যে কারণে তারেকের জন্মদিনে যাননি কামাল-রব-মনসুর!

  21-11-2018 02:27AM

পিএনএস ডেস্ক : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আজ ৫৩তম জন্মবার্ষিকী। এই উপলক্ষে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে আজ আলোচনা অনুষ্ঠান ছিল। সেই আলোচনা অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন না বিএনপির সঙ্গে জোট বাধা ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, সাবেক ডাকসু ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ও ঐক্যফ্রন্টের নেতা বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকি।

বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের পক্ষ থেকে তারেক জিয়ার জন্মদিন অনুষ্ঠানের আলোচনায় ড. কামালকে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকার কথা ছিল। কিন্তু তিনি তারেকের জন্মদিন অনুষ্ঠানে যাননি।

শুধু ড. কামাল হোসেনই নন তারেকের জন্মদিনের আলোচনা অনুষ্ঠান যাননি ঐক্যফ্রন্টের নেতা বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকি, ড. জাফরুল্লাহ ও সুলতান মোহাম্মদ মনসুর। ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের মধ্যে শুধুমাত্র মাহমুদুর রহমান মান্না তারেক জিয়ার জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত আইনজীবীদের আলোচনায় যোগ দিয়েছেন।

অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্বাচনের দিন শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়াই করব। বুকে বুক বেঁধে লড়াই করব। সুযোগ একটা এসেছে। হাত-পা বেঁধে রাখার মধ্যেও আমাদের এগুতে হবে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, তফসিল ঘোষণার পরও চারদিকে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, নির্যাতন চালানো হচ্ছে। এ থেকে মুক্তি চাইলে, নির্বাচনে সব অস্ত্র ব্যবহার করতে হবে। আর সে অস্ত্র হলো ভোটের অস্ত্র। সবাই মিলে ভোট দিয়ে এই দানব সরকারকে হঠাতে হবে।

নির্বাচনকে বিএনপির অস্তিত্বের লড়াই উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণকে শক্তি হিসেবে নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করতে হবে, এর বিকল্প নেই। মামলার ভয়ে পালিয়ে না বেড়িয়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, সরকার প্রচণ্ড ভয় পেয়েছে। ইন্টারনেট, স্কাইপ বন্ধ করেছে। কতটুকু দেউলিয়া হলে তারা আমাদের প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে রিট করে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, এই নির্বাচনকে আন্দোলন হিসেবে নিয়েছি। তারেক রহমান আজ দেশের বাইরে। খালেদা জিয়া কারাগারে। এই অমানবিক অবস্থায় আর থাকতে হবে না। সবাই মিলে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে হবে।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বর্তমান সরকারের দুঃশাসনে ভেতরে ভেতের সাগরের মতো ফুঁসছে সারা দেশের মানুষ। পরিবর্তনের জন্য তারা কেবল একটি সুযোগের অপেক্ষায়। আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে সেই পরিবর্তনের সুযোগ এসেছে। যেহেতু নির্বাচনের হুঁইসেল (তফসিল) বেজেছে, তাই আগামী ৩০ ডিসেম্বর আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনের রায় ঘোষণা করবো। এই নির্বাচনে এই জালিম সরকারের পতন ঘটানো হবে। নির্বাচনের আগে ২১দিন প্রচারণার সুযোগ পাবো, তখন সারাদেশ চষে বেড়াবো।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, সরকারের কাছে সবচেয়ে আতঙ্কিত যে ব্যক্তি, তিনি হলেন তারেক রহমান। সেই কারণেই তারা আদালতের কাঁধে বন্দুক রেখে নিয়ন্ত্রিত বিচার ব্যবস্থা দিয়ে একের পর এক তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। আমাদের দুঃখ হয়, বিচার বিভাগ স্বাধীন থাকলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হতো না আর খালেদা জিয়াকেও কারাগারে থাকতে হতো না। তাই আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনকে একটি আন্দোলনের অংশ হিসেবে নিয়ে এই দানব সরকারের হাত থেকে মুক্তি পেতে হবে।

বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ শহিদুদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, ডেমোক্রেটিক লীগের মহাসচিব সাইফুদ্দিন মনি প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এবং বেগম খালেদা জিয়ার জেষ্ঠ্য সন্তান তারেক রহমানের জন্ম ১৯৬৭ সালের ২০ নভেম্বর তারিখে। তিনি শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়াশোনা শুরু করেন। ঢাকা রেসিডেনসিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি এবং আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন।

তিনি দেশের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ হতে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হন ও পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৮৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন।

বাবা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের বগুড়া কমিটির সদস্য হিসেবে যোগদান করে তারেক রহমান তার রাজনৈতিক জীবনের সূচনা করেন। আনুষ্ঠানিক ভাবে সংগঠনের যোগ দেয়ার পূর্বেই তারেক রাজনীতিতে অত্যন্ত সক্রিয় ছিলেন। ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তারেক তার মায়ের সহচর হিসেবে সারা দেশের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন। ২০০১ সালের নির্বাচনেও তারেক রহমান মা বেগম জিয়ার প্রচারণা কার্যক্রমের পাশাপাশি পৃথক পরিকল্পনায় দেশব্যাপী নির্বাচনী প্রচারণা চালান। মূলত ২০০১ সালের নির্বাচনী প্রচারণায় তার অংশগ্রহণের মাধ্যমে রাজনীতির প্রথম সারিতে তারেক রহমানের সক্রিয় আগমন ঘটে ।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন