চট্টগ্রামে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে ১৪০ মামলা

  19-11-2018 10:53AM

পিএনএস ডেস্ক :চট্টগ্রাম মহানগরীর ১৫ থানায় বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে ১৪০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত এসব মামলা দায়ের করা হয়। নগরীর ১৫ থানায় দায়ের হওয়া ১৪০ মামলায় এ পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন প্রায় ২ শতাধিক নেতাকর্মী।

রবিবার (১৯ নভেম্বর) চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে নগর বিএনপির দেয়া স্মারকলিপি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

নগরীর ১৫ থানায় দায়ের হওয়া মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে পতেঙ্গা থানায় ১৬টি, বন্দর থানায় ১২টি, ইপিজেড থানায় ১৫টি, খুলশি থানায় ৯টি, পাহাড়তলী থানায় ৯টি, হালিশহর থানায় ৫টি, আকবর শাহ থানায় ৫টি, সদরঘাট থানায় ৯টি, কোতোয়ালী থানায় ১১টি, চকবাজার থানায় ৫টি, বাকলিয়া থানায় ১০টি, চান্দগাও থানায় ১৩টি, পাঁচলাইশ থানায় ৭টি, বায়েজিদ থানায় ১০টি, ডবলমুরিং থানায় ৪টি।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরও চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন থানায় পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার অব্যাহত রেখেছে বলে স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, হাইকোর্টের জামিন থাকা ব্যক্তি ও হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বের হয়ে আসার সময় জেল গেইট থেকে পুনরায় গ্রেফতার করা হচ্ছে বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে। তফসিল ঘোষণার পর পুলিশের এ ধরনের আচরণে বিএনপি নেতারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

বিএনপি নেতারা বলেন, পুলিশের এই গ্রেফতারের ঘটনা নির্বাচন কমিশনের কর্মকাণ্ডকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। চট্টগ্রাম মহানগর যুবদল নেতা জমির উদ্দিন মানিক ও জাহাঙ্গির আলম বাবলু হাইকোর্ট থেকে জামিনে থাকার পরও গত ১৪ নভেম্বর চান্দগাঁও থানার পুলিশ তাদের আটক করে অন্যদুইটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়।

এ ছাড়া চট্টগ্রাম কমার্স কলেজ ছাত্রদল নেতা সাইফুদ্দিন কামরান ও মো. নাজিম উদ্দিন সদরঘাট থানার মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে বের হওয়ার সময় গত ১৬ নভেম্বর কোতোয়ালী থানা পুলিশ জেল গেইট থেকে পুনরায় আটক করে অন্য মামলায় জেল হাজতে পাঠিয়ে দেন। আগামী ২৮ নভেম্বর কমার্স কলেজে তাদের অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ গ্রেফতারে তাদের শিক্ষাজীবন অনিশ্চিয়তার পথে।

এ ছাড়া পাঁচলাইশ থানা পুলিশ এজাহারভূক্ত আসামি না হওয়া সত্ত্বেও গ্রেফতারকৃত নগর যুবদল নেতা ওমর ফারুক হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় গত ১৬ নভেম্বর জেল গেইট থেকে পুলিশ পুনরায় গ্রেফতার করে।

ডবলমুরিং থানার একটি মামলায় গ্রেফতারকৃত নগর যুবদল নেতা আবদুল নূর হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় গত ১৫ নভেম্বর গোয়েন্দা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে হালিশহর থানার আরেকটি মামলায় পুনরায় কারাগারে পাঠিয়েছে।

এছাড়া পুলিশ নেতাকর্মীদের বাসাবাড়ীতে তল্লাশীর নামে হয়রানী করছে বলে জানান নগর বিএনপির সহ দপ্তর সম্পাদক ইদ্রিস আলী। নগর বিএনপি’র সদস্য জাকির হোসেনের শুলকবহরের আরাকান সোসাইটির বাসায় পাঁচলাইশ থানা পুলিশ গত ১৬ নভেম্বর সকাল ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত তল্লাশি চালিয়ে পরিবারের সদস্যদের নাজেহাল করে।

চট্টগ্রামের ১৫টি থানায় গত ২ মাসে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ১৪০টি গায়েবি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে স্মারক লিপিতে উল্লেখ করেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি ।

বিএনপির কেন্দ্রীয় শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন বলেন, ইতোমধ্যে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিতে যাওয়া ডা. শাহাদাত হোসেন, মো. সামশুল হক, কামরুল ইসলাম, জাকির হোসেন, জিয়াউর রহমান জিয়া, জমির উদ্দিন নাহিদ ও মো. আজমকে ঢাকার ডিবি পুলিশ গ্রেফতার করে। তফসিল ঘোষণার পর পুলিশের এ আচরণ একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব পড়ার আংশকা করছেন বলে জানান তিনি।

নগর বিএনপির উপদেষ্টা সাংবাদি জাহিদুল করিম কচি বলেন,নির্বাচন কমিশন কর্তৃক তফসিলে নির্বাচনী আচরবিধি ঘোষণার পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্নস্থানে সভাসমাবেশ করে চলেছে। অপর দিকে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের কারণে বসতবাড়িতে অবস্থান করতে পারছে না।

তিনি জানান, চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পত্র নেয়া প্রার্থী বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব লায়ন আসলাম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, সহ-সভাপতি ইকবাল চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন, অধ্যাপক কুতুব উদ্দিন বাহার, শহিদুল ইসলাম চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আটক রয়েছেন।

কারাগারে আটক থাকার কারণে তারা নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারছেন না। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী এবং গ্রেফতারকৃত সকল নেতাকর্মীর মুক্তির দাবী করেন তিনি।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন