`সরকারকে উৎখাত না করলে ভবিষ্যত প্রজন্ম বিএনপিকে ক্ষমা করবে না'

  14-08-2018 07:13AM

পিএনএস ডেস্ক: বর্তমান সরকারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে না পারলে ভবিষ্যত প্রজন্ম বিএনপিকে ক্ষমা করবে না বলে মনে করেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ। আর এই লক্ষ্য অর্জনেই জাতীয় ঐক্যের চেষ্টা চলছে।

সোমবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এক আলোচনায় এই মন্তব্য করেন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আইনমন্ত্রী।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনের এক বছর পূর্তিতে পরের বছর সরকার পতনের আন্দোলনে নেমে খালি হাতে ঘরে ফেরে বিএনপি। এরপর থেকে আর বড় কোনো আন্দোলনের কর্মসূচি দেয়নি দলটি। যদিও বরাবর আন্দোলনের হুমকি দিয়ে আসছেন নেতারা।

মওদুদ বলেন, ‘আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সরকারকে উৎখাত করব। তা না হলে আগামী প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না।’
‘আমরা জাতীয় ঐক্য মঞ্চ তৈরির চেষ্টা করছি। এই লক্ষ্যে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা চলছে।’

বর্তমান সরকারের প্রায় ১০ বছরের শাসনামলকে অরাজকতার চূড়ান্ত রূপ হিসেবে দেখছেন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আইনমন্ত্রী।

‘প্রায় ১০ বছর হতে চললো অরাজক সরকারের। বিনা ভোটে নির্বাচিত হওয়ায় জনগনের কাছে কোন দায়বদ্ধতা তাদের ছিল না। তার অনেকগুলো উদাহরণ রয়েছে।’

‘বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রিজার্ভ হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে উধাও হয়ে গেল। সোনা তামা হয়ে গেল, পাথর ও কয়লা গায়েব হয়ে গেল একজনও গ্রেপ্তার হল না। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের উপর হামলা হল কেউ গ্রেপ্তার হল না।’

‘এর দুটো কারণ থাকতে পারে। এক. এরা সরকারের মদদপুষ্ট মানুষ। আরেকটা হলো. দুই পক্ষের জন্য দুই আইন। নিজেদের বেলায় প্রয়োগ হবে না। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের জন্য প্রয়োগ হবে।’

‘সংলাপে বসতে বাধ্য হবে সরকার’
অনীহা দেখালেও সরকার বিএনপির সঙ্গে সংলাপে বসতে বাধ্য হবে বলেও দাবি করেন মওদুদ। বলেন, ‘শোনা যাচ্ছে বিনা শর্তে সংলাপ হতে পারে, ফোনে সংলাপ হতে পারে, অনানুষ্ঠানিক সংলাপ হতে পারে। আবার শোনা যাচ্ছে বিএনপির সঙ্গে কোন সংলাপই হবে না। তবে সরকারের পক্ষ থেকে যাই বলা হোক না কেন আর মাত্র ২-৩ মাস সময় আছে। এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে, সরকার বিএনপির সঙ্গে সংলাপে বসতে বাধ্য হবে।’

দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে আগ্রহী। আর এই নির্বাচন কীভাবে হবে, এ নিয়ে সরকারের সঙ্গে সংলাপে বসার দাবি জানাচ্ছে তারা।তবে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ২০১৩ সালে সংলাপে বসতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ফোন করার পর তিনি অপমানিত হয়েছিলেন। আর তাই এখন আর সংলাপের কোনা সুযোগ নেই।

তবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আনুষ্ঠানিক সংলাপ না হলেও টেলিফোনে কথা হতে পারে। এর বিপরীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আবার বলেছেন, সে ক্ষেত্রে ফোন করতে হবে সরকারি দলকেই। আর এই শর্তে রাজি নন কাদের।

আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপির দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানান মওদুদ। বলেন, ‘নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। সংসদ ভেঙে দিতে হবে। ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে।’

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিকের সভাপতিত্বে ও ‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সঞ্চালনায় আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তৈমুর আলম খন্দকার, আব্দুস সালাম, লেবার পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জিয়া নাগরিক ফোরামের সভাপতি মিয়া মোহাম্মাদ আনোয়ার, শাহবাগ থানা কৃষকদলের সভাপতি এম জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন