ওখানে ধর্মগুরু এখানে ‘ভন্ডপীর’: ধর্মের ব্যবসার আড়ালে কুৎসিত রূপ

  29-08-2017 08:05PM

পিএনএস ডেস্ক : পীর হাবিবুর রহমান
বিশ্বে অন্যতম শীর্ষ ক্ষমতাধর রাষ্ট্র ভারতে ধর্মগুরুদের যে কুৎসিত, যৌন বিকৃত চেহারা উন্মোচিত হচ্ছে তাতে অবাক ও বিস্মিত হতে হয়। একুশ শতকের বিজ্ঞান মনষ্ক, তথ্য প্রযুক্তির চূড়ান্ত বিকশিত আধুনিক যুগে ভাবলে অবাক লাগে, প্রাচ্য কতটা পশ্চাদপদ হয়ে রয়েছে।


সম্প্রতি ভারতে ধর্ষণের অভিযোগে ধর্মগুরু, গুরমিত রাম রহিম সিংহকে গ্রেপ্তার করে সিবিএ ২০ বছরের কারাদন্ড ও অর্থদন্ড দিয়েছে। বলা হচ্ছে, এত ধর্ষণ আর হত্যা মামলার অভিযোগে অভিযুক্ত এই ধরণের অপরাধীর প্রাপ্য শাস্তি হওয়া উচিত ছিল মৃত্যুদণ্ড। প্রায় ১৪০ কোটি মানুষের দেশ ভারত শিক্ষায়, দারিদ্রতায়, নাগরিক সুযোগ-সুবিধা ভোগে এখনো অনেক পিছিয়ে। অন্যদিকে, রাজনীতি, ধর্মনির্ভর পথে হাঁটতে গিয়ে ভারত জুড়ে এখনো এইসব ধর্মগুরুদের আশ্রম আর তান্ত্রিক সাধকদের মতো নরবলি দেয়া, কাপালিকদের আখড়া ও জমজমাট ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। ‍


দণ্ডিত তথাকথিত গুরুবাবা গুরমিত রাম রহিম সিংহের যেমন নাম তেমন তার শক্তি। অনিল কাপুরের ফিল্ম দেখে নামের মধ্যেই সকল ধর্মকে ধারণ করে নিজেকে ইশ্বরের জায়গায় নিয়েছিলেন। তার ভক্তের সংখ্যা প্রায় কোটি। সম্পদের পরিমাণ ৭০০ কোটি রূপির বেশি। জাঁকজমকপূর্ণ আলখেল্লা ফিল্মি স্টাইলে মাফিয়া ডনের মতো চলাফেরা করতেন তিনি। ভোগ-বিলাসের চরম শিখরে বাস করতেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে শুরু করে অনেক রাজনীতিবিদ, ক্ষমতাধর ব্যবসায়ী, এমনকি ভারতের ক্রিকেট দলের অধিনায়ক বিরাট কোহেলি তার দর্শন ও আর্শিবাদ নিয়েছেন।


একদিকে রাজনৈতিক নেতৃত্বের এই ধরণের ধর্ম ব্যবসায়ী, যৌন বিকৃত সন্ত্রাসী মাফিয়া ডন বা তথাকথিত গুরু বাবার শক্তিই বাড়াই নি, ব্যবসায়ীরাও তাদের আশ্রমে দু’হাতে টাকা ঢালেন। উচ্চশিক্ষিত ব্যবসায়ীরা গুরু দক্ষীনা দানে যেমন কাপর্ণ্য করেন না তেমনি ভোটের লোভে রাজনৈতিক নেতারাও গরু দর্শন করে কুর্নিশ করতে কার্পণ্য করেন না।


সাধারণ মানুষকে একদিকে ধর্মের মতো আবেগতাড়িত অনুভূতির অন্ধ বিশ্বাস যেমন টানেন, তেমনি আশ্রমজুড়ে গড়ে তোলা সন্ত্রাসের দেয়ালে বন্দি করেন। সেই সঙ্গে রয়েছে রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক শ্রেণীর পৃষ্ঠপোষকতা। সৃষ্টিকর্তার নৈকট্য লাভের চেয়ে গুরুদেব তার নৈকট্য লাভের দীক্ষা দিতে দিতে যৌন বিকারগ্রস্ত হয়ে পরেন। ধর্মের আড়ালে অবাদ যৌনজীবনে যাকে পছন্দ হয় তাকেই শয্যাসঙ্গী করেন। ধর্মের আড়ালে কুৎসিত, কদর্য রূপ দেখে যারা প্রতিবাদ করেন কিংবা চমকে উঠেন তাদেরকে হয় মৃত্যু না হয় ভয়ের সন্ত্রস্ত জীবন ভোগ করতে হয়।


উচ্চশিক্ষিত মেয়েরদেরকে জ্ঞান বিজ্ঞানের এই যুগে কুসংস্কারাচ্ছন্ন মা-বাবারা আশ্রমে পাঠিয়ে দেন, সাব্ধী হয়ে গুরুবাবার সেবা করে স্বর্গের পথ সুগম করতে। সেখানে তাদের হয়ে যেতে হয় তথাকথিত গুরুবাবার যৌনদাসী। আশ্রমে রক্ষিতা হয়ে তাদের বাঁচতে হয়। রাতের পর রাত বিকৃত যৌন নির্যাতন ভোগ করতে হয়। গুরুদেব ছাড়া আশ্রমে ঠাঁই পাওয়া কোনো পুরুষের পুরুষত্বও রাম রহিম রাখতে দেন না। নানা মনোবাসনা নিয়ে যাওয়া পুরুষদের কেউ কেউ তথাকথিত ভণ্ড গুরুদেবের প্রমাণ ও দক্ষীনাই দিতে হয় না; স্ত্রী কন্যাকে দিয়ে ন্বিঃস্ব হয়ে ফিরতে হয়। এই রাম রহিম সিংহের কাছ থেকে তার পালিত কন্যাও রক্ষা পাননি। ধর্মের নামে বিকৃত যৌনাচারের সঙ্গী হতে হয় তাকে। তার এখানে কোনো নারীর আগমন মানেই গুরুদেবকে দেহ-মন-আত্না সপে দিয়ে কৃষ্ণ বা ইশ্বরের জায়গা দিতে হয়।


দুজন সাহসী তরুণী এই ধরণের ভণ্ড, ধর্মজীবী তথাকথিত গুরুদেবের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের না করলে, অভিযোগ না দিলে এই আশ্রমের পতন ঘটতো না। তাকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে যুদ্ধ করতে হয়েছে। ৩৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন কুসংস্কারাচ্ছন্ন, ধর্মান্ধতার কারণে। ভারতে অসংখ্য এ রকম গুরুদেব ও তাদের আশ্রম এবং সেখানে অর্থ বিত্ত গড়ে তোলার পাশাপাশি ভোগ বিলাসের জীবন আর বিকৃত যৌনাচার, ধর্ষণ বহাল তবিয়তে চলছে।


কেবল হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যেই যে এমন ঘটনা ঘটছে তা নয়, ভারতের আজমীর শরীফে ইসলাম ধর্মের অন্যতম প্রচারক খাজা মাঈন উদ্দিন চিশতী (রঃ) এর মাজার জিয়ারত করতে গিয়ে আমাকে তিক্ত অভিজ্ঞতা নিতে হয়। ভারতের মুসলমানরা তো রয়েছেনই বাংলাদেশের মুসলমানরাও এই মহান আল্লাহর অলির মাজার জিয়ারতে যান। কোনো মাজারেই শায়িত অলিদের প্রতি শেজদা দেয়া ইসলাম ধর্মে শিরক বলেছে। কিন্তু ধর্মীয় আবেগ তাদের ঠেকাতে পারে না। এনমকি ধর্মের পথে চাওয়ার জায়গা যেমন একমাত্র আল্লাহ, তেমনি দেয়ার মালিকও তিনি নিজেই। মাজার জিয়ারত করে অলিসহ নিজের জন্য যা কিছু চাইতে হয়, আল্লাহর চাইতে হয়। সেখানে দেখলাম, অসংখ্য ভিড়ের মধ্যে আজমীর শরীফের খাদেমরা লোভের হাত বাড়িয়ে বসে আছেন। টাকা টাকা করছেন, আর সবাইকে শেজদা দিতে বলছেন। দুটোই ধর্ম অনুমোদন করে না। এই টাকাগুলো খাদেমরা ভাগ-বাটোয়ারা করে নেন। আর শেজদা দেয়ানোর মতো অন্যায় অনৈসালিমক কাজটি করেন। আল্লাহ ছাড়া কাউকে শেজদা করার বিধান নেই। কিন্তু ধর্মীয় আবেগে অন্ধ মানুষ সেই ভুলটি করেন আর মাজারে নিয়োজিত খাদেমরা ধর্মের নামে মাজার ব্যবসার যে দরজা খুলে রাখেন সেখানে সুযোগটি নেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাছ থেকে।


বাংলাদেশেও সিলেটের হযরত শাহজালাল (রঃ) এর মাজারে যতবার যাই মসজিদে নামাজ পড়ি, আল্লাহর এই অলিসহ সেখানকার কবরে শায়িত অনেকের কবর জিয়ারত করে আল্লাহর দরবারে মোনাজাত করি তাদের জন্য। মাজার সংস্কারের জন্য বা এতিমখানায় যেটুকু অর্থ সাহায্য দেই তা রশিদ প্রাপ্তির মাধ্যমেই দেই। কিন্তু মাজারে উঠার সময় সিঁড়ির বামদিকে একদল খাদেম আবেগপ্রবণ ধর্মপ্রাণ মানুষদের কাছ থেকে যে টাকা গ্রহণ করেন, সেটি তারা নিজেরাই ভাগাভাগি করেন। ধর্মের নামে ব্যবসার আরো অনেক দিক বাংলাদেশে রয়েছে। তথাকথিত হুজুর সায়দাবাদীর খানকা শরীফের জায়গা অনেক বড়। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতাই তিনি পেয়েছেন। অনেক রাজনীতিবিদরা তার ওখানে নিয়মিত যেতেন। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাওয়াজ শরীফও নাকি গিয়েছিলেন। নাওয়াজ শরীফের সঙ্গে তার যোগাযোগও রয়েছে। সেনাশাসক এরশাদের মন্ত্রী ব্যরিস্টার মওদুদ আহমদরা তার যুথি পাউডারের বিজ্ঞাপনের মডেল হয়েছিলেন। ন্বিঃসন্তান দম্পত্তিদের সন্তান দানে চিকিৎসা বিজ্ঞান ব্যর্থ হলেও তার ওখানে গিয়ে অনেকে সন্তান লাভ করেছেন বলে ছবিসহ বিজ্ঞাপন দিতেন।


আধুনিক বিজ্ঞানমনষ্ক শিক্ষিত নরনারীগণ সেখানে গেছেন। তার কোন গায়েবি ক্ষমতাবলে তিনি কাউকে কাউকে সন্তান লাভে সফল করেছেন সেটি তারাই ভালো জানবেন। এসব নিয়ে রহস্যময়তা রয়েছে। তাদের কখনো অর্থকষ্টে পড়তে হয় না। রাজস্ব বোর্ডও তাদের দিকে হাত বাড়ান না। সেনাশাসক এরশাদের জামানায় আটরশী পীরের খানকা শরীফও ক্ষমতাবানদের আশ্রয়স্থল ছিল। রাজনীতিবিদ, আমলা, মন্ত্রি তো গেছেনই; ধর্মপ্রাণ, আল্লাহ ভীরু মানুষও বিপদগ্রস্ত হয়ে অন্ধ বিশ্বাস নিয়ে আল্লাহর কাছে হাত না তুলে আটরশীতে গেছেন।


পাবনায় খাজা বাবার বিরুদ্ধে মুরিদের স্ত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার খবর একসময় দেশ তোলপাড় করা ছিল। আরামবাগে দেওয়ানবাগীর বাবে রহমত আর ইন্দিরা রোডে কুতুববাগী দরবার শরীফ রাতারাতি ধর্মের অন্ধত্বের নামে কোটি কোটি টাকা আয় আর বর্ণাঢ্য আয়োজনে, জাঁকজমক ব্যয়ে তথাকথিত পীরদের বিলাসবহুল জীবন, ভক্তকূল তৈরির প্রক্রিয়া বিস্ময়কর। সব সরকারই তাদের পৃষ্ঠপোষকতা দেয়। ভিতরের খবর নিতে ধর্মের আগুনের তাপের ভয়ে হাত বাড়ায় না। দুনিয়া বিখ্যাত হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে একজন ক্যান্সার রোগীকে চিকিৎসকরা যখন হাল ছেড়ে দেন, মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করতে বলেন তখনো জ্ঞানে-গরিমায় সমৃদ্ধ উচ্চবিত্ত ও উচ্চশিক্ষিত পরিবার দুর্বলচিত্তে ধর্মীয় অন্ধত্বের নিজেদের সমর্পণ করেন। গলায় হাতে তাবিজ পরান মৃতপ্রায় রোগীকে। পড়া পানি পান করান।


আমার বাবা মায়ের মতো আল্লাহ ভীরু, ধর্মপ্রাণ, নামাজী, সৎ, সরল মানুষ আমি কম দেখেছি। এখনো আমি মনে করি তাদের দোয়া আল্লাহ কবুল করেছিলেন বলেই অনেক বিপদ আপদ থেকে রক্ষা পাই। আলেম ওলামা, ইমামদের আমার বাবা খুব সম্মান করতেন। নিয়মিত দাওয়াত খাওয়াতে। সেই ধারাবাহিকতা আমাদের পরিবার এখনো লালন করছে। কিন্তু ধর্ম প্রচারক আল্লাহর অলি আর আলেম, ওলামা, ইমামদের বাইরে যারা গদি তৈরি করে ধর্মের নামে বিলাসী জীবনযাপন করেন, ধর্ম ব্যবসা করেন, শেজদা দেন তাদেরকে আমি এক করে দেখি না। অভিন্ন সম্মান দিতে পারি না। যে মাদ্রাসা শিক্ষকের হাতে ছাত্র-ছাত্রী যৌন লালসার শিকার হয় তাদেরকে বিকৃত ধর্ষকই মনে করি। আল্লাহর প্রতি ইমান, বিশ্বাস ধর্মীয় মূলবোধ লালনপালন, আলেম ওলামাদের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। পরিবার থেকে আমাদেরকে অন্ধকারের কুসংস্কারের পথে টানেননি, সাম্প্রদায়িকতার বিষ ভিতরে প্রবেশ করাননি পিতামাতা। ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সকলকে আপন করে নেবার শিক্ষা দিয়েছিলেন। এজন্য আমরা গর্বিত। গোটা দেশ ইয়াবার মতো মরণ নেশার আগ্রাসনে পতিত। এই মাদক রাজধানী থেকে নগর, নগর থেকে শহর, শহর থেকে গ্রামে ছড়িয়ে গেছে। একটি ইয়াবার মূল্য ৪-৫ শ’ টাকা। ইয়াবার নেশায় আসক্ত তরুণরা শেষ হয়ে যাচ্ছে। একটি পরিবার শেষ হয়ে যাচ্ছে একজন মাদকাসক্তের কারণে। ইয়াবার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক পর্যায় থেকে সম্মিলিত যুদ্ধ ঘোষণা করার তাগিদ আমরা অনেকেই দিচ্ছি। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীও লাখো লাখো পিস ইয়াবা উদ্ধার করছে। তবুও এর মূল ব্যবসায়ীরা ধরা পরছে না, ইয়াবার সঙ্গে লড়াই করে জয়ী হতে পারছে না। ইয়াবা আমাদের তরুণ প্রজন্মকে শেষ করে দিচ্ছে। অনেকের মূল্যবান জীবন কেড়ে নিচ্ছে। লেখাপড়া, কর্মক্ষমতাই নয়; পারিবারিক শান্তি ও দাম্পত্য সম্পর্ক শেষ করে দিচ্ছে। ইয়াবা-ফেনসিডিল ঠেকাতে দোকানে দোকানে প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য বিয়ার চালু করার প্রস্তাব নিয়ে একটি লেখা লিখেছিলাম।


ধর্মান্ধ শক্তি কখনোই ইয়াবাসহ মাদকের বিরুদ্ধে না করে ওয়াজ নসিহত, না করে জিহাদ। ঘুষ, দুর্নীতির বিরুদ্ধেও তারা চুপ। কিন্তু একদল অতি ধার্মিক নিয়মিত নামাজ পড়েন কিনা জানিনা, ধর্মের শান্তি সুললিত বাণী ধারণ করেন কিনা তাও জানিনা, আমার প্রস্তাবের বিকল্প প্রস্তাব দেয়া দূরে থাক; সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নোংরা, অশ্লীল গালিগালাজ ছুড়েছেন। কেউ কেউ বলেছেন, মদ খাওয়া হারাম। আমি জানি, হারামই নয়, স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। কিন্তু আমার যুক্তি ছিল ইয়াবা ফেনসিডিলের চাইতে সেগুলো শরীরের জন্য এতটা খারাপ নয়। সমাজের জন্য, পারিবারিক জীবনের জন্য ইয়াবা ফেনসিডিল যতটা অভিশাপ ডেকে আনে, সেইসব পানীয় আনে না। তার মানে আমি বলছি না, আমার বক্তব্যই শেষ কথা। মরণঘাতক ইয়াবা ফেনসিডিল থেকে দেশের মানুষকে বাঁচানোর আকুতি থেকে একটি প্রস্তাব দিয়েছি। ভালো না লাগলে নাকচ করে আপনারা প্রস্তাব দিন। কি করলে এই আগ্রাসন থেকে আমাদের মুক্তি হবে। আমাদের সন্তানরা নিরাপদ থাকবে। তাই বলে এত গালি কেন, বুঝি না। ধর্ম কেবল মদকেই হারাম করেনি, গিবতকেও নিন্দা করেছে। মানুষের ক্ষতি, মানুষের জানমালের প্রতি লোভ, হিংসা, বিদ্বেষ, পরশ্রীকাতরাকে নিষেধ করেছে। ধর্মের মর্মবাণী আমরা কতটা উপলব্ধি করি, কতটা অনুসরণ করি সেই পথে না গিয়ে কথায় কথায় ধর্মের নামে অশ্লীল মন্তব্য ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। নিজে কতটা ধর্মানুরাগী, আল্লাহ ভীরু, কতটা ধর্মীয় জীবন যাপনে অভ্যস্ত সেটি না দেখে অন্যের ব্যক্তিজীবন নিয়ে কুৎসা, বিষোদগার ছড়িয়ে তৃপ্তির ঠেঁকুর তুলি। ধর্ম কেবল মদকেই হারামকে করেনি, ঘুষ, দুর্নীতি, চুরি চামারি, মিথ্যে বলা, ধর্ষণ, নির্যাতন, মানুষের জায়গা সম্পত্তি দখল, চাাঁদাবাজি, ভিক্ষাবৃত্তি সহ অনেক কিছুই না করেছে। কিন্তু সেদিকে আমরা যাই না। খন্ডিত বা একচোখা কোনো কিছুই উত্তম নয়। যেকোনো বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ ও তার চর্চা করাই উত্তম।


[লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক।]

পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন