অভিমানী শাহীন বললেন আমিও একজন মানুষ!(অডিওসহ)

  21-11-2018 05:23PM

পিএনএস(আহমেদ জামিল): একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনে দল পরিবর্তন করে আবারো জনপ্রিয়তার শীর্ষে দুই হেভিওয়েট প্রার্থী মুখোমুখি হচ্ছেন। ঠিকানা গ্রুপের চেয়ারম্যান বিএনপির সাবেক এমপি এম এম শাহীন বিকল্পধারা বাংলাদেশে যোগ দিয়েছেন।এদিকে বিকল্পধারার নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার আবাস পাওয়া যাচ্ছে। এবং একই আসন থেকে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি বর্তমান জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর নির্বাচন করবেন ঐক্যফ্রন্ট থেকে।যেদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে নির্বাচন করবে।

তবে এবার আকর্ষণের মূল কারণ হচ্ছে দুই হেভিওয়েট নেতার দল ও প্রতীক বদল নিয়ে। ঠিকানা গ্রুপের চেয়ারম্যান বিএনপির সাবেক এমপি এম এম শাহীন (১৯৯৬-২০০১-২০০৮) বিগত নির্বাচনে একবার দলীয় ও সতন্ত্র প্রার্থী হয়ে দু’বার সাংসদে আসেন। হঠাৎ করে দীর্ঘ দিনের আদর্শিক রাজনৈতিক দল বিএনপি থেকে সরে গিয়ে যুক্তফ্রন্টে যোগ দেওয়া নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা।মহাজোটের সাথে নির্বাচনে গেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অথবা সাবেক রাষ্ট্রপ্রতি জিয়াউর রহমান না বর্তমান দল বিকল্পধারা বাংলাদেশের ডা. বি চৌধুরীর আদর্শের কথা বলবেন। এমনও হাজারো প্রশ্ন এখন সাধারণের মনে। বিপরীত প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার সিন্ধান্তে স্থানীয় বিএনপি ও তার অনুসারি নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকেই এ ব্যাপারে ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন।

বিষয়গুলো নিয়ে সাবেক এমপি এম এম শাহীন পিএনএস এর মুখোমুখি হলে উঠে আসে তার মনের কথা।বিশেষ সাক্ষাৎকারে যেমন ওঠে এসেছে তাঁর মনের ভেতরে থাকা মান-অভিমানের কথা আবার সাজানো বাগানেও আচড় করা কথাও এসেছে আলোচনায়। মনে কোনো ক্ষোভ নেই বললেও আড়ালে রয়েগেছে ভাপাকাঁন্না। বললেন আমিও এক জন্য মানুষ! তবে এলাকার মানুষের জন্য রয়েছে বিশেষ বার্তা :-

তিনি বলেন, সত্যিকারভাবে ২৫ বছর পর আমার উপলব্ধিতে আসছে আদর্শ বলতে আমার কুলাউড়াকেই বুঝি। কুলাউড়ার মানুষ আমার আদর্শ। আমি যে আদর্শ ধারণ করতাম সেই আদর্শকে যারা প্রতিনিধিত্ব করেন তারা আমি যে দু’বার সাংসদ প্রতিনিধিত্ব করেছে জনগণের ভালোবাসায়। সেই উপলব্ধিতা তাদের মাঝে আসে নাই।

যে কারণে যখনি তারা আমার বিরুদ্ধে যে প্রার্থীই দিয়েছেন সেটা ধানের শীষ হোক আর জামায়াত থেকে হোক তারা প্রত্যাক্ষিত হয়েছেন। এবং জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এ থেকে বুঝায় উপরে যারা সিদ্ধান্ত নেন তারা তৃণমূলের মানুষের আকাঙ্ক্ষার জায়গায় যেতে পারেন না।

‘উপর থেকে জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার যে মানুসিকতার রয়েছে।আজকেও দীর্ঘ ২৫ বছর যে রাজনীতি করেছি এবং বিগত ১০ বছর দীর্ঘ আন্দোলনে থেকে জেল জুলুম খেটেও আমি প্রমাণ করতে পারিনি, যে আমি এই দলের একজন নুন্যতম সদস্য। যে কারণে আমার কাছে মনে হয়েছে শুদ্ধ রাজনীতিতে আসা দরকার এবং শুদ্ধ প্রতিনিধির মাধ্যমে আমার কুলাউড়ায় মানুষকে যারা সম্মানিত করবে তাদের নেতৃত্বকে আমি বেছে নিয়েছি’।

‘এই মুহূর্তে কেউ কেউ মনে করতে পারে আমার সিদ্ধান্ত ভুল কিন্তু ২/৪ মাস পরে তারা বুঝতে পারবে আমার সিদ্ধান্তই সঠিক আছে। এম এম শাহীন কে যারা দেখছেন তারা আমার কর্মকাণ্ডে বুঝতে পারবেন আমি সঠিক আছি’।

যুক্তফ্রন্টে যোগ দেওয়ার কারণ নিয়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপির একজন প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব এই দেশের সম্মানিত ব্যক্তিত্ব এবং তিনি বিএনপির সম্মানিত সাবেক রাষ্ট্রপতি। তাঁর নেতৃত্বে বিকল্পধারা আমি যোগ দিয়েছি। এই দলের মূল স্লোগান হল ‘শান্তি সুখের বাংলাদেশ গড়া’। আমরা সময় উপযোগি একটি বাংলাদেশ দেখতে চাই। বিশ্ব এখন ডিজিটাল হচ্ছে বাংলাদেশকে সেই গতিতে এগিয়ে নিতে বিকল্পধারা এবং মহাজোটের সাথে আছি’।

তিনি বলেন, ‘আমাদের যে দলীয় প্রদান তিনি সম্মান ও শ্রদ্ধায় রাজনীতি করতে বলেছেন। তিনি কাউকে বড় করতে গিয়ে অন্যকে ছোট করতে চান না।বঙ্গবন্ধুকে যেভাবে লালন করেন। বঙ্গবন্ধু এদেশের ইতিহাসে যে একটি অংশ তিনি তার স্থানে তাকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ঠিক একইভাবে শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে তাঁর স্থানে সম্মানিত করেন। এছাড়াও ভাসানি, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক যারা এই দেশের ইতিহাসে তাঁদের যে স্থানে মূল্যায়ন করেছে। তাঁদের সেই জায়গায় শ্রদ্ধা ও সম্মানে অক্ষত রাখতে চাই।এবং সেই রাজনীতি আমাদের দলীয় প্রদান এই নীতি প্রশয় করবেন বলে আমি মনে করি’।

‘আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং সুখ শান্তি গড়তে আমার প্রতি কুলাউড়ার মানুষের যে ভালোবাসা শ্রদ্ধা আছে তারা আমাকে কখনো চেড়ে যায়নি। তারা জানে তাদের জীবন মান উন্নয়নে আমি সর্বোচ্চ ত্যাগ করেছি। আশা করি তারা আমার সাথে থাকবে। যদি মহাজোট আমাকে মনোনয়ন বা বিবেচনা করেন তাহলে জনগণ আমার সাথে থাকবেন’।

বিএনপি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কুলাউড়ায় বিএনপি সাড়ে ৫ হাজার ভোটের মালিকানা ছিল। সেখান থেকে আমি ৮০ হাজার ভোট বানিয়েছি। বিগত নির্বাচনে উপর তলায় বসে যারা আমাকে বঞ্চিত করেছেন মানুষ তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করেছে। আমাকে করে নাই’।

দল পরিবর্তন নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি দল বদল করিনি এট কুলাউড়ায় মানুষের বৃহৎ স্বার্থকে সংরক্ষিত করতে, তাদের উন্নয়ন শিক্ষায় সুব্যবস্থা, রাস্তা ঘাট, এটাকে আর বৃদ্ধি করতে আমি এগিয়ে যাচ্ছি।
এটা দলের বদল নয়, বরং মানুষের প্রয়োজন। আমি কুলাউড়াতেই রয়েছি। আমি কুলাউড়া ত্যাগ করি নাই’।

বিশেষ কারও ওপর মান-অভিমান রয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার কোনো ক্ষোভ নেই, তবে আমিও এক জন্য মানুষ। আমরা সকলেই একটা উদ্দেশ্য সামনে রেখে রাজনীতি করি। আমাদের পেছনে হাঁজার হাঁজার মানুষ যখন একটি লক্ষ সামনে রেখে আগায় এবং সেই লক্ষ পূরণ করার সময়ে যখন দেখে অন্য কেউ দখলের চেষ্টা নিয়েছে। খাদ্যটা কেড়ে নিয়েছে। সাজানো বাগানে যখন কেউ আচড় দিয়েছে তখন স্বাভাবিকভাবেই মানুষ মধ্যে একটি বিদ্রোহ দেখা দেয়।আমার সাজানো বাগানে সবার একটি কুদৃষ্টি পড়ে। আমি অন্যের খাবার কখনো কেড়ে নেইনি তারা আমার খাবার কেড়ে নিতে চায়’।

কুলাউড়ার মানুষের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, ‘আমি একজন প্রবাসি ছিলাম। আমার একটি বর্ণাঢ্য জীবন ছিল। সব কিছু রেখে আমার নাড়ী পুতা এলাকায় মানুষের কল্যাণে আমি এসেছি। তাদের জন্য আমার সবকিছু দিয়েছি। মানুষ যদি তাদের চাওয়া পূরণ করতে আমাকে ওই আসনে বসায় তাহলে আমি একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন করে দেখাবো’।

সম্পূর্ণ সাক্ষাৎকারটি শুনতে ক্লিক করুন :




পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন