মন্ত্রীর পদ থেকে কাদেরকে পদত্যাগ করতে বললেন রিজভী!

  15-09-2020 03:28PM

পিএনএস ডেস্ক: নিজের আত্মমর্যাদার কথা চিন্তা করে হলেও মন্ত্রীর পদ থেকে ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিএনপি চিরাচরিত মিথ্যাচার করছে বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সাম্প্রতিক মন্তব্যের জবাবে রিজভী বলেন, বিএনপি বলেছে এই সরকার করোনা রোগীদের পরিসংখ্যানে ৮২ হাজার রোগীর নাম বাদ দিয়েছে। তিনি (কাদের) বলেছেন, ৮২ হাজারের তথ্য কোথায় পেয়েছেন এবং এই তালিকার তথ্য জানতে চেয়েছেন। ওবায়দুল কাদের সাহেবের উদ্দেশ্যে বলতে চাই- বানোয়াট এবং অসত্য কথা বলার ফেরিওয়ালা আপনারা। আপনার অবগতির জন্য জানাচ্ছি, গত ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে বহুল প্রচারিত ইংরেজি পত্রিকা ‘নিউ এজ’র প্রধান শিরোনাম দেখুন। ৮২ হাজার নয়, ৮৪ হাজার করোনা রোগীকে সরকারের ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

‘ডিজি হেলথ সার্ভিস (স্বাস্থ্য অধিদফতর) কি সরকারি নাকি বিরোধীদলীয় প্রতিষ্ঠান? এটি প্রত্যক্ষভাবে একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। তাদের ডাটাবেজ থেকে ৮৪ হাজার রোগীর নাম হারিয়ে গেল কীভাবে? এই তথ্যটি এমন একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে যেটি জনগণের নিকট বিশ্বাসযোগ্য গণমাধ্যম। এই সংবাদ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সরকারি ডাটাবেজে এলাকাভিত্তিক করোনার সংখ্যা ও সংক্রমণের হারেরও তেমন তথ্য নেই। এখন আমি বলতে চাই- উল্লিখিত পত্রিকাটি পাঠ করে ওবায়দুল কাদের সাহেবের নিজের আত্মমর্যাদার কথা চিন্তা করে হলেও এই মুহূর্তে পদত্যাগ করা উচিত। জনসম্মুখে ডাহা মিথ্যা বলার পর একজন মন্ত্রীর কোনোক্রমে দায়িত্বে থাকা তার মর্যাদার সাথে বেমানান।’

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, সরকার শুরু থেকেই করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে মিথ্যাচার করেছে। জাতির সামনে প্রকৃত তথ্য তুলে ধরা হচ্ছে না। করোনার টেস্ট কমিয়ে দিয়ে রোগী নেই বলে জনগণকে ধাপ্পা দিয়ে বিপদের মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে। এই ধাপ্পাবাজির উদ্দেশ্য হচ্ছে করোনা থেকে জনদৃষ্টিকে অন্যদিকে সরিয়ে রাখা। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকা দেয়ার জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও মিথ্যাচারের যন্ত্র বানিয়েছে সরকার। করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। এখনো আক্রান্ত ও মৃত্যু সংখ্যার মধ্যে কোনো আশার আলো দেখা যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, সরকারি হিসাবে গতকাল করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যায় চীনকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। দৈনিক সংক্রমণের পাশাপাশি দৈনিক মৃত্যুতেও অনেক দেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। দেশের মানুষের আশঙ্কা, এভাবে চলতে থাকলে এদেশে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে। দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। করোনায় মৃত্যুবরণ ও সংক্রমণে হাসপাতাল কিংবা কবরস্থানেও যেন ঠাঁই নেই।

রিজভী বলেন, খিঁচুড়ি রান্না প্রশিক্ষণের জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ পাঠানো হচ্ছে। ইতোপূর্বে পুকুর খননের প্রশিক্ষণের জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ পাঠানো হয়েছিল। এছাড়া পাবদা মাছ চাষের প্রশিক্ষণ নিতে সরকারি কর্মকর্তারা বিদেশে গিয়েছিলেন। এসব অভিনব ও হাস্যকর তামাশা কেবল শেখ হাসিনার আমলেই সম্ভব। আবহমানকাল ধরেই উল্লিখিত বিষয়গুলি সাধারণ মানুষের রপ্ত। অথচ সেইসব বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ পাঠানোতে একটি প্রবাদ মনে পড়ে যায়- ‘সরকারি মাল দরিয়া মে ঢাল’। মোটা অংকের বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে ফালতু কাজে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ পাঠানো মূলত মিডনাইট নির্বাচনে সহায়তা করার জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের উপঢৌকন দেয়া।

তিনি বলেন, যে সরকারের আমলে একটা বালিশের দাম সাড়ে সাত হাজার টাকা এবং একজন রোগীকে আড়াল করতে সাড়ে সাঁইত্রিশ লাখ টাকার পর্দা লাগে, সেই সরকার যে আগাগোড়াই লুটপাটের চেতনায় অনুপ্রাণিত তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন