সাঈদীপুত্রের সঙ্গে বাবুনগরীর ছবি নিয়ে তোলপাড়, অবশেষে যা জানানো হলো!

  22-05-2020 12:51AM

পিএনএস ডেস্ক : ২০১৮ সালে তোলা সেই ছবি- মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর পুত্র শামীম সাঈদী (বাঁয়ে) এবং হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী

২০১৮ সালের ১৯ রমজান রাজধানীর ঢাকার পুরানা পল্টনে একটি কুরিয়ার সার্ভিসের কার্যালয়ে মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর ছেলে শামীম সাঈদীর এক সহকারী হাটহাজারী বড় মাদ্রাসা এবং হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর একটি ছবি তোলেন।

দুই বছর আগের এই ছবিকে পুঁজি করেই নাকি আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলামের প্রকাশক বাবুনগরীকে জামায়তি বানানো ফন্দি-ফিকির করা হচ্ছে।সাঈদীপুত্রের সহকারীর তোলা ছবিই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে বাবুনগরীর জন্য। এমনটাই মন্তব্য করেছেন আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর একান্ত ব্যক্তিগত সহকারী মাওলানা ইন'আমুল হাসান ফারুকী। ছবিটি নিয়ে নানা মিথ্যা কল্পকাহিনী সাজিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলেও দাবি জানান তিনি।

সাঈদীপুত্র শামীম সাঈদীর সঙ্গে আল্লামা বাবুনগরীর পূর্ব পরিচয় ছিল না জানিয়ে দুবছর আগেকার ঘটনার আদ্যোপান্ত নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠান মাওলানা ইন'আমুল হাসান।

বিবৃতিতে ইন'আমুল হাসান বলেন, ‘২০১৮ সালের রমজানে আল্লামা বাবুনগরী হুজুর ঢাকায় যান হাটহাজারী বড় মাদরাসার চাঁদা সংগ্রহ করতে। প্রায় ১০ দিন তিনি ঢাকাতেই ছিলেন এবং মাদ্রাসার জন্য চাঁদা সংগ্রহ করেন। ওই সময় হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বাবুনগরী হুজুরকে জানালেন, ঢাকার পুরানা পল্টনের সুবহান ম্যানশনে এসএমএম নামে একটি নতুন কুরিয়ার সার্ভিস রয়েছে। সে কুরিয়ার সার্ভিসের মালিকদের একজন মাওলানা হানিফ সাহেব, তার বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে। তিনি কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানির পক্ষ থেকে হাটহাজারী মাদ্রাসার জন্য কিছু অনুদান দেবেন। তাই মাওলানা হানিফ সাহেব বাবুনগরী হুজুরকে সেখানে ইফতারের দাওয়াত দেন।’

বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘ওই দিন চাঁদা সংগ্রহ শেষে আসরের পরে হুজুর কুরিয়ার সার্ভিসটির কার্যালয়ে পৌঁছান। পরে সেখানে কোম্পানির সকল শেয়ার হোল্ডার ইফতারের জন্য উপস্থিত হন। ইফতারের ঠিক আগ মুহূর্তে একজন ব্যক্তি আসেন, যাকে হুজুর চিনতেন না। উপস্থিত অফিসের একজন ডিরেক্টর আওয়ামী লীগ নেতা জানালেন, তিনি মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর ছেলে শামীম সাঈদী।’

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, ‘সেদিন ইফতারের পর শামীম সাঈদী বাবুনগরী হুজুরের সাথে কথা বলতে চান। এ সময় তিনি বাবুনগরী হুজুরের পাশে বসা অবস্থায় উনার এক সহকারী সকলের অজান্তে মোবাইলে ছবি তুলে ফেলেন। তখন হুজুর বিষয়টা জানতে পেরে তার ওপর প্রচণ্ড রাগান্বিত হন এবং ছবিটি মোবাইল থেকে মুছে ফেলতে বলেন। তখন সাঈদীপুত্র হুজুরকে নিশ্চিত করে বলেন, “ছবিটা শুধু স্মৃতি হয়ে থাকবে, অন্য কিছু নয়।” তবে ওই ইফতার মাহফিলে সব রাজনৈতিক ঘরানার লোকজন উপস্থিত ছিলেন। আওয়ামী লীগের অনেক রাজনৈতিক নেতাও সেখানে ছিলেন। ওই দিন এটা আদৌ কোনো জামায়াত-শিবিরের মিটিং ছিল না। সেদিন মাদ্রাসার জন্য অনুদানের একটি চেক গ্রহণ করে হুজুর ওই কার্যালয় থেকে বের হয়ে যান। এখন পর্যন্ত তার সঙ্গে শামীম সাঈদীর কোনো যোগযোগ হয়নি।’

ইন'আমুল হাসান বলেন, ‘এ ঘটনার কয়েকদিন পর শামীম সাঈদী বাবুনগরী হুজুরের সঙ্গে তোলা ছবিটি ফেসবুকে আপলোড করেন। ২০১৯ সালে হুজুর অনুদানের জন্য ওই কুরিয়ার সার্ভিসের অফিসে যাননি।’

২০১৮ সালের ওই ছবিকে পুঁজি করে এখন মিথ্যা কল্পকাহিনী সাজানো হচ্ছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে প্রশ্ন রেখে আরও বলা হয়, ‘কেন সরকার বিরোধী ও জামায়াতি বানানোর জন্য মিডিয়ায় মিথ্যা নিউজ করানো হচ্ছে? ইফতার মাহফিলে বসার কারণে যদি হুজুর জামায়াতি হন তাহলে সেখানে অনেক বড় আওয়ামী লীগের নেতারাও ছিলেন, তাহলে কি হুজুরকে আওয়ামী লীগও বলা যাবে?’

মাওলানা ইন'আমুল হাসান বিবৃতিতে আরও বলেন, ‘২০১৮ সালে যখন সাঈদীপুত্র ফেসবুকে ছবিটি পোস্ট করেছিলেন, তখন কোনো কথা ওঠেনি। দুবছর পর ঘটনার আদ্যোপান্ত না জেনে আজ কেন ছবিটি সামনে আনা হলো? গোপন বৈঠক বলে পুরোনো সেই ছবি প্রচার করে আলেম-ওলামা ও সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত করতে একটি কুচক্রী মহল সক্রিয় হয়ে উঠেছে, যা বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও অবাস্তব।’

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন