সময় এসেছে আরেকটি মুক্তিযুদ্ধ করার : মেজর হাফিজ

  22-02-2020 02:48PM


পিএনএস ডেস্ক: দুই নাম্বার সারির একটি রাজনৈতিক দলকে বাংলাদেশের বিরোধী দল বানানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি'র ভাইস চেয়ারম্যান মেজর হাফিজ। তিনি বলেন, এখন সারাদেশে দুই নম্বরের জয়ধ্বনি চলছে। এখন বিএনপি কয় নাম্বার দল হবে সেটা তাদের নিজেদের নির্ধারণ করতে হবে। ৩০ বছর যাবৎ আমরা এই দল করছি। আজ সেই দলের নেত্রী দুই বছরের অধিক সময় ধরে কারাগারে। আমরা নিরবে চুপচাপ বসে আছি। কই রাজপথে তো এর কোনো সংগ্রামী প্রতিবাদী বার্তা আমরা দেখতে পাইনি।

শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

মেজর হাফিজ বলেন, আজকে বাংলাদেশ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে। কিছুদিন আগে খোদ ঢাকা শহরে ভোট ডাকাতি হয়ে গেল। এখানে এতো লোক উপস্থিত কেউ ভোট দিতে পারেননি। সাধারণ জনগণ কেউ ভোট কেন্দ্রে যায়নি।

তিনি বলেন, অর্থনীতি বিপর্যস্ত। ব্যাংকসমূহ লুটপাট হয়ে গেছে। সর্বশেষ রুটের ভাগ নিচ্ছে খোদ সরকার। ইতোমধ্যে তারা জানিয়ে দিয়েছেন ব্যাংকসমূহ যদি লুট হয় কে কত পাবেন। অর্থাৎ অদূর ভবিষ্যতে সরকারি-বেসরকারি সব ব্যাংক সমূহ দেউলিয়ার পথে অগ্রগামী হচ্ছে। কেন স্বাধীন দেশে এই অবস্থা হলো? আজকে এই ভাষার মাসে দাঁড়িয়ে আমরা কি শুধু অশ্রু বিসর্জন করব? গণতন্ত্র নেই সেজন্য শুধু দুঃখ প্রকাশ করব? নাগরিক হিসেবে আমাদের কি কিছুই করার নেই?

তিনি আরো বলেন, আজকে বড় বড় উচ্চপদস্থ ব্যক্তিরা কচুরিপানায খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। কচুরিপানায় নাকি প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন আছে। এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র যারা আমাদের সবকিছু নিয়ে নিয়েছেন, তাদের দেয়ার মতো আমাদের কাছে অবশিষ্ট আর কিছু নেই। পদে পদে তাদের আধিপত্যের মুখে আমরা। তাদের সাথে নাকি আমাদের স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক।

বিএনপি'র এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, আজকে যেমন চতুর্দিকে কবরের ন্যায় নিরব শান্ত পরিস্থিতি, এরকম থাকবে না। বাঙালি কোনো স্বৈরাচারকে সহ্য করেনি। ব্রিটিশদের বিদায় করেছে, পাকিস্তানিদের বিদায় করেছে, এবার বাঙ্গালী স্বৈরাচারকে বিদায় করার সময় সমাগত। দেশের জনগণকে আমরা আহ্বান জানাবো আপনারা রাজনৈতিক দলের দিকে তাকিয়ে থাকবেন না। দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা এবং আইনের শাসন কায়েম করা প্রত্যেক নাগরিকের অবশ্যই কর্তব্য।

তিনি বলেন, এই দেশে স্বাধীনতা যুদ্ধে সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেছেন। রাজনৈতিক দলগুলো যখন প্রধানমন্ত্রীত্বের স্বপ্নে বিভোর তখন সাধারণ মানুষ সৈনিকদের নেতৃত্বে রাজপথে নেমেছিল। গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে পড়েছে, মুক্তিযুদ্ধের শুভসূচনা করেছে এবং দেশকে স্বাধীন করেছে। সময় এসেছে আরেকটি মুক্তিযুদ্ধ করার। এই মুক্তিযুদ্ধে জাতীয়তাবাদী শক্তি ও সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করবে। বিএনপি এবং অন্যান্য সব বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যদের আহ্বান জানাব যদি দেশনেত্রীর মুক্তি চান, গণতন্ত্রের মুক্তি চান আপনারা স্ব উদ্যোগে রাজপথে নেমে আসবেন।

মেজর হাফিজ বলেন, এই সরকার একটি দুর্বল সরকার। তারা ইতোমধ্যে বলে দিয়েছে ব্যাংকসমূহ দেউলিয়া হয়ে যাবে। তারা বলে দিয়েছে আপনাদেরকে কচুরিপানা খেতে হবে। তারা বলে দিয়েছে এই দেশে আর জনগণের আর ভোট দেয়ার প্রয়োজন নেই। তারা কৌশলে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছে। আশা করেছিলাম এই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পরে বিএনপি রাজপথে নামবে। দুইজন সম্ভাবনাময় তরুণকে আমরা নামিয়েছিলাম ভোটের মাঠে। তারা প্রাণপণ চেষ্টা করেছে। কিন্তু এই সরকারের প্রশাসনের দাপটের জন্য জনগণ ভোটকেন্দ্রে আসতে পারেনি। যদি গণতন্ত্র চান যদি সিকিমের অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে চান যদি আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে চান, তবে এই সব বাধাকে আমাদের উপেক্ষা করতে হবে। রাজপথে দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনতে হবে এবং এর মাধ্যমেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের সভাপতি কালাম ফয়েজীর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর হাফিজ, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, নির্বাহী কমিটির সাদস্য বিলকিস ইসলাম, কৃষক দলের সদস্য কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন, সাংবাদিক এইচ এম আল আমিন প্রমুখ।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন