“পাহড় ধ্বস নয় এ যেন, পরিকল্পিত হত্যাকান্ড”

  24-07-2017 03:49PM

পিএনএস ডেস্ক: গত রমজানে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের কয়েকটি জেলায় অতিবৃষ্টির কারণে পাহাড় ধ্বসে দেড় শতকের ও অধিক লোক প্রাণ হারিয়েছে। এমনকি আরো শত শত লোক আহত হয়েছে ও বাস্তু ভিটা হারিয়েছে। শুধু তাই নয় উদ্ধার কাজ চালাতে গিয়ে আমাদের দুই জন সেনা কর্মকর্তা সহ চারজন সেনা নিহত ও দশজন সেনা গুরুতর আহত হয়েছেন।

উল্লেখ্য যে, ২০০৭ সালেও অনুরূপ শতাধিক লোক সর্বগ্রাসী পাহাড় ধ্বসে প্রাণ হারিয়েছে। এছাড়া পার্বত্য অঞ্চলে প্রায় বছরেই দুই চারজন করে পাহাড়ে বসবাসরত সাধারন মানুষ পাহাড় ধ্বসে প্রাণ বিসর্জন দিয়ে আসছে। এইরূপ পাহাড় ধ্বসে প্রান হারানো যেন একটি রেওয়াজে পরিনত হয়েছে।

আমাদের পাহাড় বিশেষজ্ঞ সহ বিভিন্ন সংস্থার লোকজন বহুবার জরিপ চালিয়ে তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন ও পাহাড় ধ্বসের কারন গুলো সরকার ও প্রশাসনের সামনে তুলে ধরেছেন্ যাহা জাতীর সামনে উজ্জল সূর্যের ন্যয় পরিস্কার।

প্রাকৃতিক রূপবৈচিত্রের লীলা ভূমি, ও সম্পদে ভরপুর আমাদের পার্বত্য জেলা সমূহ দেশের বিশাল আয়ের উৎস, এখানকার গাছপালা মাটি-বালি, পাকপাখালী ও বন্যপ্রাণী সহ প্রাকৃতিক পরিবেশ বিশ্ব দৃষ্টি নন্দন কেড়ে নিয়েছে। এমনকি আমাদের দেশকে আরো সমৃদ্ধ করেছে। শুনা যাচ্ছে আন্তর্জাতিক ভাবে ও আমাদের এই অঞ্চলটির প্রতি লোলুপদৃষ্টি পড়েছে। এই গুরুত্বপূর্ন এলাকা ও মূল্যবান সম্পদ রক্ষার্থে আমাদের দেশের পত্ম তত্ত্ববিধগন সময়ে সময়ে সরকার ও পশাসনকে এগিয়ে আসার তাগিদ দিয়েছেন।

অত্যান্ত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় স্বাধীনতার পর থেকে পর্যায় ক্রমিক আমাদের দেশের সরকার গুলোর ছত্রচায়ায় ও প্রশাসনের নাকের ঢগায় এক পাল পাহাড় খেকো গাছ খেকো , মাটি খেকো, বালি ও পাথর খেকো অবৈধ ভাবে প্রভাব বিস্তার করে পাহাড়ের গোরা থেকে অনবরত মাটি সরিয়ে নিয়ে জমি দখল করে নিচ্ছে পাহাড় থেকে বড় গাছপালা জোড় পূর্বক কেটে উজাড় করে দিচ্ছে। পাহাড়ের গোড়ায় যখন মাটি থাকেনা তখন বৃষ্টিপাতের পরিমান একটু বেশি হলেই পাহাড় ধ্বসেপরে প্রতি বছরই প্রাণ হানি ঘটে থাকে। পাহাড়ের গোড়া থেকে বেশি রকম মাটি সরিয়ে নেওয়ার কারনে ও খুটি হিসাবে গাছ গুলো কেটে ফেলার কারনে এবারের তিন দিন ব্যাপি একটানা অতি বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ে বসবাসরত নিম্ম আয়ের বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠির মানুষ গুলোর মধ্যে থেকে দেড়শতাধিক জীবন বলী হয়েছে। এমন কি লক্ষ লক্ষ টাকা মূল্যের গরু ছাগল ও পোষা প্রাণী মৃত্যু বরণ করেছে। এছাড়া আরও শত শত মানুষ আহত হয়েছে এবং শত শত স্থাপনা বিনষ্ট হয়ে পাহাড়ে বসবাসরত মানুষ ছিন্নমূলের মতো মাথা গোজার ঠাঁই হারিয়েছে।

এহেন নিষ্ঠুর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে যারা আজ এত গুলো মানুষকে হত্যা করেছে তাদেরকে তদন্তের মাধ্যমে বিচারের আওতায় এনে বিচারের কাঠ গড়ায় দাড় করিয়ে এই কৃত্তিম হত্যা যজ্ঞের বিচার করার সময় এসেছে। এটা এখন সয়ের দাবী।

আমাদের দেশের সরকার গুলোর আশ্রয়ে ও প্রশ্রয়ে প্রশাসনের অপ্রত্যাশীত সহযোগীতায় পাহাড় খেকোদের মতো অনৈতিক পথে সারা দেশে , যেমন- নদী তীরবর্তী এলাকায় বালু খেকো, খাস জমি খেকোদের খুজে বের করে বিচারের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করলেই এহন পরিকল্পিত হত্যা যজ্ঞ ও নদী তীরবর্তী মানুষ গুলো নিরাপদে বেচেঁ থাকার সুযোগ পাবে।

লেখকঃ মো. রুহুল আমীন চৌধুরী রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবক, সহ-সভাপতি কচুয়া কল্যাণ সংঘ, ঢাকা । সাবেক সভাপতি বাংলাদেশ আন্তঃ বিঃ বিঃ ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন, সাবেক চাঁদপুর জেলা পরিষদে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির নির্বাচিত সদস্য।

পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন