পিএনএস ডেস্ক: আজ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। কোন দল থেকে কার প্রার্থিতা চূড়ান্ত হচ্ছে, সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে প্রধান দুই রাজনৈতিক জোটকে।
ফলে আসন ভাগাভাগি নিয়ে দুই জোটেই এখন চলছে শেষ মুহূর্তের দর কষাকষি।
রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুই জোটের বেশিরভাগ শরীক দলের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির বিষয়ে খানিকটা সমঝোতা হলেও, এখনো দুই জোটেই দর কষাকষি চলছে। তবে আজ বিকালের মধ্যেই তাদের এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে হবে।
১৪দলের সঙ্গে সমঝোতা হলেও জাতীয় পার্টির সঙ্গে এখনো আলোচনা আওয়ামী লীগের
আওয়ামী লীগ তার ১৪ দলীয় জোটের শরীকদের ১৩টি আসন দিয়েছে। এছাড়া কিছুদিন আগে যোগ দেওয়া অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টকে তিনটি আসন দিয়েছে। তবে মহাজোটের শরীক দল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির সঙ্গে আসনের ব্যাপারে এখনো চূড়ান্ত সমঝোতা হয়নি।
আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যাচ্ছে, জাতীয় পার্টিকে আওয়ামী লীগ ৪০ থেকে ৪২টি আসন দিতে চায়। তবে জাতীয় পার্টির চাহিদা আরো বেশি। এ নিয়ে রাতেও তাদের মধ্যে বৈঠক চলছিল বলে জানা গেছে।
মহাজোটের সব দলের মধ্যে জাতীয় পার্টি লাঙ্গল নিয়ে নির্বাচন করলেও, অন্য দলের নেতারা নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করবেন।
জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট আর ২০দলের সঙ্গে ভাগাভাগি বিএনপির
ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টকে ১৯টি আসন ছেড়ে দিয়েছে বিএনপি। গণফোরাম পেয়েছে ৭টি আসন, জেএসডি ৪টি, নাগরিক ঐক্য পেয়েছে ৫টি আসন।
তবে এই জোটের আরেকটি শরীক দল কৃষক শ্রমিক জনতা পার্টির নেতা আব্দুল কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে বিএনপির এখনো সমঝোতা হয়নি। এই দলকে তিনটি আসন ছেড়ে দিয়েছে বিএনপি, তবে তারা আরো দুইটি আসন দাবি করছেন। শনিবার রাতে দলীয় প্রতীক হিসাবে ধানের শীষ ব্যবহারের চিঠি না নিয়েই বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয় ছেড়ে চলে যান দলের প্রতিনিধিরা।
নিজেদের পুরনো বিশ দলীয় জোটে জামায়াতে ইসলামী ছাড়া অন্য শরীকদের ১৭টি আসন ছেড়ে দিয়েছে আর জামায়াতকে দেয়া হয়েছে ১৭টি আসন। তবে জামায়াতের নেতারা জানিয়েছেন, তাদেরকে ২৫টি আসনে ধানের শীষ প্রতীক ব্যবহারের জন্য বিএনপি চিঠি দিয়েছে।
বিদ্রোহীদের নিয়ে ঝামেলায় দুই দল
আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি, দুই দলই বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে ঝামেলায় রয়েছে।
বিবিসি বাংলার কাদির কল্লোল জানাচ্ছেন, আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে অন্তত ৮০ জন বিদ্রোহী প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাদের মধ্যে যদিও অনেকের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে, তবে এখনো ৫০জন বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন নেতাকে এই বিষয়টি সামাল দেয়ার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
তারা যাতে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন এবং অসন্তোষ কমে আসে, সেজন্য দলীয় প্রার্থীদের বাইরে অন্যদের সরে আসার অনুরোধ জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা একটি চিঠি দিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।
বিএনপির অসন্তোষের ব্যাপারটি প্রকাশ্যে বেরিয়ে এসেছে। দলটির মনোনয়ন বঞ্চিত কয়েকজন নেতার সমর্থকরা বিএনপির পল্টনের কার্যালয় এবং গুলশানে চেয়ারপার্সনের কার্যালয় ঘিরে বিক্ষোভ করেছে এবং সেখানে ভাঙচুর করেছে। এক পর্যায়ে পল্টন কার্যালয়ে তারা তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিল। মধ্যরাতেও গুলশানে তাদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।
মধ্যরাতে চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ের ভেতর থেকে মাইকিং করে তাদের চলে যেতে অনুরোধ করা হয়। সূত্র: বিবিসি বাংলা
পিএনএস/আনোয়ার
আসন নিয়ে শেষ মুহূর্তের টানাটানি, বিকালের মধ্যেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত
09-12-2018 10:34AM