যে কারণে আকস্মিক অ্যাকশনে যাচ্ছে সরকার

  21-09-2020 04:53PM

পিএনএস ডেস্ক : করোনা সংক্রমণে দেশে এত মানুষের মৃত্যুর পরও উদাসীন সাধারণ মানুষ। সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধিকে তারা একপ্রকার ‘বুড়ো আঙুল’ দেখিয়ে চলছে। সবচেয়ে বেশি লক্ষ করা যায় মাস্কবিহীন চলাফেরা করতে।

এবার মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে আকস্মিক অভিযানে নামছে সরকার। মার্কেট ও শপিংমল গুলোতে এসব আকস্মিক অভিযান পরিচালিত হবে।

সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকের ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম মাস্ক না পরা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার কথা জানান।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠক হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে বৈঠকে যুক্ত হন।

করোনা পরিস্থিতি নিয়ে মন্ত্রিসভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘অনেক দেশেই বিশেষত শীতপ্রধান দেশে দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণ হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন নভেম্বরের শেষ থেকে সেকেন্ড ওয়েভ আসে কি-না সেই প্রিপারেশন রাখতে হবে। ম্যাসিভ যেন প্রিপারেশন থাকে। মঙ্গলবার আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা আহ্বান করেছি।’

‘প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন আমাদের যেন প্রস্তুতি থাকে। প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন সেকেন্ড ওয়েভ যদি আসে অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে যদি সচেতন হই তাহলে আমাদের জন্য এটা সুবিধা হবে। পাশাপাশি উনি নির্দেশনা দিয়েছেন, অক্টোবরের শেষ বা নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ঠান্ডার প্রকোপটা বাড়তে পারে, সেক্ষেত্রে আমাদের লোকজনের নিউমোনিয়া, সর্দি, জ্বর বা অ্যাজমাটিক সমস্যা থাকে, সবাই যাতে প্রস্তুতি নেয়। এসবে আক্রান্ত হলে যেন চিকিৎসা করান। কোভিডের সেকেন্ড ওয়েভ এলে মাঠ পর্যায়ে সেটাকে কীভাবে মোকাবিলা করতে হবে সেটার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। কাল বসে বিস্তারিত কর্মসূচি নেব।’

সবার মাস্ক ব্যবহার করা দরকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সবাই মিলে ঠিকভাবে মাস্ক যদি ব্যবহার না করি তাহলে কিন্তু মুশকিল। কারণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুই তরফ থেকে যদি মাস্ক পরা থাকে তাহলে ৯৫ থেকে ৯৮ শতাংশ নিরাপদ। আর এক তরফ থেকে মাস্ক থাকলে ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ নিরাপদ। মাস্ক যদি না পরে তাহলে কিন্তু কোনো কিছুই সফল হবে না। এজন্য সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।’

‘মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। ঠান্ডা থেকে প্রোটেকশন নিতে হবে। উপসর্গ দেখা গেলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।’

খন্দকার আনোয়ার বলেন, ‘সম্প্রতি একটি কাজে এক মার্কেটে গিয়েছিলাম, আমি সেখানে বেশি লোককে মাস্ক পরতে দেখিনি। পরে আমরা নির্দেশনা দিয়েছি- আমরা ক্রস চেক করব যেকোনো দিন, সেই মার্কেটে যদি সবাইকে মাস্ক পরা না দেখি তাহলে ইউ উইল টেক অ্যাকশন।’

‘ধর্ম মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সব মসজিদে জোহর ও মাগরিবের নামাজের সময় যেন ঘোষণা দেয়া হয়, মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক, এটা রাষ্ট্রীয় কল্যাণকর নির্দেশ।’

স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে অভিযান অব্যাহত আছে। মোবাইল কোর্ট চলছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

করোনার দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হলে সরকার আগের মতো আবার শাটডাউনে যাবে কিনা- জানতে চাইলে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘যাওয়া হবে কি-না, মাত্রাটা কেমন হবে আমরা তো জানি না। আমাদের প্রস্তুতি রাখতে হবে।’

উল্লেখ্য, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৯৭৯ জনে। এছাড়া, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১ হাজার ৭০৫ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে করোনা শনাক্ত হলো মোট ৩ লাখ ৫০ হাজার ৬২১ জনের।

পিএনএস/এসআইআর


@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন