সরকারের পালানোর পথ রুদ্ধ হয়ে যাবে: রিজভী

  21-01-2020 01:59PM

পিএনএস ডেস্ক: কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে সংসদ ভেঙে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়া না হলে সরকারের পালানোর পথ রুদ্ধ হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, এই অনির্বাচিত নিশিরাতের সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ঘোষণা করুন। তা নাহলে রাজপথে জনবিস্ফোরণ রোধ করতে পারবেন না।

তিনি বলেন, দীর্ঘ প্রায় দুই বছর ধরে প্রতিহিংসার রোষে কারাবন্দি বিনা চিকিৎসায় পঙ্গুপ্রায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চান দেশের প্রতিটি মানুষ। আমরা গুরুতর অসুস্থ দেশনেত্রীকে দ্রুত নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, দেশনেত্রীকে বিনা চিকিৎসায় কারারুদ্ধ রেখে তার জামিনে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সরাসরি বাধা দেয়া হচ্ছে। তাকে সুচিকিৎসা থেকেও বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। বিচারকের আসনে বসে আওয়ামী লীগের কথামতো যেসব বিচারক নিরপরাধ মানুষের সঙ্গে অন্যায় আচরণ করছেন তাও দেশবাসী দেখছে।

তিনি আরও বলেন, তারেক রহমান লন্ডনে জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকীর আলোচনা সভায় মাতৃভূমির ভৌগোলিক স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ আন্দোলনে রাজপথে নেমে আসার যে ডাক দিয়েছেন তাতে দলমত নির্বিশেষে দেশপ্রেমিক প্রতিটি মানুষকে এক কাতারে এসে সাড়া দিতে ও সকলকে সক্রিয় শরিক হতে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

সাবেক এ ছাত্রনেতা বলেন, প্রায় প্রতিদিন সীমান্তে বাংলাদেশের নাগরিকদের পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। গত ১০ বছরে প্রায় ৩৫০ জন নিরীহ বাংলাদেশিকে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে গুলি করে হত্যা করেছে বিএসএফ। নানা অজুহাতে ভারত থেকে পুশব্যাক চলছে, বাংলাদেশের প্রদিবাদ করার সাহস নেই। পররাষ্ট্রনীতি হওয়া উচিত পারস্পরিক স্বার্থ ও মর্যাদার ভিত্তিতে অথচ বাংলাদেশ নির্লজ্জভাবে চালু করেছে স্বামী-স্ত্রীর কূটনীতি।

তিনি বলেন, আমরা অব্যাহতভাবে বলে আসছি ডিজিটাল ডাকাতির এবং লুটপাটের অপর নাম ইভিএম। প্রতিবেশী ভারতের চেয়ে ১১ গুণ বেশি টাকায় দুর্নীতির মাধ্যমে ইভিএম ক্রয় করে জনগণের ওপর জোর করে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। ইভিএম ব্যবহারের মূল লক্ষ্য অর্থ লুটপাট এবং বর্তমান ভোট ডাকাত সরকারের লোকদেরকে জনপ্রতিনিধি বানানো। তাদের কাজ হলো একদিকে রাতের অন্ধকারে ভোট ডাকাতি অন্যদিকে সারাবিশ্বে বাতিল হয়ে যাওয়া ভোট চুরির ডিজিটাল যন্ত্র ইভিএম কেনার নাম করে শত শত কোটি টাকা লুটপাট।

রিজভী বলেন, জাতীয় কিংবা স্থানীয় নির্বাচনে যেভাবে বিএনপিকে হারিয়ে দেয়া হচ্ছে, এটা আসলে বিএনপির-ই হার নয়, বরং দেশের মানুষকে হারিয়ে দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশকে হারিয়ে দেয়া হচ্ছে। কারণ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি হেরে গেলে সেটি হতো বিএনপির হার। বিএনপি কিংবা প্রতিপক্ষকে যেভাবে হারানো হচ্ছে, এর বিরুদ্ধে সবাই রাজপথে না নামলে আগামী দিনগুলোতে নিরাপদ দূরত্বে থাকলেও কারও মুখ খোলার সুযোগ রাখবে না নিশিরাতের এই অবৈধ সরকার।

তিনি বলেন, বলেন, গতকাল চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে এরশাদ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা এবং ২৪ জনকে হত্যার ঘটনায় ৫ আসামিকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। আমাদের বক্তব্য হলো- এই মর্মান্তিক ঘটনাটি যখন সংঘটিত হয় তখন এরশাদ ক্ষমতায়, অথচ হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ছিল আওয়ামী লীগের বড় সহযোগী। কিন্তু এরশাদসহ সেই সময় ক্ষমতাসীনদের কারওরই এই মামলায় নাম ছিল না।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন