সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে নামলে বেগম জিয়াকে মুক্ত করা সম্ভব : আলাল

  15-12-2019 08:46PM

পিএনএস ডেস্ক: বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ও যুবদলের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মেয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, ‘আজকে সমগ্র জাতির চোখে ধুলো দিয়ে প্রতারণা ও মিথ্যা বলার চক্রান্তে সেরা এই সরকার। এই সরকারের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ লড়াই ছাড়া বেগম জিয়াকে মুক্ত করা সম্ভব হবে কি-না এ নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। কারণ, বাংলাদেশের গণতন্ত্র, বাংলাদেশের মানবাধিকার, বাংলাদেশের স্বাধীনতার চেতনার মুক্তির সঙ্গে বেগম জিয়ার মুক্তির দাবি আজকে সমান্তরালভাবে চলছে। একটিকে বাদ দিয়ে আজকে আরেকটি চিন্তা করা সম্ভব নয়। তাই বেগম জিয়াকে মুক্ত করার জন্য প্রকৃতপক্ষে যদি আমরা সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে নামি তবেই কেবলমাত্র বেগম জিয়াকে মুক্ত করা সম্ভব।’

তিনি বলেন, ‘আজকে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী বলে বেড়াচ্ছেন জিয়াউর রহমান খন্দকার মোশতাকের ঘনিষ্ঠ লোক ছিলেন। আজকে তাঁর কাছে আমার প্রশ্ন মোস্তাক কার ঘনিষ্ঠ লোক ছিলেন? মোস্তাক সর্বপ্রথম কার ঘনিষ্ঠ লোক ছিলেন? আপনার বাবা মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের। তিনি যে আপনার বাবার ঘনিষ্ঠ লোক ছিলেন সেটা আগে বলেন। তার পরেরটা মিথ্যা হলেও সেটা মেনে নিবো।’

রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি।


মেয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘বিএনপি না করেও নির্যাতিত হতে হচ্ছে ড. কামাল হোসেনকে। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে তাঁর ওপর পর্যন্তও হামলা হয়। যিনি বাংলাদেশের সংবিধান রচনা করেছেন। যদি বিএনপি না করেও দেশ ছাড়তে হয় বিচারপতি এসকে সিনহাকে, যদি অত্যাচারিত হতে হয় মাহমুদুর রহমানকে, বিএনপি না করেও আলোকচিত্রী শহিদুল হককে কারাগারে যেতে হয়, বিএনপি না করেও যদি ব্যারিস্টার মঈনুলকে আদালতে লাঞ্ছিত হতে হয়, সেই দেশে এই সরকার এখনও মুক্তিযুদ্ধের ধোয়া তোলে, জিকির তোলে।’

তিনি বলেন, ‘চৌধুরী সাহেবদের বিবেক জাগ্রত হয়েছে, আর যাদের বিবেক জাগ্রত হওয়ার কথা তারা তাদের বিবেককে কবর চাপা দিয়েছে, এজন্য আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে থাকতে হচ্ছে।’

বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, ‘আজকে সরকার কর্তৃক গেজেট আকারে ১০ হাজার ৭৬৯ জন রাজাকারদের তালিকা করা হয়েছে। আর গাফফার চৌধুরী আজকে বলছেন- সেই রাজাকার নাকি প্রধানমন্ত্রীর আশেপাশে এমনকি প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের মধ্যেও আছে। তিনি আরও বলেছেন, ‘আমি তাদের নাম বলব না তাহলে আমি আর বাংলাদেশে আসতে পারবো না, আমাকে এদেশে আর আসতে দেয়া হবে না।’ তিনি এও বলেছেন- তার দুঃখ লাগে আজকের রাজাকাররা বসে বসে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরি করেন।’

বিএনপি'র এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের শৃঙ্খলের মধ্যে আবদ্ধ করে রেখে, দালাল মুক্তিযোদ্ধাদের বিবেককে বিক্রি করে, দেশে যে অনাচার সৃষ্টি করেছে আজকে বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনায় তা বলতেও আমাদের ঘৃর্ণা লাগে। আজকে বাংলাদেশের যে সরকার, এই সরকার বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূল চেতনা সাম্য, মানবিক, সামাজিক ন্যায়বিচার এর বিপরীত দিকে দাঁড়িয়ে স্বৈরাচারের ন্যায় দেশ পরিচালনা করছে। যে কারণে আওয়ামী লীগ নামক মেশিনের এক পাশ দিয়ে রাজাকার দিলে ওপাশ থেকে মুক্তিযোদ্ধা হয়ে বের হয়। আরেক পাশ থেকে মুক্তিযোদ্ধা ঢুকালে আওয়ামী লীগের বিপক্ষে বললে সে রাজাকার হয়ে যায়। এই হচ্ছে বর্তমান সরকার। তাদের সাথে কোন আপোষ চলতে পারে না।’

তিনি বলেন, ‘নাগরিকপঞ্জি নামে প্রতিবেশী দেশ থেকে জোর করে আমাদের দেশে মানুষ ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু এই সরকার সেটা বলতো পর্যন্ত সাহস পাচ্ছে না, বলা হচ্ছে এটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু আমরা তাদের শুধু দেখি ওবায়দুল কাদেরের কাউয়া তত্ব নিয়ে বিশ্লেষণ করতে এবং প্রধানমন্ত্রীর উল্টাপাল্টা শ্লাব নিয়ে বিশ্লেষণ করতে।’

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, বেগম সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলনসহ সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সহ- জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, ওলামা দলের আহবায়ক হাফেজ মাওলানা শাহ মোহাম্মদ নেসারুল হক প্রমুখ।

পিএনএস/মো. শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন