ধৈর্যহারা ও বিশৃঙ্খল হবেন না, কর্মীদের ফখরুল

  17-02-2018 07:03PM

পিএনএস ডেস্ক : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জনগণের উত্তাল, সোচ্চার প্রতিবাদের মুখে এই সরকারকে অবশ্যই বিদায় নিতে হবে। দলের নেতা-কর্মীদের ধৈর্য ধরে সব পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।

মির্জা ফখরুল দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘কখনো ধৈর্যহারা, বিশৃঙ্খল হবেন না। কর্মসূচিগুলো শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে হবে।’

কারাবন্দী বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আজ শনিবার সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচি শুরু করে বিএনপি। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করার সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ আহ্বান জানান।

দলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি যেন সরকারের উসকানি ও নীলনকশা ব্যর্থ করে দিয়ে বিজয়ে পরিণত হয়, সেদিকে খেয়াল রাখারও আহ্বান জানান বিএনপির মহাসচিব।

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপি গতকাল শুক্রবার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে। এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ ঢাকাসহ সারা দেশে গণস্বাক্ষর অভিযান শুরু করে দলটি। কাল রোববার ঢাকাসহ সব জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান এবং আগামী সোমবার ঢাকা বাদে সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে বিএনপি। এর আগে একই দাবিতে গত সপ্তাহে তিন দিনের কর্মসূচি পালন করে বিএনপি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে সংকটময় মুহূর্তে আমরা উপস্থিত হয়েছি। আজকে এই দেশের স্বাধীনতা থাকবে কি না, সার্বভৌমত্ব থাকবে কি না, গণতন্ত্র থাকবে কি না, আমরা কেউ স্বাধীন অস্তিত্ব নিয়ে টিকে থাকতে পারব কি না, সেখানেই আজকে প্রশ্ন হচ্ছে।’

আজ নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে বেলা সাড়ে ১১টায় গণস্বাক্ষর কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দলের নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। এরপর বিএনপির নেতা-কর্মীরা ফুটপাতের ওপর দাঁড়িয়ে যান। নেতা-কর্মীদের একটু পাশে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে দাঁড়িয়ে ছিল। বিএনপির নেতা-কর্মীদের অনেকে এ সময় বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন।

গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শুরুর একপর্যায়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে দ্রুত সরে যেতে দেখা যায়। পুলিশ গ্রেপ্তার অভিযান চালাতে পারে, এই ভয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা দলীয় কার্যালয় ত্যাগ করেন বলে সূত্র জানায়।

এদিকে আগের কর্মসূচিগুলোর তুলনায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি তুলনামূলক কমে গেছে। আজকের কর্মসূচিতে মহিলা দলের সদস্যদের উপস্থিতি অন্য দিনের তুলনায় বেশি ছিল। এ ছাড়া বিএনপির সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীদের কম দেখা গেছে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্ত করার জন্য, গণতন্ত্রকে মুক্ত করার জন্য এবং মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করছে বিএনপি। খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য, আন্দোলনের অংশ হিসেবে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করা হচ্ছে। যত দিন পর্যন্ত খালেদা জিয়া কারাগার থেকে বেরিয়ে না আসছেন, তত দিন পর্যন্ত এই গণস্বাক্ষর অভিযান চলতে থাকবে। আজ শুধু এটির শুভসূচনা হলো।

ফখরুল ইসলাম বলেন, এই অবৈধ-অনৈতিক সরকার সম্পূর্ণভাবে গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। জনগণের কোনো সমর্থন তাদের সঙ্গে নেই। তারা তাই আজ গণবিচ্ছিন্ন হয়ে তাদের সেই পুরোনো যে আশা, অভিপ্রায়—একদলীয় শাসনব্যবস্থা ভিন্ন লেবাসে প্রতিষ্ঠা করার জন্য দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে কারারুদ্ধ করেছে। হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে সরকার গ্রেপ্তার করেছে।

গণস্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আজ গণস্বাক্ষর অভিযানের মাধ্যমে এই স্বৈরাচারী সরকারকে বিদায় করা হবে। খালেদা জিয়ার মুক্তি মানে এই দেশের মুক্তি, গণতন্ত্রের মুক্তি। তিনি আরও বলেন, সরকার খালেদা জিয়াকে মাইনাস করার চিন্তা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে, এ দেশের জনগণ সরকারের পরিকল্পনা সফল হতে দেবে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতারা উল্টাপাল্টা কথা বলছেন। উল্টাপাল্টা কথা বলে, উসকানি দিয়ে ছেলেপেলেদের খেপাবেন না। অনুরোধ থাকল, বিএনপি শান্তিপূর্ণ একটি দল। অশান্তি তৈরি করলে যেকোনো অশান্তির জন্য আপনারা দায়ী থাকবেন।’

আজকের গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক মিলন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, শামা ওবায়েদ, আবদুস সালাম আজাদ, শহীদুল ইসলাম বাবুল, ইশতিয়াক আজিজ, আফরোজা আব্বাস, সুলতানা আহমেদ, বেবী নাজনীন, হেলেন জেরিন খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন