উলঙ্গ একটি মেয়ে রাস্তার মাঝে অতঃপর...

  06-05-2015 09:48AM

পিএনএস ডেস্ক: গত শুক্রবার অফিস থেকে বেরোবার পথে দেখি উন্মাদ উলঙ্গ একটি মেয়ে রাস্তার মাঝে শুয়ে আছে। হাড্ডিসার মেয়েটি কি মরে গেছে ! তরুণী মনে হল।

ভালো করে খেয়াল করলাম, না মরেনি। একটি বিস্কিটের প্যাকেট আর এক বোতল পানি কিনে মেয়েটির হাতে দিলাম। পানিটা খুলে দিয়েছি কিন্তু তাড়াহুড়োয় বিস্কিটের প্যাকেটটা খোলা হয়নি। শীর্ণকায় হাত দুটো বাড়িয়ে দিলো মেয়েটি। মেয়েটির গায়ে কোন জোড় আছে বলে মনে হচ্ছে না ।

ভাবলাম কাউকে দিয়ে একটি লম্বা জামা আনিয়ে দিবো মেয়েটির জন্য। একটু পরেই অফিসে ফিরেছি কিন্তু অবাক ব্যাপার মেয়েটি নেই। মনের মধ্যে খটকা লাগলো তবে কি মেয়েটির সাথে অদূরে দাঁড়িয়ে কেউ কি দেখছিল ! শুনেছি ঢাকা শহরে পাগল, অসুস্থ, ভিখেড়ীদের দিয়ে নাকি রমরমা ব্যাবসা হয়। চড়া দামে পঙ্গু ভিখেরিদের বেচা কেনাও হয়। যার যত কুৎসিত চেহারা তাঁর দাম ততো বেশী।

মহাজনরা ভোরবেলা এসে রাস্তার ধারে নামিয়ে দিয়ে যায় আবার রাতে এসে তুলে নিয়ে যায়। ওদেরকে পেট পূরে খেতে দেয় না, চিকিৎসাও করায় না। দিনের বেলা রাস্তার ধারে রোঁদ, ঝড়, বৃষ্টিতে ভিজে আর রাতের আঁধারে পুঁতিগন্ধময় তালা লাগানো ঘরে ওদের মানবেতর জীবনযাপন। অসুস্থ হয়ে একসময় মরে যাওয়া ছাড়া ওদের মুক্তির কোন পথ নেই । একসময় বাইরে বেরোলেই অসুস্থ, পঙ্গু,শিশু, সর্বোপরি গরীব মানুষদের সাহায্য করার জন্য ভাংতি টাকা রাখতাম। যতজনকে পেতাম সাহায্য করতে চাইতাম।

কিন্তু ওদেরকে দিয়ে ব্যাবসা করানোর কথা শুনার পড় রাস্তায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ছাড়া কাউকেই টাকা দেই না। খুব বেশী দিতে ইচ্ছে করলে খাবার কিনে দেই। বিশেষ করে অসুস্থ, পঙ্গু আর শিশুদেরকে। সময় পেলে গাড়ীতে শুঁকনো খাবার কিনে রাখি অফিস যাওয়ার পথে ট্র্যাফিক সিগন্যালে শিশুদের হাতে দেওয়ার জন্য। না, অন্য কিছু নয়, ওদের খুশী খুশী মুখ দেখতে ভালো লাগে তাই। অন্যের খুশী মুখ, সুখী মুখ দেখার প্রচণ্ড লোভ আমার।

মেয়েটির কথা খুব মনে পড়ছে। মেয়েটি কি বিস্কিটের প্যাকেট খুলে খেতে পেরেছিল নাকি ওর কাছ থেকে কেঁড়ে নেওয়া হয়েছিলো ! নিজের কাছে কেমন যেন অপরাধী লাগছে। সূত্র: খুজিস্তা নূর-ই-নাহরিন ফেসবুক (https://www.facebook.com/khugesta.naharin?fref=nf) থেকে নেয়া।

পিএনএস/জে এ মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন