামলার বাদী ওই থানার এসআই আবুল খায়ের জানিয়েছেন, রুম্পার বাসা থেকে ঘটনাস্থল আধা কিলোমিটার দূরে। ঘটনাস্থলের পাশে তিনটি ভবন রয়েছে। যেকোনও একটি ভবন থেকে নিচে পড়ে তিনি মারা যেতে পারেন। ঘটনাটি সন্দেহজনক, তাই অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্তে থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দারাও কাজ করছেন।

তিনি বলেন, রুম্পার মাথা, বুকসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখমের চিহ্ন ছিল। মেরুদণ্ড ছিল ভাঙ্গা, ডান পায়ের গোড়ালিও ভেঙে গেছে। দুই হাতে জখম ছিল, নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে দেখা গেছে। এসব তথ্য সুরতহাল প্রতিবেদনেও লেখা হয়েছে।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন