আসুন আমরা রাজপথে নামি: দুদু

  12-10-2018 03:21PM

পিএনএস ডেস্ক : নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান ও কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘আমাদেরকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে, ঘুরে দাঁড়ানো ছাড়া আপনারা যে যাই বলেন না কেন- এই ফ্যাসিবাদী শক্তিকে নামানো যাবে না। বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে মুক্ত করার জন্য আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামি।’

শুক্রবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে জিয়া পরিষদের উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি বিএনপির সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ২১ আগস্ট সাজানো মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় বাতিল ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন শয়তানও বিশ্বাস করে না মন্তব্য করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে যেতে চায়, এখনও যেতে চায়। দেশে যতো সংগ্রাম-আন্দোলন বিএনপি করছে সবই নির্বাচনকে ঘিরে। কিন্তু বর্তমান অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে- এটা মনে হয় আল্লাহু তায়ালা বিশ্বাস করে না, শয়তানও বিশ্বাস করে না। মানুষের কথা তো বাদই দিলাম, কেউ বিশ্বাস করে না।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন পুরোপুরি ভাবে ফ্যাসিবাদে কবলিত। ফ্যাসিবাদে গ্রাস করে ফেলেছে বাংলাদেশকে। যে জন্য একাত্তর সালে যুদ্ধ হয়েছিল তার ছিটেফোঁটাও বর্তমানে নেই। এই কথাটা বলাও এখন ভয়ঙ্কর, কারণ এখন ডিজিটাল আইন পাস করা হয়েছে। দেশে নির্বাচনী ব্যবস্থা নাই, রাজনীতিক সভা-সংগঠন ব্যক্তিগত কোনো কিছু করার সুযোগ নাই। ২০১৪ সালের বিনাভোটের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার মৃত্যু ঘটেছে একেবারে পুরোপুরি ভাবে মৃত্যু ঘটেছে।’

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘বর্তমানে পুলিশ যাকে যেখানে খুশি ধরে নিয়ে যেতে পারে, এটার জন্য কোনো কোর্ট-কাচারি ওয়ারেন্ট আলাদা কোনো কিছুর প্রয়োজন নেই, এমনই একটি রাষ্ট্র তৈরি করতে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের আগে ২৫ জানুয়ারি এ ঘোষণা দিয়েছিলেন। তখন জনগণ ওই ব্যবস্থা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরে এসে তারই কন্যা সেই ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।’

ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে যদি আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার চেষ্টা হয়, তাহলে বর্তমানে আদালতের মাধ্যমে জিয়া পরিবারকে ধ্বংস করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কারণ এখানেই (আলোচনাস্থল) বসে আছেন বিখ্যাত আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ তিনি মন্তব্য করেছেন আদালতে এখন কোনো ভালো কিছু আশা করা যায় না।’

দুদু অভিযোগ করে বলেন, ‘যে সুপ্রিম কোর্ট মানুষকে রক্ষা করে, সেই সুপ্রিম কোর্ট বেগম খালেদা জিয়াকে আটকে দিয়েছে। এটা আমার কাছে খুব ভয়াবহ মনে হচ্ছে। নিম্ম আদালতে তারেক রহমানকে যাবজ্জীবন দেয়া হয়েছে, যার সাথে তাঁর কোনো সম্পর্ক নাই। তারপরও তাকে যাবজ্জীবন দেয়া হয়েছে।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছাত্রলীগের ক্যাডার ছিলেন। তিনি নির্বাচন কমিশনে থাকা অবস্থায় দেশে ভালো নির্বাচন হবে এটা কেউ বিশ্বাস করবে না।’

পুলিশের আইজির সাম্প্রতিক সময়ে দেয়া বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বর্তমান পুলিশের আইজি যিনি আছেন তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করলে আমার মনে হয় ভাল হবে। কারণ নাসিম সাহেব যেভাবে কথা বলেন, হাসান মাহমুদ যেভাবে কথা বলেন, একইভাবে তিনিও কথা বলছেন। আইজি বলছেন- কোনো বিশৃঙ্খলা করা যাবে না। যেখানে আমাদের কোনো কর্মসূচি নেই, সেখানে বিশৃঙ্খলা হবে কীভাবে?’

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জিয়া পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান কবির মুরাদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল কুদ্দুস, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ঢাকা বিদ্যালয়ের অধ্যাপক এস এম হাসান তালুকদার, জিনাফের সভাপতি মিয়া মো. আনোয়ার প্রমুখ।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন