আবাহনীকে নিয়ে ছেলেখেলা নবীন বসুন্ধরার

  23-01-2019 06:18PM

পিএনএস ডেস্ক : দুর্দান্ত, দুর্দান্ত ও দুর্দান্ত...! বসুন্ধরার জয়ের রসায়নটা এই বিশেষণটা তিনবার লিখেও বুঝি প্রকাশ করা যাচ্ছে না!

নীলফামারী শেখ কামাল স্টেডিয়ামে ঐতিহ্যবাহী আবাহনী লিমিটেডকে নিয়ে আজ যেন ছেলে খেলা করেছে দেশের ফুটবলের নবীন বসুন্ধরা কিংস। শেষ পর্যন্ত আবাহনীর জালে গোল তিনটি। তাঁদের দুটি শট ক্রসবারে না লাগলে ঐতিহ্যবাহী আবাহনীকে বইতে হতো আরও বড় ‘কলঙ্কে’র বোঝা। আবাহনী প্রিমিয়ার লিগের শেষ দুইবারের চ্যাম্পিয়ন। আর বসুন্ধরা দেশের শীর্ষ ফুটবলে নাম লিখিয়েছে এবারই।

নীলফামারী শেখ কামাল স্টেডিয়ামকে নিজেদের হোম ভেন্যু বানিয়েছে বসুন্ধরা। শক্তির বিচারে প্রিমিয়ার লিগের অন্যতম সেরা ম্যাচটি দিয়েই আজ অভিষেক হয়েছে স্টেডিয়ামটির। ভালো দর্শকের উপস্থিতিতে বসুন্ধরার জয়ে আবির ছড়াল। একটি করে গোল করেছেন নাসিরউদ্দিন চৌধুরী, মতিন মিয়া ও দানিয়েল কলিন্দ্রেস।

বসুন্ধরার স্প্যানিশ কোচ অষ্কার ব্রুজোন আক্রমণাত্মক ফুটবল পছন্দ করেন। প্রতি ম্যাচেই ভিন্ন একাদশ আর ফরমেশনে পরিবর্তন এনে চমক দেখিয়ে থাকেন। আজ যেমন স্ট্রাইকার মাহবুবুর রহমান সুফিলকে খেলালেন লেফটব্যাক হিসেবে। আর তাঁর তুরুপের তাস কোস্টারিকার হয়ে বিশ্বকাপ খেলা কলিন্দ্রেসকে নম্বর নাইন থেকে সরিয়ে খেলালেন বাম প্রান্তে। তাঁর সঙ্গে নম্বর নাইন হিসেবে ব্রাজিলিয়ান ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, ডান প্রান্তে মতিন মিয়া।

৪-৩-৩ ফর্মেশনে বসুন্ধরার আক্রমণভাগের তিনজনের পেছনে ছিলেন ইমন বাবু, মাসুক মিয়া জনি ও আলমগীর কবির রানা। এই আক্রমনভাগ ঠেকানোর জন্য তো দেয়াল দরকার! তা তো আবাহনীর ছিলই না, উল্টো ৩৮ বছর বয়সী প্রানতোষ দাসকে হোল্ডিং মিডফিল্ডার খেলিয়ে চাপটা নিজেদের ঘাড়ে নিয়েছে আকাশি-নীলরা।

১৪ মিনিটেই এগিয়ে যেত পারত বসুন্ধরা, যদি গোলরক্ষক সোহেল দুর্দান্ত সেভটা না দিতে পারতেন। ডানপ্রান্ত থেকে মতিনের ক্রসে গোলমুখে মাত্র প্রায় সাত গজ দূর থেকে ভলি করেছিলেন রানা, দুর্দান্ত সেভ দিয়েছেন আবাহনী গোলরক্ষক। এর পরে বসুন্ধরার সামনে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় ক্রসবার। ৩২ মিনিটে ডান প্রান্ত দিয়ে ইনসাইড আউটসাইড ডজে তিনজনকে কাটিয়ে বক্সে প্রবেশ করে শট নিলে ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। বসুন্ধরা না হয় ভাগ্যকে দুষতে পারে, কিন্তু এর পরে যা ঘটেছে আবাহনী কাঠগড়ায় তুলতে পারে তাঁদের তারকা নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার সানডে চিজোবাকে। ৪৩ মিনিটে পেনাল্টি শট পোস্টেই রাখতে পারেননি তিনি। উল্টো বিরতিতে যাওয়ার আগে আবাহনী ছেড়ে আসা ডিফেন্ডার নাসিরউদ্দিনের গোলেই এগিয়ে যায় বসুন্ধরা ১-০।

বিরতি থেকে ফিরে অস্কারের শিস্যদের সামনে আরও কোনঠাসা মারিও লেমেসের শিষ্যরা। বসুন্ধরার দ্বিতীয় গোলটি তো স্পেন, ব্রাজিল ও বাংলাদেশির রসায়নের ফল। মাঝমাঠ থেকে ব্রাজিলিয়ান ভিনিসিয়ুসের উদ্দেশে পাস দিয়েছিলেন স্প্যানিশ গোতর , প্রথম স্পর্শেই মতিনের উদ্দেশে ঠেলেন ভিনিসিয়ুস। বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আবাহনী ডিফেন্ডারদের গতিতে পেছনে ফেলে জালে জড়িয়ে দেন মতিন—২-০। ম্যাচের তিন পয়েন্ট চলে যায় বসুন্ধরার অ্যাকাউন্টে।

দল ২-০ গোলে এগিয়ে, কিন্তু নিজের নামের পাশে গোল নেই কলিন্দ্রসের। তা কি হয়! সাত মিনিট পরেই বখতিয়ায় দুশবেকভের কাছ থেকে পাওয়া বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দেশেশুনে গোলরক্ষক সোহেলের মাথার ওপর দিয়ে আলতো চিপে ৩-০।

এই জয়ে দুই ম্যাচে টানা জয় নিয়ে টেবিলের শীর্ষে বসুন্ধরা। আর দুই ম্যাচ শেষে আবাহনীর জয় একটি। এদিকে গোপালগঞ্জে দিনের অপর ম্যাচে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে ৩–১ গোল হারিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্র।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন