সড়ক দুর্ঘটনায় স্ত্রী-সন্তান হারালেন ফুটবলার সোহেল

  24-11-2018 09:39PM

পিএনএস ডেস্ক : সড়ক দুর্ঘটনায় স্ত্রী আফরিন এবং তিন বছরের ছেলে আফরানকে হারিয়েছেন শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের ফুটবলার সোহেল রানা। মোটরসাইকেলে চড়ে নিজ বাড়ি মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকায় ফেরার পথে আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে সাভারের নবীনগরে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

বালুময় রাস্তায় মোটরসাইকেল চালাতে গিয়ে স্ত্রীর কোল থেকে পুত্র আফরান সড়কে পড়ে যায়। ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে মোটরসাইকেল থেকে লাফ দেন আফরিন। এ সময় চলন্ত একটি ট্রাক মা-ছেলের ওপর দিয়ে চলে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান সোহেলের স্ত্রী। সন্তানের শ্বাস তখনও চলছিল।

আহত ছেলেকে কোলে নিয়ে সাভার স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দিকে ছুটে যান সোহেল। কিন্তু সন্তানকে বাঁচাতে পারেননি। বাবার কোলেই মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ে শিশুটি। স্ত্রী-সন্তানকে হারিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন সোহেল। জ্ঞান ফিরলে স্ত্রী-সন্তানের লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের শিবালয়ের উদ্দেশে রওনা দেন। আজ রাতেই তাদের দাফন সম্পন্ন হয়।

ঢাকার ফুটবলে পরিচিত এবং জনপ্রিয় মুখ সোহেল। চলতি মৌসুমে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের হয়ে সবশেষ ফেডারেশন কাপে খেলেছেন। এর আগে মোহামেডান, ব্রাদার্স, মুক্তিযোদ্ধা এবং চট্টগ্রাম আবাহনীতে ছিলেন। গত ২০ নভেম্বর ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনাল শেষে তিন দিনের ছুটি পান সোহেল।

স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে ছুটি কাটাতে নিজ বাড়ি মানিকগঞ্জের শিবালয়ে যান। ছুটি শেষে আজ ক্লাবে যোগ দেওয়ার কথা ছিল তার। কারণ বিকেলেই ছিল আবার অনুশীলন। সেই অনুশীলনে যোগ দিতে ক্লাবে ফিরছিলেন সোহেল। শোকে পাথর ক্লাব সতীর্থরা আজ অনুশীলন করলেও তাতে ছিলেন না এ ফুটবলার।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ক্লাবের সহকারী কোচ মাসুদ পারভেজ কায়সার এবং অধিনায়ক গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা দ্রুত ছুটে যান সাভারে। রাতে ক্লাব সতীর্থ, বন্ধু, ফুটবলারসহ আরও অনেকেই জানাজায় অংশ নিতে ছুটে যান মানিকগঞ্জে।

ঢাকা থেকে অন্য ক্লাবের ফুটবলার, গণমাধ্যমকর্মীরা মুঠোফোনে সোহেলকে সান্ত্বনা দেন। কিন্তু শোকে বাকরুদ্ধ সোহেল কারও সঙ্গেই ঠিকমতো কথা বলতে পারছিলেন না। শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে অনেক ফুটবলার, ভক্ত-সমর্থককে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করতে দেখা গেছে।

দুর্ঘটনার খবর শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন সতীর্থ আশরাফুল রানা। সোহেল এবং আশরাফুল দুজনই মানিকগঞ্জের সন্তান। দীর্ঘদিনের ক্লাব-সতীর্থ। ঘটনার সবশেষ বিবরণে আশরাফুল রানা বলেন, ‘সোহেল শারীরিকভাবে সামান্য আঘাত পেলেও মানসিক কষ্টে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন। তার ভাই-বোন, বাবা-মা সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছে।’

আরেক সতীর্থ আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘কী বলব! মনটা ভীষণ খারাপ। খুবই কষ্ট লাগছে। ছেলেটাকে ছোট বেলা থেকে চিনি। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঢাকায় থাকবে বলেই কদিন আগে বসুন্ধরায় ফ্লাট ভাড়া নিয়েছিলে সোহেল। এই ফ্লাটে স্ত্রী-পুত্রসহ কয়েকদিন থেকেছেন।’

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন