ঐক্যফ্রন্টের সংলাপে আ.লীগ-জাপাও আমন্ত্রণ পাবে

  16-01-2019 02:18PM

পিএনএস ডেস্ক : একাদশ সংসদ নির্বাচন পরিস্থিতি এবং পরবর্তী করণীয় নিয়ে সব রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের মতামত জানতে জাতীয় সংলাপের আয়োজন করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। আজ বুধবার ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে সংলাপের তারিখ ও স্থান চূড়ান্ত করার কথা রয়েছে।

ঐক্যফ্রন্টের উচ্চপর্যায়ের সূত্র জানায়, এই সংলাপে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও তাদের নেতৃত্বাধীন ১৪–দলীয় জোটের শরিক দলগুলো এবং বর্তমান সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টিকেও (জাপা) আমন্ত্রণ জানানো হবে।

সংলাপে আমন্ত্রণ জানাতে তালিকা তৈরি করছে ঐক্যফ্রন্ট। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০–দলীয় জোটের শরিক দলগুলো, বাম গণতান্ত্রিক জোট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশকে সংলাপে ডাকা হতে পারে। এ দলগুলোর নেতাদের উপস্থিতি সংলাপকে কার্যকর করে তুলতে পারে বলে মনে করছেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। তবে ২০–দলীয় জোটের শরিক জামায়াতে ইসলামী যুদ্ধাপরাধের দায়ে বিতর্কিত হওয়ায় তাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে না। বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিদেরও সংলাপে আশা করছে ঐক্যফ্রন্ট।

এ প্রসঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দল নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের মতামত জানতেই সংলাপের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একাধিক রাজনৈতিক দল ও জোট নির্বাচন বাতিলের দাবি জানিয়েছে। এ দলগুলোকে সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হবে।

ঐক্যফ্রন্টের অপর একজন নেতা জানান, দেশে ভয়ের সংস্কৃতি চলছে। নাগরিক সমাজের অধিকাংশ ব্যক্তি নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে সতর্কতা অবলম্বন করছেন। তাই সংলাপে তাঁদের উপস্থিতি নিয়ে সংশয় আছে। আমন্ত্রণ জানানো হলেও অনেকে হয়তো এড়িয়ে যেতে পারেন। তাই প্রতিবাদী রাজনৈতিক দলগুলোকে গুরুত্ব দিতে চান তাঁরা। সংলাপে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারাও নির্বাচনী অভিজ্ঞতা তুলে ধরবেন।

বাম গণতান্ত্রিক জোটের অন্যতম শরিক বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, তাঁরা তাঁদের মতো বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছেন। ঐক্যফ্রন্টের সংলাপের বিষয়ে এখনো কিছু জানেন না। সংলাপের বিষয় ও অংশগ্রহণকারীদের সম্পর্কে জানতে হবে। আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণের পর বিবেচনা করে দেখা হবে বলে জানান তিনি।

বাম জোটের আরেক শরিক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, জাতীয় সংলাপের উদ্যোগ অবশ্যই ইতিবাচক। আমন্ত্রণ পেলে দল ও জোটে আলোচনা করে অংশগ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ঐক্যফ্রন্টের বড় শরিক বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ দলটির বিপুলসংখ্যক নেতা–কর্মী কারাগারে। গ্রেপ্তারের ভয়ে অনেক নেতা আত্মগোপনে। এই অবস্থায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়, আলোচনা সভা, সংলাপের মতো কর্মসূচি চালিয়ে যেতে চায় বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

ঐক্যফ্রন্টের নেতারা মনে করছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমর্থন নিয়ে বিজয়ী আট প্রার্থীর শপথ নেওয়ার বিষয়টি আসতে পারে সংলাপে। জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে ২০–দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে টানাপোড়েন এবং অভিন্ন জোট তৈরি নিয়েও আলোচনা হতে পারে। সরকারবিরোধী আন্দোলন, কর্মসূচি, জোট সম্প্রসারণ নিয়েও মতামত পাওয়া যেতে পারে সংলাপে।

ঐক্যফ্রন্টের প্রধান সমন্বয়ক ও গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন বলেন, সরকারি দলসহ সব দলকেই সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হবে। প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে সৃষ্ট সংকট সমাধানে সবার সঙ্গেই আলোচনা করতে চায় ঐক্যফ্রন্ট।

নির্বাচন সামনে রেখে গত বছরের অক্টোবরে ড. কামাল হোসেনকে সামনে রেখে বিএনপি, গণফোরাম, জেএসডি ও নাগরিক ঐক্য মিলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে। পরে এ জোটে যোগ দেন কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগ। নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা আটটি আসনে বিজয়ী হন। এর মধ্যে ছয়টি আসনে বিএনপি এবং দুটি আসনে গণফোরামের প্রার্থীরা জিতেছেন। তবে সাংসদ হিসেবে এখনো তাঁরা শপথ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেননি।- প্রথম আলো

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন