বগুড়ার নেতার সঙ্গে বিতণ্ডায় মির্জা ফখরুল

  23-01-2019 04:15PM

পিএনএস ডেস্ক : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ বুধবার বগুড়ায় যান। তিনি বগুড়া-৬ (সদর) আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। তিনি বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলামের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সামনে ঝগড়া করেছেন বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি ভিপি সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চাঁন। বগুড়ায় বিএনপি মহাসচিবের আগমন ও এ বিষয়ে দলীয় কর্মসূচি জানা না জানা নিয়ে ওই দুই নেতা একে অপরের প্রতি রুষ্ট হন। এ নিয়ে মির্জা ফখরুলের সঙ্গে বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতির বাকবিতণ্ডা হয়েছে। এক পর্যায়ে তার ওপর চটে যান ফখরুল।

এর আগে বগুড়ার সংসদ সদস্য হিসেবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে স্থানীয় নেতাকর্মীরা অভিষিক্ত করেন। তাকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করায় দলীয় নেতাকর্মীসহ বগুড়াবাসীকে তিনি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। নেতাকর্মীরা দাঁড়িয়ে ও করতালি দিয়ে মির্জা ফখরুলকে অভিবাদন জানান।

নির্বাচন পরবর্তী সফরে ঠাকুরগাঁও থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে বিএনপি মহাসচিব বুধবার দুপুরে বগুড়া শহরতলির পাঁচ তারকা মমো ইন হোটেলে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। হোটেলের অষ্টম তলার একটি হলরুমে দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মির্জা ফখরুল ওই হোটেলের যে কক্ষে অবস্থান করছিলেন সেখানে প্রবেশের পর বগুড়া জেলা বিএনপি সভাপতি সাইফুল ইসলাম সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চাঁনের বিরুদ্ধে মহাসচিবের সফর কর্মসূচির কথা তাকে না জানানোর অভিযোগ উত্থাপন করেন। এ নিয়ে তখন থেকেই দুইজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়।

এরপর মির্জা ফখরুল তাদের দুইজনকে নিয়ে লিফটে ওঠেন। অষ্টম তলায় অনুষ্ঠান স্থলে নামার সময়ও দুইজনের কথা কাটাকাটি থামছিল না। এক পর্যায়ে বিএনপি মহাসচিব বগুড়া জেলা বিএনপি সভাপতি সাইফুল ইসলামের জ্যাকেটের কলার ধরে কাছে টেনে ধমক দিয়ে তাকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। লিফট খোলার পর এ অবস্থা উপস্থিত নেতাকর্মীরা দেখতে পান। পরে দুজনকে নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মতবিনিময় সভার মঞ্চে ওঠেন।

জেলা বিএনপি সভাপতি সাইফুল ইসলাম দাবি করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার কলার ধরেননি। তিনি বলেন, ‘আমি আমার কমিটির সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে উচ্চ স্বরে কথার বলার এক পর্যায়ে মহাসচিব আমার জ্যাকেট ধরে কাছে টেনে নিয়ে শান্ত থাকতে বলেছেন।’

এ বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীনের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

মতবিনিময় সভায় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচনকে আমরা প্রত্যাখান করেছি। নির্বাচনের মাধ্যমে মানুষের সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাসহ একটি দল শুধু ক্ষমতায় থাকার জন্য সকল মুল্যবোধসহ অর্জনকে ধংস করেছে বলে অভিযোগ করেন। দেশে এমন সংকট আর আসেনি।’ শুধু আশা-আকাঙ্ক্ষার ক্ষতি নয়, নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা পর্যন্ত নষ্ট করা হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি এখন কোন পথে এগুবে তা নির্ধারণ করতে হবে। দেশ প্রজাতন্ত্র না, একদলীয় শাসন চলছে তা সামনে এসেছে।’

তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘এ সরকার, মূল্যবোধ, গণতন্ত্র ও ভালো কিছু বিশ্বাস করে না।’

ফখরুল আরও বলেন, ‘এখন প্রধান লক্ষ্য দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্ত করা ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা।’

নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা হিসাবে ঘোষণা দেওয়া হলেও এখানে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জেলা বিএনপি’র সভাপতি ছাড়া আর কেউ বক্তব্য রাখেননি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন নিয়ে দলীয়ভাবে কোনো সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি।’

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন