এমনও শুনি যে রাস্তায় গেলে নাকি মারও খেতে হতে পারে : সুজন

  12-02-2018 08:32PM

পিএনএস ডেস্ক : শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে জাতীয় দলের ব্যর্থতার পর মিডিয়ার সামনে এই প্রথম নিজের সমস্ত ক্ষোভ-দুঃখ প্রকাশ করলেন টেকনিক্যাল ডিরেক্টর এবং সাবেক ক্রিকেটার খালেদ মাহমুদ সুজন। সদ্য সমাপ্ত এই সিরিজে একাদশ নির্বাচন এবং ক্রিকেটারদের বাজে পারফর্মেন্সের দায় অনেকটাই গিয়ে পড়েছে খালেদ মাহমুদের ওপর। সোশ্যাল মিডিয়ায় তোপ দাগছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। এসব সমালোচনার জবাবে আজ সোমবার নিজের আবেগ আর ধরে রাখতে পারলেন না খালেদ মাহমুদ।

মিরপুর শের-ই-বাংলায় অনুশীলনের ফাঁকে সংবাদমাধ্যমের কাছে আবেগাক্রান্ত সুজন বললেন, 'আমি সুজন এত বছর যা করেছি, কখনও শুনিনি ভালো কিছু করেছি। শুধু শুনি খারাপই করেছি। সোশ্যাল মিডিয়া বলেন বা মিডিয়া, আজকে এমনও শুনি যে রাস্তায় গেলে নাকি মারও খেতে হতে পারে। ক্রিকেট খেলার জন্য রাস্তায় মার খেতে হলে তো খুব বিব্রতকর ব্যাপার।'

তিনি আরও বললেন, 'এত বছর ধরে আমি কাজ করছি, সবসময় বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নতির জন্য কাজ করেছি। আমার কেনো স্বার্থ নেই। ক্রিকেট বোর্ডে থাকাটাও আমার কোনো স্বার্থের ব্যাপার নয়। আমি সত্যি বলতে আর আগ্রহী নই।'

মিরপুর টেস্টের একাদেশ মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে বাদ দিয়ে সাব্বির রহমানকে নেওয়ায় কারণে ব্যাপক সমালোচিত হতে হয়েছে নির্বাচক এবং টেকনিক্যাল ডিরেক্টরকে। দুই ইনিংসে সাব্বির ০ এবং ১ রান করেছেন। বল খেলেছেন ৫টি। ক্যাচ ছেড়েছেন ৪টি। এছাড়া মোসাদ্দেককে আবাহনীতে খেলানোর জন্যই নাকি জাতীয় দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে- এমন তথ্যও প্রকাশ করে প্রথম সারির একটি সংবাদমাধ্যম। সুজন আবার আবাহনীর কোচ। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি এটাকে পুরোপুরি তার সিদ্ধান্ত নয় বলে জানান তিনি।

খালেদ মাহমুদের ভাষায়, 'আমার সিদ্ধান্ত নয়। আমি তো গড নই। আমি একটা খালেদ মাহমুদ সুজন। সামান্য একজন মানুষ। আমার সামর্থ্যও অনেক কম। আমি এখানে দাঁড়িয়ে কাজ করছি, মানুষ সেটা স্বীকার করুক বা না। আমার মেধা খারাপ হতে পারে, টেকনিক্যালি খারাপ হতে পারি, হয়ত জানি না অনেক কিছু। কিন্তু অন্য বিষয়ে যখন কথা হয়, তখন আমাকে তা অনেক কষ্ট দেয়।'

আবাহনীর বিষয়টি টেনে এনে তিনি বলেন, 'যখন বলা হয় আমি আবাহনীর প্রধান কোচ, মোসাদ্দেককে খেলাইনি আবাহনীতে খেলানোর জন্য, যখন জাতীয় স্বার্থের কথা বলে কেউ এই ধরনের কথা বলে, তখন সত্যিই কষ্ট পাই। কারণ, আমি মনে করি না বাংলাদেশ দলের চেয়ে বেশি আবাহনী বা অন্য কিছু আমাকে স্পর্শ করতে পারে। পারবেও না। এসব কথা যখন বলা হয়, তখন সত্যিই খারাপ লাগে। মনে হয় যে এত বছর ক্রিকেটে থেকে কী লাভ হলো! মোসাদ্দেক ও আবাহনী যদি বাংলাদেশ দলের ম্যাচ হারার কারণ হয়ে যায়, তখন তা আসলেই কঠিন।'

দলের প্রয়োজনের কথা ভেবেই মোসাদ্দেকের বদলে সাব্বির রহমানকে খেলানো হয়েছে দাবি করে খালেদ মাহমুদ বলেন, '৫৩ বলে ৮ রান করেছে, আমি দেখেছি, আমারও ক্রিকেট জ্ঞান আছে। ১৯৮৩ সালে শুরু করেছি খেলা। কে পারে বা কে পারে না, কাকে কখন দরকার, এটা আমরাও বুঝি। আপনারা মিডিয়া হয়ত ভালো বোঝেন আমাদের থেকে, আমরাও বুঝি।'

একপর্যায়ে আবেগাক্রান্ত হয়ে সুজন বলেন, 'আমি হয়ত বালাদেশের জন্য ভালো কিছু করছি না। যদি ভালো কিছু না করি, তাহলে এখানে থাকার দরকার কী! আমি এখানে কোনো স্বার্থের জন্য আসিনি। কিছু দরকার নেই আমার। আমি খুব ভালো আছি। খুব সুখী আছি। যা চাকরি করি, যতটুক পাই, খুব ভালো আছি। আমি হয়তবা ইমোশনাল হয়ে গেছি। আশা ছিল এই সিরিজটা জিতব। ওয়ানডে যেভাবে শুরু করেছিলাম, জেতা উচিত ছিল। সেটা হয়নি।'

পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন