পিএনএস (মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান) : সাবেক সফল রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠা শহীদ জিয়াউর রহমানের ৮৩তম জন্মবার্ষিকী আজ।১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার গাবতলী উপজেলার বাগবাড়ী গ্রামের এক বনেদি মুসলিম পরিবারে এই ক্ষণজন্মা বীর পুরুষের জন্ম।জন্ম যে সৃষ্টির লক্ষ্যে, আমৃত্যু তিনি সে সত্যই প্রতিষ্ঠা করে গেছেন।
বহুদলীয় গণতন্ত্র ও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের উদ্যোক্তা জিয়াউর রহমান কর্মজীবনের শুরুতে
১৯৫৩ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে পালন করেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ জাতির গভীর সংকটকালে চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে তার কণ্ঠে ভেসে আসে স্বাধীনতার ঘোষণা।জীবন বাজি রেখে তিনি সেদিন জাতীয় দায়িত্ব পালনে সফল হন।
না, ঘোষণা দিয়ে তিনি থেমে থাকেননি। মুক্তিযুদ্ধকে সংঘটিত করে সরেজমিন মাঠে-ময়দানে সশস্র যুদ্ধ করেন।মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার হিসেবে তিনি বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তার নামে গড়ে ওঠা জেড ফোর্স রণাঙ্গনে একের পর এক দুঃসাহসিক অভিযান পরিচালনা করে।মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার ফলস্বরূপ তিনি বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত হন।
জাতির আরেক সংকটকালে ১৯৭৫ সালের নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের শেষের দিকে তাকে বন্দি করা হয়।১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহী জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে তিনি বন্দিদশা থেকে মুক্ত হন। পরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন জিয়াউর রহমান।রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে তিনি বসে থাকেননি, দেশ ও জাতির প্রয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন।জাতির প্রয়োজনে ১৯ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন।এ কর্মসূচিগুলো হাতে-কলমে বাস্তবায়নে তিনি সারাদেশ চষে বেড়ান।সমস্যা-সংকট সরেজমিন অবলোকন করে যেখানে যা যা করণীয়, সে কাজগুলো করায় আত্মনিয়োগ করেন।
মানুষকে স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে প্রথমে নিরক্ষরতা মুক্ত কর্মসূচি পালন করেন।সমাজে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে আইনশৃঙ্খলার উন্নয়নে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বেকার যুবসমাজকে কাজে লাগান। মজা পুকুরে মাছ চাষ ও হাঁসি-মুরগি পালনে উদ্বুদ্ধ করেন যুবকদের পাশাপাশি নারীদেরও।খাল খনন করে সেচ কাজে সাফল্য এনে কৃষিতে বিপ্লব ঘটিয়ে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন করতে সফল হন।
বাকস্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা শুধু নয়, নিজে উদ্যোগ নিয়ে দৈনিক দেশ ও দৈনিক বার্তা প্রকাশ করেন।জাতীয় প্রেস ক্লাবের জন্য জায়গা দেন। উদ্বোধন করেন জাতীয় প্রেস ক্লাব ভবন। সাংবাদিকদের মাথা গোঁজার জন্য রাজধানীর মীরপুরে দলমত নির্বিশেষে সবার জন্য জায়গাও দেন।সাংবাদিকদের পেশাগত মান উন্নয়নে প্রশিক্ষণের জন্য পিআইবি স্থাপন করেন।
জিয়াউর রহমানের সৎ, সাহসী, নির্মোহ ও দেশপ্রেমিক অসামান্য অবদানের ফলে দেশ তরতর করে এগোতে থাকে। মানুষের মুখে হাসি ফুটতে শুরু করে। আন্তর্জাতিক মহলে দেশের ভাবমূতি বাড়তে থাকে।মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে জনশক্তি যাওয়া শুরু হয়।নারীদের সমান অধিকার দিয়ে এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বেকারদের দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করে দেশের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করা হয়।
বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ও দেশপ্রেমিক জিয়াউর রহমান স্বনির্ভর বাংলাদেশ গঠনে অসামান্য অবদান রাখেন। তার এই সাহসী ও দেশপ্রেমিক ভূমিকা বাংলাদেশ বিরোধী শক্তি ভালো চোখে দেখেনি। ফলে তারা ষড়যন্ত্র শুরু করে।সে ধারাবাহিকতায় ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সেনাবাহিনীর এক অংশের অভ্যুত্থানে জিয়াউর রহমান শহীদ হন।আজকের এই দিনে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।মহান আল্লাহ মরহুমকে জান্নাত নসিব করুন, আমিন।
প্রতিবেদক : বিশেষ প্রতিনিধি- পিএনএস
পিএনএস/এএ
দেশ ও জাতির সমস্যা-সংকটে জিয়াউর রহমান
19-01-2019 03:49PM