যারা আমার সাথে অশান্তি করে, তাদের চিবায়া ফেলার সাহস নিয়া চলি : ছাত্রলীগ নেত্রী

  18-05-2019 02:41PM


পিএনএস ডেস্ক: ছাত্রলীগের ৩০১ সদসস্যের নতুন কমিটি নিয়ে বিতর্ক চলছেই। এমন অবস্থায় অনেকেই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করছেন।

পদবঞ্চিতদের অভিযোগ, উপ-পাঠাগারবিষয়ক সম্পাদক পদ পাওয়া ফাতেমা তুজ জোহরা চৌধুরী রুশী বিবাহিত। তারপরও তাকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ দেয়া হয়েছে।

তবে নিজের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ খণ্ডনে দীর্ঘ পোস্ট দিয়েছেন রুশী। সেখানে আওয়ামী লীগের সাথে পরিবারটির রাজনৈতিক ইতিহাস তুলে ধরে তিনি দাবি করেছেন, ‘বিয়ে করিনি। বাগদান হয়েছে।’

ফেসবুক পোস্টের শুরুতে পরিবারের সদস্যদের মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদানের কথা লিখেছেন রুশী। এরপর লিখেছেন, ‘আমি খুব শান্তিপ্রিয় মানুষ। তবে যারা আমার সঙ্গে অশান্তি করে, তাদের চিবায়া ফেলার সাহস ছোট থেকে বুকে নিয়া চলি।’

ছাত্রলীগের এই নেত্রী লেখেন, সম্প্রতি আমার বিয়ে হয়েছে এবং হয়েছিল এ রকম ভুয়া কিছু কথা ফেসবুকে দেখি। আমি আগেই (১৫ মার্চ, আমার জন্মদিনে) ক্লিয়ার করে দিয়েছিলাম যে মেহরাবের (আশিকুর রহমান মেহরাব) সঙ্গে আমার বাগদান হয়েছে। যেহেতু এতো বছরের প্রেম আমাদের আর তা আমি ফেসবুকে লুকাইও নাই কোনো দিনও। আবার আমাদের বাগদানের ব্যাপারটাও লুকাই নাই।’

তিনি লেখেন, ‘এবারের কমিটিতে আমি উপ-পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক পোস্ট পাওয়ার ফলে অনেকেই আমার বিরুদ্ধে লেগে যায়। আগের কমিটির এক ছেলে সুস্ময় দে দেখি সে ভুয়া কাবিন নামা বানায় পোস্ট দিলো। দেখলাম ২০১৩ সালের আমার একটা প্রোফাইল পিকচারকে ক্রপ করে খুবই আনাড়ি হাতে কাজটা করেছে সে এবং পাত্রের ছবিও ব্লার।’

রুশী লেখেন, ‘এরপর আমার বন্ধু রিয়াদ আমাকে ইনবক্সে পাঠাল সেইম কাবিন নামায় ওই ছেলের বদলে রিয়াদ এর ছবি জুড়ে দিয়েছে কেউ! মানে আরেকটি জাল বিয়ের হলফ নামা!!! রিয়াদ আমার ছোট বেলার বন্ধু এবং খুব ভালো বন্ধু। আমি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই আমার তখন কেবল তিন মাস একটা ছেলের সাথে রিলেশন হয়েছিল এবং ছেলেটা নারী এবং মাদকাসক্ত হওয়ায় আমিই তার সাথে ব্রেক আপ করে দেই। ২০১৩ এর পর তার সাথে আমার আর যোগাযোগ হয় নাই। এটা আমার পরিবার বন্ধু-বান্ধব, মেহরাব, তার পরিবার মানে আমার চাচারা সবাই জানেন। কিন্তু সুস্ময় ওম সেই ছেলের খুব কাছের হওয়ায় তারা আমাকে এটা নিয়ে খোঁচাত। এরপর এই আলাপ দীর্ঘদিনের জন্য শেষ।’

তিনি লেখেন, ‘এরপর এই জাকির ভাই-সোহাগ ভাই কমিটিতে আমি আর সুস্ময় একি সাথে পোস্ট পেলাম।

আমি উপ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক আর সুস্ময় দে উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক। এবারের কমিটিতে আমি পোস্ট পেলাম সুস্ময় পেলো না বলে সে এখন ভুয়া কাগজ বানায় আমাকে হেয় করছে। তার মতে ২০১৪ থেকেই আমি বিবাহিত। তাই হলে সে ২০১৬ সালের কমিটির সময় কিছু না বলে এখন কেন আসছে? তার পেছনে কোন সিন্ডিকেট আছে তা আমার জানা আছে।’

ছাত্রলীগের এই নেত্রী আরও লেখেন, আবার বিয়ের হলফনামায় সাধারণত নোটারি পাবলিক করার ক্ষমতা আছে এমন ব্যক্তি বা উকিলের স্বাক্ষর থাকার কথা থাকলেও এখানে তা দেখতে পাওয়া যায়নি। ছাত্রলীগ নেতা সুস্ময় দে’র ফেসবুকে আপলোড করা জাল হলফনামায় বরের নাম সাদা কালিতে ডেকে দিতে দেখা গেছে। সাধারণ হলফনামায় লাল রংয়ের সিল মোহর ব্যবহার করার নিয়ম থাকলেও সুস্ময় দে’র ফেসবুকে দেয়া হলফনামায় তা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে আমার আলাপ হয় ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সূর্য রহমান শান্ত ভাইয়ার সাথে। শান্ত ভাই আমার আপন বড় ভাই এর স্কুল জীবনের বন্ধু। শান্ত ভাই ব্যাপারটি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং আমাকে সর্বাত্বকভাবে সহযোগিতা করবেন বলেন।

এমনি নারীদের রাজনীতি করতে নানান ধরনের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয় যা কেবল নারীরাই জানে। কারণ তাদের আশেপাশে থাকে হাজার সুস্ময়। তারা কেবলই সুবিধাবাদী বা কলঙ্ক লেপন করতে থাকে। সৎভাবে কোন মেয়ে আগালে তা তারা মানতে চায় না। আর এইসব সুস্ময় এর কারণেই সৎ পরিবারের সৎ মেয়েরা রাজনীতিতে আসে ভয় নিয়ে। এবং তারা বার বার বুকে কষ্ট চেপে কোনমতে আগায়। অনেকে ঝরে যায় রাজনীতি ঠেকে অনেকে অনেক করেও পিছপা হয় না।

কিন্তু এই কালে হুট করে মেয়েদের পেছনে লাগার জন্য হাজার হাজার সুস্ময় এসে গিয়েছে শুঁকুনের মতো। এরপরেও একজন নারীকে নিয়ে অপপ্রচারের বিচার চাইব না। সংগঠনের ভাইদের বিরুদ্ধে। কিন্তু এমনটি হলে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ কমবে।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন