ওয়েস্টিনের ২৬ কক্ষে পাপিয়ার কাস্টমার, সহায়তায় ম্যানেজার!

  25-03-2020 01:35AM

পিএনএস ডেস্ক: যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামিমা নূর পাপিয়া ওরফে পিউ এবং তার স্বামী গুলশানের অভিজাত যে হোটেলে ডেরা বানিয়ে দিনের দিন পর অবৈধ অর্থ আয় করেছেন, সেই ওয়েস্টিনের কর্মীদেরকেও সঙ্গী হিসেবে পেয়েছিলেন তারা। হোটেলটির ২৬টি কক্ষকে অবৈধ কারবারে বিভিন্ন সময় পাপিয়া ও তার স্বামী ব্যবহার করতো বলে সিআইডির তদন্তে উঠে এসেছে। আর এ কাজে তাদেরকে সহায়তা করতেন হোটেলটির বার ম্যানেজার মো. বশির।

গত শনিবার (২১ মার্চ) সিআইডির পক্ষ থেকে পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরীর (মতি সুমন) বিরুদ্ধে দায়ের করা প্রথম নতুন একটি মামলায় এসব অভিযোগ করা হয়েছে। গুলশান থানায় মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ আইনে সিআইডির পরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামানের দায়ের করা মামলায় পাপিয়া ও সুমন ছাড়াও আসামি করা হয়েছে আরও চারজনকে।

অন্য আসামিরা হলেন- পাপিয়া-সুমনের সহযোগী সাব্বির খন্দকার, শেখ তায়্যিবা নূর, তেজগাঁও এফডিসি গেটসংলগ্ন কার একচেঞ্জের অন্যতম মালিক যুবায়ের আলম এবং হোটেল ওয়েস্টিনের বারের ম্যানেজার মো. বশির। এদের মধ্যে যুবায়ের দেশের বাইরে রয়েছেন আর বশির পলাতক। আর সাব্বির ও তায়্যিবা আগেই পাপিয়া-সুমনের সঙ্গে গ্রেপ্তার হয়েছেন। গাড়ির দোকান ‘কার এক্সচেঞ্জে’ এ পাপিয়ার কোটি টাকার বিনিয়োগ আছে বলে আগেই জানিয়েছিল র‌্যাব।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে গত ২২ ফেব্রুয়ারি পাপিয়া, তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী (মতি সুমন) এবং তাদের দুই সহযোগী গ্রেপ্তার হন। পরে র‌্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গ্রেপ্তারের সময় ওই চারজনের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, ২ লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ টাকার জাল নোট, ৩১০ ভারতীয় রুপি, ৪২০ শ্রীলঙ্কান রুপি ও সাতটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। ঢাকা ও নরসিংদীতে পাপিয়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিপুল সম্পদের খোঁজ পাওয়ার কথা জানিয় র‌্যাব।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাফী উল্লাহ বুলবুল বলেছিলেন, অত্যন্ত বিলাসবহুল জীবনযাপনে অভ্যস্ত এই নারী রাজধানীর গুলশানের একটি অভিজাত হোটেল ভাড়া নিয়ে ‘অসামাজিক কার্যকলাপ’ চালিয়ে যে আয় করতেন, তা দিয়ে হোটেলে বিল দিতেন কোটির টাকার উপরে। এই নারীর নামে ওই হোটেলের ‘প্রেসিডেনশিয়াল স্যুইট’ সব সময় বরাদ্দ থাকত। নিজের এবং কাস্টমারদের মদ-বিয়ার পান করানো বাবদ হোটেলে প্রতিদিন প্রায় আড়াই লাখ টাকা পরিশোধ করতেন তিনি। এই হোটেলে নিয়মিত কয়েকজন তরুণী থাকত, যারা তার ‘কাস্টমারদের’ বিভিন্নভাবে নিয়ন্ত্রণ করত। এজন্য তাদের মাসিক বেতন বরাদ্দ ছিল।

'কার এক্সচেঞ্জ' ছাড়াও ‘কেএমসি কার ওয়াশ অ্যান্ড অটো সলিউশনস' নামের একটি প্রতিষ্ঠানে ৪০ লাখ টাকা বিনিয়োগ আছে তাদের।

পাপিয়ার স্বামীর থাইল্যান্ডে বারের ব্যবসা রয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অস্ত্র-মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা বিচারাধীন। তিনি স্ত্রীর মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের অসহায় নারীদের অনৈতিক কাজে ব্যবহার করেন।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন