রেকর্ড গড়া ইনিংসেও বাংলাদেশের হার

  16-02-2018 12:07AM

পিএনএস ডেস্ক: সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহর দারুণ ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে জমা হয়ছিল ১৯৩ রান। তবে বড় এই সংগ্রহের পরও জয়ের দেখা মিলল না বাংলাদেশের। মাত্র চার উইকেট হারিয়ে ছয় উইকেটের সহজ জয় পায় লঙ্কানরা। এতে দুই ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল দিনেশ চান্দিমালের দল।

বাংলাদেশের মতো উড়ন্ত সূচনা করে শ্রীলঙ্কাও। দানুষ্কা গুনাথিলাকা আর কুশল মেন্ডিস উদ্বোধনী জুটিতেই তুলেন ৫৪ রান। এই জুটিটা ভাঙেন নাজমুল ইসলাম অপু। অভিষিক্ত এই বাঁহাতি স্পিনারের বলটা মিস করে মুশফিকের বুদ্ধিদীপ্ত স্ট্যাম্পিংয়ে সাজঘরে ফেরেন ৩০ রান করা গুনাথিলাকা।

তবু ঝড়ো ব্যাটিং চালিয়েই যাচ্ছিলেন কুশল মেন্ডিস। মাত্র ২৭ বলে ৫৩ রান করা এই ব্যাটসম্যানকে শেষপর্যন্ত আউট করেন আফিফ হোসেন। এরপর উপুল থারাঙ্গার ক্যাচটিও নেন অভিষিক্ত এই অলরাউন্ডার। নাজমুল অপুকে তুলে মারতে গিয়ে অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান আউট হন মাত্র ৪ রান করে।

এরপর রুবেল হোসেনের বাউন্সি এক ডেলিভারিতে পুল করেন নিরোশান ডিকভেলা। ৯ বলে ১১ করা এই ব্যাটসম্যানের বাতাসে ভাসানো বলটি অনেক উপরে উঠলেও বাউন্ডারিতে দাঁড়িয়ে দারুণভাবে ধরে ফেলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।

তবে পরের সময়টায় বাংলাদেশি বোলারদের আর পাত্তা দেননি লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা। দাসুন শানাকা আর কুশল পেরেরা মিলে ৩০ বলে ৬৫ রানের বিধ্বংসী জুটিতে জয় নিশ্চিত করে দেন শ্রীলঙ্কার। পেরেরা করেন ১৮ বলে অপরাজিত ৩৯ রান, শানাকা ২৪ বলে ৪২।

এর আগে, সৌম্য সরকার আর মুশফিকুর রহীমের জোড়া হাফসেঞ্চুরিতে মিরপুরে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৫ উইকেটে ১৯৩ রানের বড় পুঁজি গড়ে বাংলাদেশ।

৩২ বল খেলে ৫১ রান করে আউট হন সৌম্য সরকার। টি-টোয়েন্টিতে এটি তার প্রথম হাফ সেঞ্চুরি। অন্যদিকে, ৪৪ বল খেলে ৬৬ রান করে অপরাজিত থাকেন মুশফিকুর রহিম।

টি-টোয়েন্টিতে এটি তার দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি। ব্যক্তিগত অর্ধশত না করতে পারলেও দারুণ ইনিংস খেলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৩১ বল খেলে ৪৩ রান করে আউট হন তিনি। শ্রীলঙ্কার পক্ষে দানুশকা গুনাথিলাকা ১টি, জীভন মেন্ডিস ২টি ও থিসারা পেরেরা ১টি করে উইকেট নেন।

জীবন মেন্ডিসের লেগস্পিনে এলবিডব্লিউ হয়ে ৫১ রানে ফিরেন সৌম্য। জীবন মেন্ডিসের ঘূর্ণিতে এলবিডব্লিউ হওয়ার পর মাটিতে পড়ে গিয়েছিলেন এই ওপেনার। উরুতে চোট নিয়ে এরপর খুঁড়িয়ে খুড়িয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাকে। পরের বলেই উইকেটরক্ষকের দুর্দান্ত ক্যাচে শুন্য করে সাজঘরে ফেরেন অভিষিক্ত আফিফ হোসেন।

টানা দুই উইকেট হারিয়ে তখন কিছুটা বিপদে বাংলাদেশ। চতুর্থ উইকেটে দুর্দান্ত এক জুটিতে সেই বিপদ কাটিয়ে উঠেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর মুশফিকুর রহীম। লঙ্কান বোলারদের রীতিমত তুলোধুনো করে ৭৩ রান যোগ করেন এই যুগল।

সৌম্য সরকারের পর মাত্র ৩৭ বলে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন মুশফিকুর রহিমও। তবে ফিফটির আশা জাগিয়েও সাজঘরে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ। বাঁহাতি পেসার ইসুরু উদানাকে তুলে মারতে গিয়ে আউট হন ৪৩ রানে। ৩১ বলের ইনিংসে টাইগার অধিনায়ক ২টি করে চার-ছক্কা হাঁকান।

এরপর সাব্বির রহমান ফিরেন ১ রান করে। তবে শেষ পর্যন্ত দলের হাল ধরে ছিলেন মুশফিক। ৪৪ বলে ৬৬ রানে অপরাজিত থাকেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। দুর্দান্ত এই ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছেন ৭টি চার আর একটি ছক্কায়। আরিফুল হক অপরাজিত থাকেন ১ রানে।

এর আগে তামিম ইকবালের অনুপস্থিতিতে সৌম্য সরকারের সঙ্গে ইনিংস উদ্বোধন করেন জাকির হাসান। অভিষেক ম্যাচে খুব একটা ভালো করতে পারেননি তিনি। ৯ বলে ১০ রান করে দানুষ্কা গুনাথিলাকার বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন এই ওপেনার।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি দিয়ে আজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছে চার তরুণ ক্রিকেটারের। বিপিএলে গত আসরে ভালো নৈপুণ্য দেখিয়ে দলে ডাক পেয়েছেন আফিফ হোসেন, নাজমুল ইসলাম, জাকির হোসেন ও আরিফুল হক।

পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন