একাদশ সংসদ নির্বাচন : জনপ্রিয়তার শীর্ষে বিটু- মাঠ দখলের চেষ্টায় জাপা

  14-01-2018 02:29PM

পিএনএস, জৈষ্ঠ প্রতিবেদক : আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-২ (বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ) আসনটি এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের দখলে রয়েছে। তবে ভোটারদের কাছে নতুন মুখ হিসেবে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছেন বিটু। বিএনপি’র অবস্থান তুঙ্গে হলেও জাপায় চলছে মাঠ দখলের চেষ্ঠা। আর ভোটারদের ধারনা মতে- প্রার্থী যাচাইয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত না নিলে আওয়ামী লীগের দুর্গে হানা দিতে পারে জাতীয় পার্টি।

এই আসনটিতে এখন পর্যন্ত বর্তমান সরকার দলীয় এমপি বদরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি একেএম আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক থাকলেও জামায়াতকে নিয়ে কমিটি করায় তিনি রয়েছেন সমালোচনার কেন্দবিন্দুতে। ফলে আওয়ামী লীগের অর্জিত সুনাম নিয়ে চলছে আলোচনা ও সমালোচনা। অন্যদিকে সমাজ সেবক হিসেবে সর্বদা মানুষের পাশে থাকায় বাংলাদেশ কৃষকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বদরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক সফল চেয়ারম্যান কৃষিবিদ বিশ্বনাথ সরকার বিটু জনপ্রিতার শীর্ষে অবস্থান করছে।

বিগত দুই সময় আসনটিতে নিজেদের শক্ত হাল ধরে রাখে জাতীয় পার্টি। তবে শেষের দিকে এসে মধ্যযুগীয় কায়দায় এক নারী নির্যাতনকারীর পক্ষে ও হিন্দু সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টির মন্তব্য করায় গণমাধ্যমে খবরের শিরোনামে আসেন জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি আলহাজ্ব আনিসুল ইসলাম মন্ডল। অপরদিকে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় পর্যায় হতে তেমন নির্দেশনা না থাকায় মাঠে দেখা মিলছেনা তৃণমুল কর্মীদের।

আগামী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন পর্যন্ত যারা দৌড়-ঝাপ করছেন- বাংলাদেশ কৃষকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বদরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক সফল চেয়ারম্যান কৃষিবিদ বিশ্বনাথ সরকার বিটু, বর্তমান সাংসদ ও বদরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি একেএম আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক, বদরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বিঞ্চুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আহসানুল হক চৌধুরী টুটুল। বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ আলী সরকার ও সুপ্রিম কোর্টের এড. গোলাম রছুল বকুল। এছাড়াও জাতীয় পার্টির বদরগঞ্জ উপজেলা সভাপতি অধ্যক্ষ আসাদুজ্জামান চৌধুরী সাবলু ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রংপুর এর ইঞ্জিনিয়ার এম, এস, এইচ সাইফুল ইসলাম (শাহাদৎ) এর নাম শোনা যাচ্ছে।

এসব প্রার্থীরা নিজনিজ অবস্থান থেকে নিজ দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সখ্যজুড়ছে। তবে এ আসনে এবার নতুন মুখ আসার সম্ভাবনা বেশী থাকলেও পুরাতন মুখ (আওয়ামী সংসদ) এই আসন ছাড় দিতে নারাজ বলে দলের একাধিক নেতাকর্মী বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। স্বাধীনতা পর থেকে এই অঞ্চলের সাধারণ মানুষ উন্নয়নের স্বপ্ন দেখে আসছে। বর্তমান আওয়ামী সরকার তাদের সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রুপানতারিত করার অঙ্গিকার করায় আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ সরকারকে আবারো ক্ষমতায় দেখতে চায় তারা।

জনসাধারণের মতে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমন একজন ব্যক্তিকে সংসদ সদস্য হিসাবে নির্বাচন করা হোক যার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই দুই আসনের মানুষ নিরাপদে ও সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারবে। বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিস সুত্র জানা গেছে, এ উপজেলার ১টি পৌরসভা, ১০টি ইউনিয়ন এবং পৌরসভাবিহীন তারাগঞ্জ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের সমন্বয়ে রংপুর-২ আসন গঠিত। এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা হচ্ছে ৩লক্ষ ৩৩হাজার ৪৫ভোট। এর মধ্যে বদরগঞ্জ উপজেলার পুরুষ ভোটার ১লাখ ১হাজার ২৬৯ এবং মহিলা ভোটার ১লাখ ১হাজার ৯৫৯। তারাগঞ্জ উপজেলার পুরুষ ভোটার ৪৯হাজার ৩৩৪ এবং মহিলা ভোটার ৫০হাজার ৭৮৫। এই আসনটি এক সময়ের জাতীয় পার্টির ঘাঁটি নামে খ্যাত রয়েছে। তবে বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ছাড়া অন্যান্য দলের অবস্থান তেমন শক্ত নয়। যার ফলে নৌকার উপর ভরসা করে দলীয় মনোনয়ন পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে সম্ভাব্য প্রার্থীরা। এমতাবস্থায় বাংলাদেশ কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় নেতা কৃষিবিদ বিশ্বনাথ সরকার বিটু আওয়ামী দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে সুদিন আশার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন।

এ আসন থেকে তাকে মনোনয়ন দেয়া হলে তিনি নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে আনতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। কারণ এ আসনে তার রাজনৈতিক অবস্থান কতটা শক্ত তা বিগত ২০০৯ইং সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন। ওই সময় তিনি বর্তমান সাংসদকে ১৪হাজার ৪শত ২২ভোটে পরাজিত করে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। তখন থেকে বদরগঞ্জের রাজনৈকি অঙ্গনে তার সুনাম অটুট রয়েছে। কৃষিবিদ বিশ্বনাথ সরকার বিটুর রাজনৈতিক পরিচয় হচ্ছে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের রংপুর জেলা শাখার বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, রংপুরের এই কৃতি সন্তান বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য অনুষদ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি ছিলেন এবং ২০০৯সালে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালিন সময়ে শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য রংপুর বিভাগের শ্রেষ্ঠ উপজেলা চেয়ারম্যান হিসাবে পুরস্কৃত হন। তথাপিও রংপুর-২ আসনের বর্তমান সাংসদ একেএম আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক এই আসনের ব্যাপক উন্নয়নের দাবীদার হিসাবে আবারো মনোনয়ন প্রত্যাশা করেন বলে দলীয় নেতাকর্মীরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এছাড়াও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রীর ছেলে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক চৌধুরী টুটুল তার পিতার বহুমুখী অসমাপ্ত উন্নয়নমুলক কাজ সমাপ্ত করার লক্ষ্যে এই আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। অন্যদিকে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ আলী সরকার ও এড. গোলাম রছুল বকুল দলীয় মনোনয়নের জন্য জোর তদবির চালাচ্ছেন। সেইসাথে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশা করে মাঠেঘাটে চষে বেড়াচ্ছেন অধ্যক্ষ আসাদুজ্জামান চৌধুরী সাবলু এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এম, এস, এইচ সাইফুল ইসলাম (শাহাদৎ)। তবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি আলহাজ্ব হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ যাকে দলীয় মনোনয়ন দিবেন সেই হবেন রংপুর-২ আসনের এমপি প্রার্থী।

পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন