সাধারণ মানুষের প্রতি পুলিশকে বিনয়ী, সহিষ্ণু ও পেশাদার হওয়ার কঠোর নির্দেশ আইজিপির

  28-03-2020 06:08AM

পিএনএস ডেস্ক: দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ জন্য ১০ দিন বন্ধ রাখা হয়েছে সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি অফিস। বন্ধ রয়েছে যানচলাচল। এই সময়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সড়কে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী, র‍্যাব-পুলিশ।

তবে গত দুইদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুলিশের সাধারণ মানুষকে পেটানোর অনেক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বের হয়েও পুলিশি হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আর এতে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে পুলিশের।

আর পুলিশের এই ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রাখতে কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতি দেয়া বার্তায় তিনি পুলিশকে ‘সাধারণ জনগণের সাথে বিনয়ী, সহিষ্ণু ও পেশাদার আচরণ বজায় রাখার নির্দেশ’ দিয়েছেন।

শুক্রবার রাতে পুলিশের ইউনিটের প্রধান, বিভাগীয় রেঞ্জের ডিআইজি, পুলিশ সুপার (এসপি), মেট্রোপলিটন এলাকার উপ-কমিশনার (ডিসি), থানার ওসিদের এই বার্তা দেন তিনি।

বার্তায় আইজিপি বলেছেন, ‘জনজীবন সচল রাখতে চিকিৎসা, ওষুধ, নিত্যপণ্য, খাদ্যদ্রব্য, বিদ্যুৎ, ব্যাংকিং ও মোবাইল ফোনসহ আবশ্যক সকল জরুরি সেবার সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তি ও যানবাহনের অবাধ চলাচল নিশ্চিত করুন। দায়িত্ব পালনকালে সাধারণ জনগণের সাথে বিনয়ী, সহিষ্ণু ও পেশাদার আচরণ বজায় রাখুন।’

কঠোর এই বার্তাটিকে ‘অধীনস্থ সকলের নিকট পৌঁছে দিয়ে এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত’ করতে বলেছেন আইজিপি।

পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) মো. সোহেল রানা বার্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বার্তাটি ঊর্ধ্বতনের কাছে পৌঁছে গেছে। তারা এই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছেন।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দিন দিন বাড়তে থাকায় বৃহস্পতিবার থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য রাস্তায় পুলিশ এবং সেনাবাহিনী কাজ করছে। বুধবার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে মাস্ক না পরা বা বাইরে বের হওয়ার জন্য পুলিশের লাঠিপেটা, কান ধরে থাকার দৃশ্য চোখে পড়েছে। সাধারণ মানুষের সাথে পুলিশের এ ধরনের আচরণ নিয়ে বিভিন্ন মহলে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

বিভিন্ন এলাকায় রিকশা থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখা যায় পুলিশকে। এছাড়াও সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকানপাট খোলা রাখার নির্দেশনা দিলেও ঢাকাসহ সারাদেশে এ ধরনের অনেক দোকানই খুলতে দেয়নি পুলিশ।

ধানমন্ডির ঝিগাতলার একটি বেকারির ম্যানেজার বলেন, আমাদের দোকানে কেক, টোস্ট বিস্কিটসহ নানা শুকনা খাবার বিক্রি হয়। এছাড়াও জনস্বার্থে আমরা কোম্পানি থেকে চাল-ডাল ইত্যাদি এনেও বিক্রি করছি। দোকানের বাইরে আমাদের একজন স্টাফ সার্বক্ষণিক দাঁড়িয়ে থাকে। সে একজন বের হয়ে যাওয়ার পর আরেকজনকে প্রবেশ করাচ্ছিল। দোকানে কোনো সমাগমের সুযোগ ছিল না। তারপরও দোকানটি বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। আমরা পুলিশকে সরকারি নির্দেশনার বিষয়ে জানালে পুলিশ সদস্যরা 'দোকান বন্ধ না করলে আমাদের গ্রেফতারের' হুমকিও দেন।

পিএনএস/হাফিজ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন