শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস আজ

  16-07-2020 03:21AM

পিএনএস ডেস্ক : আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস আজ। ওয়ান ইলেভেন পরবর্তী পরিস্থিতে ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাকে গ্রেপ্তার করে।

ওই বছর ১১ জানুয়ারি দেশে জরুরি অবস্থা জারি এবং রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়। এর পর কথিত দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের নামে তৎকালীন বিরোধী দলের নেতা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেদিন গভীর রাতে শেখ হাসিনার ধানমন্ডির বাসভবন সুধাসদন ঘিরে ফেলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার বিপুল সংখ্যক সদস্য। খুব সকালে তাকে গ্রেফতার করে সুধাসদন থেকে গাড়িতে তোলা হয়।

গ্রেপ্তার হওয়ার আগে শেখ হাসিনা দেশবাসীর উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি লেখেন। চিঠিতে তিনি বলেন, “আমাকে সরকার গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে। কোথায় জানি না। আমি আপনাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ও অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যেই সারাজীবন সংগ্রাম করেছি। জীবনে কোনও অন্যায় করিনি। তারপরও মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ও আপনারা দেশবাসীর ওপর আমার ভরসা।

আমার প্রিয় দেশবাসী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের কাছে আবেদন কখনও মনোবল হারাবেন না। অন্যায়ের প্রতিবাদ করবেন। যে যেভাবে আছেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন। মাথা নত করবেন না। সত্যের জয় হবেই। আমি আছি আপনাদের সঙ্গে, আমৃত্যু থাকব। আমার ভাগ্যে যা-ই ঘটুক না কেন আপনারা বাংলার জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যান। জয় জনগণের হবেই।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়বই। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবই।”

গ্রেপ্তারের পর বেশ কয়েকটি দুর্নীতির মামলা দেওয়া হয় এবং দীর্ঘ ১১ মাস সংসদ ভবন চত্বরে স্থাপিত বিশেষ কারাগারে বন্দি রাখা হয় বঙ্গবন্ধুকন্যাকে। পরে জরুরি অবস্থার মধ্যেই দেশজুড়ে প্রতিবাদ ও শেখ হাসিনার মুক্তির দাবিতে আন্দোলন গড়ে ওঠে। এ সময় তিনি কারাগারে অসুস্থও হয়ে পড়েন।

আন্দোলের মুখে এক পর্যায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। ২০০৮ সালের ১১ জুন ৮ সপ্তাহের জামিনে মুক্তি পান তিনি। মুক্তি পেয়েই পর দিন উন্নত চিকিৎসার উদ্দেশে যুক্তরাষ্ট্রে যান শেখ হাসিনা। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায়ই তার অস্থায়ী জামিনের মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়।

২০০৬ সালের ৬ নভেম্বর দেশে ফিরলে স্থায়ী জামিন দেওয়া হয় তাকে। পরে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে ঐতিহাসিক বিজয়ের মধ্য দিয়ে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি তার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগসহ মহাজোট সরকার গঠিত হয়। দ্বিতীয় বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা।

এ বছর বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে সৃষ্ট সঙ্কটে আওয়ামী লীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সব ধরনের জনসমাগমপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি পরিহার করা হয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবসে যথাযথভাবে স্বাস্থ্য বিধি মেনে যার যার অবস্থান থেকে বঙ্গবন্ধুর কন্যার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে পরম করুণাময়ের কাছে দোয়া ও প্রার্থনা করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে সকল বাঙালী হৃদয়ে দেশপ্রেমের বহ্নিশিখা প্রজ্বলিত করে সঙ্কট জয়ের ঐক্যবদ্ধ সুরক্ষা ব্যুহ সৃষ্টি করে জননত্রেী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকারকে সহযোগিতা করার অনুরোধও জানায় দলটি।

প্রতিবছর দিনটিকে ঘিরে নানা কর্মসূচি থাকলেও করোনাভাইরাসজনিত কারণে স্বল্প কর্মসূচি ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে দিবসটি পালন করবে ক্ষমতাসীন দলটির বিভিন্ন সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন। দিবসটি স্মরণে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ যৌথভাবে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে স্বল্প পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির এবং উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এস এ মান্নান কচিসহ স্বল্পসংখ্যক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন